‘মনে অভিমান চেপে ফরীদির চির চলে যাওয়া’
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১২হুমায়ুন ফরীদি৷ খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে শিল্পবোদ্ধা ও বুদ্ধিজীবী, সকল শ্রেণির লোকের কাছে যিনি এক নামেই পরিচিত বাংলাদেশে৷ মঞ্চনাটক, টিভি নাটক ও সিনেমার রূপালি পর্দা, যেখানেই তিনি অভিনয় করেছেন সোনা ফলেছে রাশি রাশি৷ অসাধারণ মানুষটির এই হঠাৎ চলে যাওয়ায় যেনো দেখা দিয়েছে অফুরান শূন্যতা৷
চিত্র পরিচাললক শহিদুল ইসলাম খোকনের মতোই বেদনায় ম্লান ফরীদির বন্ধু, স্বজন ও ভক্তরা৷
হুমায়ুন ফরীদির দীর্ঘ দিনের বন্ধু এবং নাট্য আন্দোলনের সহযোদ্ধা আফজাল হোসেন৷ তিনি বলছেন, ফরীদি যে বিরাট মাপের অভিনেতা ছিলেন, তার সেই অভিনয় প্রতিভার পুরোটা প্রকাশের সুযোগ করে দিতে পারে নি বাংলাদেশ৷
দিনের পর দিন রাতের পর রাত আড্ডা দিয়ে কাটিয়েছেন ফরীদি ও আফজাল৷ সেখান থেকেই বোঝা গেছে, অভিনয়ের প্রতি ছিলো ফরীদির দুরন্ত নেশা৷ শুধু অভিনয় নিয়েই তিনি কাটাতে চেয়েছিলেন পুরোটা জীবন৷
মঞ্চনাটক, টিভিনাটকের পাশাপাশি ফরীদি যোগ দিলেন সিনেমায়৷ একের পর এক তিনি উপহার দিয়েছেন অসংখ্য হিট সিনেমা৷ খল-নায়কের চরিত্র থেকে শুরু করে একরোখা সৎ মানুষের চরিত্র যে কোনো ভূমিকাতেই ফরীদি ছিলেন অতুলনীয়৷
গুণী এই শিল্পীর চলে যাওয়াটাকে আফজাল হোসেন বলছেন, ফরীদির এই চলে যাবার পেছনে আছে গোপন অভিমান৷
১৯৫২ সালে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ুন ফরীদি৷ পড়ালেখা করেন অর্থনীতি বিষয়ে৷ কিন্তু অভিনয়ের প্রতি তীব্র ভালোবাসা থেকেই তিনি শুরু করেন মঞ্চনাটক৷ প্রায় তিন দশকের অভিনয় জীবনে তিনি অভিনয় করেছেন অসংখ্য নাটক ও সিনেমায়৷
তাঁর অভিনীত ছায়াছবির মধ্যে আছে, হুলিয়া, দহন, সন্ত্রাস, ব্যাচেলর, শ্যামল ছায়া, জয়যাত্রা, আহা ইত্যাদি এবং টিভি নাটকের মধ্যে রয়েছে সংশপ্তক, ভাঙনের শব্দ শুনি, ভবের হাট প্রভৃতি৷
ফরীদির বন্ধুরা বলছেন, জীবনে কী পেয়েছেন কী পান নি, সে হিসেব মেলানোর আর কোনো সুযোগ কাউকে দিতে চান নি তিনি৷ তাই বুক ভরা অভিমান নিয়ে না ফেরার দেশে তাঁর এই একাকী চলে যাওয়া৷
প্রতিবেদন: আফরোজা সোমা
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক