মিশরে আগুন জ্বলেছে
১৫ আগস্ট ২০১৩প্রধানমন্ত্রী হাজেম বেবলাউয়ি বুধবার সন্ধ্যায় টেলিভিশন ভাষণে বলেন, ‘নাগরিকদের নিরাপত্তা ও মানসিক শান্তি রক্ষার জন্য' এই পদক্ষেপের প্রয়োজন ছিল৷ ইতিপূর্বে স্বাস্থ্য বিভাগের তরফ থেকে জানানো হয়, দেশব্যাপী পুলিশি অভিযানে মোট ২৭৮ জন নিহত হয়েছে৷ অন্যদিকে মুসলিম ব্রাদারহুড ‘ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের' কথা বলছে৷ তাদের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী দলের মুখপাত্র আহমেদ আরেফ ২,৬০০ জনের নিহত হওয়ার কথা বলেছেন৷
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম জুড়ে যখন কায়রোর রক্তাক্ত ঘটনাবলীর ছবি, তখন হতাহতদের সম্পর্কে কিছু কিছু খুঁটিনাটি তথ্য বেরোতে শুরু করেছে৷ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সারা দেশে ২৩৫ জন বেসামরিক ব্যক্তি ও ৪৩ জন নিরাপত্তা সদস্যের নিহত হবার কথা জানিয়েছে৷
সহিংসতার বলি
ট্র্যাজেডির কোনো অভাব নেই৷ ব্রিটেনের স্কাই নিউজ চ্যানেলের অভিজ্ঞ ক্যামেরাম্যান মিক ডিন দাঙ্গার ছবি তুলতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন৷ প্রাণ হারিয়েছেন মুসলিম ব্রাদারহুডের ফেরারি নেতা মোহাম্মেদ আল-বেলতাগির ১৭-বছর-বয়সি কিশোরী কন্যা আসমা৷
সহিংসতার প্রথম রাজনৈতিক বলি হয়েছেন উপ-রাষ্ট্রপ্রধান মোহামেদ আল-বারাদেই৷ দৃশ্যত তিনি নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানের বিরোধী ছিলেন৷ আল-বারাদেই তাই অভিযান শুরুর পরই পদত্যাগ করেন৷ জরুরি অবস্থা কার্যকরহয় বুধবার স্থানীয় সময় বিকেল চারটা থেকে৷ প্রতিদিন কারফিউ জারি থাকবে সন্ধ্যা সাতটা থেকে ভোর ছয়টা পর্যন্ত৷
আগুন জ্বলেছে, বিক্ষোভ চলেছে
কারফিউ সত্ত্বেও বুধবার রাতে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ থেমে থাকেনি৷ বৃহস্পতিবার সকালেও বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে৷ মুসলিম ব্রাদারহুড তাদের ওয়েবসাইটে দাবি করেছে, মিশরের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেক্সান্দ্রিয়া এবং উত্তরের আরো দুটি প্রদেশে কারফিউ সত্ত্বেও প্রতিবাদ মিছিল বেরিয়েছে৷ সরকারি মেনা সংবাদ সংস্থার খবর অনুযায়ী হাজার হাজার মুরসি সমর্থক পূর্ব কায়রোর একটি মসজিদের সামনে জড়ো হয়েছে৷
অশনি সংকেত
মুরসি সমর্থকরা দেশের বিভিন্ন অংশে পুলিশ ফাঁড়ি আক্রমণ করেছে বলে জানিয়েছে মিশরের দু'টি দৈনিক৷ অন্যদিকে বুধবার সারা দেশে কপটিক খ্রিষ্টানদের ১৭টি গির্জা আক্রান্ত ও ক্ষেত্রবিশেষে অগ্নিদগ্ধ হবার খবর দিয়েছেন মিশরের ক্যাথলিক চার্চের মুখপাত্র ফাদার রফিক গ্রেইচে৷
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
ইউরোপের মুখ্য দেশগুলোর পাশাপাশি ইরান, কাতার আর তুরস্কও মিশরের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বলপ্রয়োগ নীতির নিন্দা করেছে৷ হোয়াইট হাউসও বলপ্রয়োগের ‘তীব্র নিন্দা জানিয়েছে৷ জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডো ভেস্টারভেলে টিউনিশিয়া সফর করছেন৷ এক সাক্ষাৎকারে তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ‘‘আমরা এই সহিংসতার নিন্দা করি৷ এই সহিংসতা রোধ করা সম্ভব ছিল, একটি রাজনৈতিক সমাধান সম্ভব ছিল৷ সেই হিসেবে মিশরের বর্তমান সরকার নিঃসন্দেহে একটি বড় রকমের ভুল করেছে৷''
এসি/এসিবি (ডিপিএ, রয়টার্স, এএফপি, ডিডাব্লিউ)