1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মহিলা মুখ্যমন্ত্রী সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গে মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন

৫ আগস্ট ২০১১

বাম শাসন শেষ৷ পরিবর্তন বিভিন্ন দিকে৷ এরই মধ্যে মহিলাদের দিকে সামাজিক আচরণের পরিবর্তন কী ঘটছে? একজন মহিলা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরেও তো আক্রান্ত সেই মহিলারাই সর্বত্র৷

https://p.dw.com/p/12BGe
A woman holds a placard at the Delhi "SlutWalk" in New Delhi, India, Sunday, July 31, 2011. There were no short skirts, fishnet stockings or lingerie on display that were the staple of other global "SlutWalk" marches as hundreds gathered in India's capital on Sunday to protest sexual violence against women. The event condemned the notion widely held in this traditional society that a woman's appearance can explain or excuse rape and sexual harassment. In India, public sexual taunting or even groping of women, locally known as "Eve teasing", is common. (Foto:Mustafa Quraishi/AP/dapd)
ফাইল ফটোছবি: dapd

উত্তর ২৪ পরগনার বারাসাতে যাওয়া যাক প্রথমেই৷ চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি সেখানেই কয়েকজন মদ্যপের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিলেন এক তরুণী, রিঙ্কু দাস৷ দুষ্কৃতিরা তার শ্লীলতাহানি করতে যায়৷ তার কিশোর ভাই রাজীব দাস তাকে বাঁচাতে চেষ্টা করায় দুষ্কৃতিরা রাজীবকে পিটিয়ে হত্যা করে ঘটনাস্থলে৷ দিদির চোখের সামনেই৷ এ ঘটনা বারাসাতের কাছারি ময়দানের৷ সেই বীভৎস রাতের এই ঘটনার পর জল এতটাই গড়ায় যে পরিস্থিতি সামলাতে খোদ তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য্যকে ছুটে যেতে হয়েছিল রিঙ্কুদের বাড়িতে৷

তারপরে ফের দোসরা আগস্ট৷ এবারেও এক মহিলা আক্রান্ত হলেন ছিনতাইকারীদের দ্বারা৷ সেই একই জায়গায়৷ সেই একই পরিবেশে৷ ভ্যান রিক্সায় যাওয়ার সময়, তাঁর ওপর হামলা চালায় মোটরবাইক আরোহী কিছু ছিনতাইকারী৷ ওই গৃহবধূকে মাটিতে ফেলে তাঁর ওপর শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়৷ তাঁর স্বামী পেশায় পুলিশ অফিসার৷ সঙ্গে ছিলেন তিনিও৷ কিন্তু কিছু করার আগেই পালায় দুষ্কৃতিরা৷

মহিলাদের প্রতি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি ঠিক কোনখানে? কথা হচ্ছিল, দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা, তরুণী পিউ বিশ্বাসের সঙ্গে৷

পেশায় শিক্ষিকা পিউ বিশ্বাসের মতে, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার দরকার মহিলাদের সুরক্ষার জন্য৷ কীভাবে? পিউ বলছেন, যেহেতু মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং একজন মহিলা, তাই নারীসুলভ বিশেষ অনুভূতি থেকে তাঁর পক্ষে মহিলাদের সমস্যা বোঝাটা অনেক সহজতর৷ তাই তাঁর কাছে পৌঁছতে হলে ই-মেল বা চ্যাটের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ তাঁদের সমস্যার কথা সরাসরি জানাতে পারবেন৷ তাই তেমন কোন ব্যবস্থা হলে অনেকটা নিরাপদ বোধ করবেন মহিলারা৷

আর মহিলাদের প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি? এ প্রশ্নের জবাবে পিউ বলছেন, তেমন কোন পরিবর্তন হয়নি এই আধুনিক সমাজেও৷ সেই একইভাবে মেয়েদেরকে রাখা হয়েছে পিছিয়ে৷ তাদের জায়গা ছেড়ে দিতে, বা প্রয়োজনীয় সম্মানটুকু দেখাতে আজও ইচ্ছুক নয় সমাজ৷ পাশাপাশি প্রচুর ভোগবাদের খপ্পরে পড়ে থাকা এই সমাজব্যবস্থায় মহিলারা নিজেরাও যথেষ্ট বেপরোয়া মনোভাব দেখাতে ক্ষান্ত হচ্ছেন না৷ পুরুষদের তো কথাই নেই!

তারপরেও একজন মহিলাকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পেয়ে কিছুটা হলেও আশান্বিত এখন অন্তত পশ্চিমবঙ্গের নারীকূল৷ তাঁদের বিশ্বাস, এবার পাল্টাবে মানুষের দেখার চোখ৷ আসবে একটা পরিবর্তন৷ কারণ, সম্মান দেখানোর জন্যও তো লাগে একটা প্রস্তুতি৷ সামাজিক ক্ষেত্রে সেই প্রস্তুতির ভূমি হয়তো বা আলাদা করে তৈরি করতে পারবেন সেই মমতা ব্যানার্জী৷

দেখা যাচ্ছে, প্রত্যাশা অনেক৷ কারণ, তিন যুগ পরে নতুন কিছু হাতে পেয়ে, তার দিকেই সকলের চোখ৷ সেই প্রত্যাশা মিটবে কীভাবে এবং কোন পন্থায় সেটাই লক্ষ্য রাখার বিষয়৷ হলে তো ভালোই৷ শাস্ত্রে বলাই আছে, অধিকন্তু ন দোষায়৷ তবে মহিলাদের জন্য সামাজিক সুরক্ষার রক্ষাকবচ অবশ্যই আলাদা দেখা উচিত মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর৷

সাক্ষাৎকার: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন