মালিতে অভ্যুত্থানের নেতাই অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট
২৯ মে ২০২১চলতি সপ্তাহে, মালিতে নতুন করে সামরিক অভ্যুত্থানেরনেতৃত্ব দেন গোইটা৷ অভ্যুত্থানের আগে, তিনি দেশটির উপ-রাষ্ট্রপতি ছিলেন৷
মালির রাজধানী বামাকোতে অবস্থিত সাংবিধানিক আদালত আসিমি গোইটার নাম অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসাবে ঘোষণা করলে সেই পদের শপথ নেন গোইটা৷
এর আগে, গত বছর আগস্টেতৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম বুবাকার কেইটার বিরুদ্ধে সামরিক অভ্যুত্থানেও নেতৃত্বে ছিলেন গোইটা৷ সেই সময় প্রেসিডেন্ট হন সদ্য অপসারিত বাহ এন-দাও৷ সোমবার গোইটার নির্দেশে এন-দাও ও প্রধানমন্ত্রী মোক্তার ওউয়ানে গ্রেপ্তার হন৷
বুধবার গ্রেপ্তার হওয়া দুই নেতাই পদত্যাগ করেন ও মুক্তি পান৷
শুক্রবার মালির শীর্ষ আদালত জানায় দেশে নেতৃত্বের সর্বোচ্চ আসনে, অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট পদে বসবেন গোইটা৷ ‘‘অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসাবে রাষ্ট্রের প্রধান'' হবেন গোইটা এবং ‘‘রাষ্ট্রের ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া নিশ্চিত'' করবেন তিনি, জানায় আদালত৷
ইকোওয়াসের সাথে গোইটার বিরোধ
এন'দাও ও ওউয়ানের অপসারণ নতুন করে মালির গণতান্ত্রিকীকরণে আঘাত হেনেছে৷ ফেব্রুয়ারিতে দেশটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি৷
গোইটার নেতৃত্বকে ইকোওয়াস বা ইকোনমিক কমিউনিটি অফ ওয়েস্ট আফ্রিকান ষ্টেটস ভালো চোখে দেখছে না৷ ইকোওয়াসের পরামর্শ ছিল গত অভ্যুত্থানের পরেই ক্ষমতা হস্তান্তর করে গণতান্ত্রিক সরকার গঠনের পক্ষে৷
গত অক্টোবরে ইকোওয়াসের সাথে মালির একটি সমঝোতা হয়৷ সে অনুযায়ী, দেশটিতে কোনো ভাবেই উপ-রাষ্ট্রপতির হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়া যাবে না৷
কিন্তু শুক্রবার ইকোওয়াসের সদস্য রাষ্ট্রগুলির প্রধানদের একটি বৈঠকের পরেই মালির আদালত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে৷
গত কয়েক মাস ধরে মালিতেসামরিক শাসন চলছে৷ এতে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে ‘ইসলামিস্ট‘ বিদ্রোহী গোষ্ঠীদের সরানোর প্রক্রিয়া৷
নতুন প্রধানমন্ত্রী
শুক্রবার গোইটা জানান, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে নতুন প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করবেন তিনি৷ এই পদে একজন বলিষ্ঠ নেতাকে দেখতে চান বলেও উল্লেখ করেন গোইটা৷
তিনি বলেন, ‘‘আগামী কয়েকদিনের মধ্যে যিনি প্রধানমন্ত্রী হবেন, তিনি বিভিন্ন গোষ্ঠীগুলোর সাথে আলোচনা করবেন৷''
নতুন নেতৃত্বকে রাশিয়ার আহ্বান
এন'দাও ও ওউয়ানের মুক্তিকে সাধুবাদ জানিয়েছে রাশিয়া৷ এছাড়া, দেশটির বিভিন্ন রাজনৈতিক গোষ্ঠীর সাথে আলোচনা করার পরামর্শ দিয়েছে রাশিয়া৷
শুক্রবার রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘‘মালিতে সংহতি ও স্থিতিশীলতার পরিবেশ আনতে আমরা সব রাজনৈতিক গোষ্ঠীদের আলোচনার মাধ্যমে সমাধান বেছে নিতে আহ্বান জানাচ্ছি৷''
মালির পরিস্থিতিকে খতিয়ে দেখছে বলেও জানিয়েছে তারা৷ দেশটির নেতৃত্বকে ইকোওয়াসের সাথে সংঘবদ্ধভাবে কাজে ফেরারও আহ্বান জানিয়েছে রাশিয়া৷
এর আগে, সামরিক বাহিনী ও রাশিয়ার পক্ষের মালির সমর্থকরা মালির রাজপথে অবস্থান নেন ৷ ফ্রান্সের বিরুদ্ধে স্লোগান ছাড়াও মিছিলে তারা রাশিয়ার পক্ষে স্লোগান দেন৷
সোভিয়েত যুগ থেকেই আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে রাশিয়ার প্রভাব রয়েছে৷ এর আগে, ইকোওয়াস ও আফ্রিকান ইউনিয়নের মতো রাশিয়াও মালিকে আহ্বান জানিয়েছিল ‘গণতান্ত্রিক নির্বাচনের' দিকে হাঁটতে৷
এসএস/এফএস (এএফপি, রয়টার্স)