মধ্যপ্রাচ্যের পেশাজীবী নারীদের ভাবনায় করোনা-সংকট
এমনিতেই অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে কাজ করতে হয় তাদের৷ করোনা সংকটে কিভাবে কাজ করছেন মধ্যপ্রাচ্যের পেশাজীবী নারীরা? চলমান সংকট নিয়ে কী ভাবছেন তারা?
আমাল ইয়ারিসি, সাংবাদিক,সানা, ইয়েমেন
আমি এমন এক দেশে আছি, যেখানে যুদ্ধ চলছে, স্বাস্থ্যব্যবস্থা যেখানে হাঁটু ভেঙে বসে পড়েছে এবং যেখানে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুব কম৷ এসব ভাবলে অবশ্যই ভয় করে৷ কলেরা, ডিফথেরিয়ার মতো রোগের সুচিকিৎসাও তো হয় না এখানে৷ করোনা টেস্ট করার সক্ষমতা নেই আমাদের৷ পরীক্ষা যারা করবেন তাদের প্রশিক্ষণও নেই৷ কতজন সংক্রমিত হয়েছে তা জানা নেই আমাদের৷
লোরিন মসাল্লাম, অর্থনীতিবিদ, বেথেলহেম, ফিলিস্তিন এলাকা
পরিস্থিতি মোটেই ভালো নয়৷ আরো খারাপের দিকে গেলে কী যে হবে! সেরকম পরিস্থিতি সামাল দেয়ার মতো চিকিৎসা ব্যবস্থাই তো নেই৷ তাছাড়া আর কতদিন লকডাউনে থাকতে হবে কে জানে৷ জীবন এখানে স্থবির হয়ে পড়েছে৷ ফিলিস্তিনের যে দিনমজুররা ইসরায়েলে কাজ করতে যায়, তাদের সবাইকে কোনো পরীক্ষা না করেই পশ্চিম তীরে ফিরিয়ে দেয়া হবে৷ তাদের অনেকেই সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারেন৷
গিনা মানসুর, এনজিও কর্মী, লেবানন
পরিস্থিতি এমন যে সব সময় মানসিক চাপে থাকতে হয়৷ জীবনটা পুরোপুরি ইন্টারনেটকেন্দ্রিক হয়ে গেছে৷ আর মিডিয়ায় তো করোনাভাইরাস ছাড়া কিছুই থাকে না৷ সবকিছুতেই একটা নেগেটিভ ব্যাপার৷ এসব থেকে মন সরানো যাচ্ছে না৷
ফাতেন জেবাই, লেবানিজ ভিডিও সাংবাদিক ও প্রশিক্ষক, দোহা, কাতার
এখানে এসে নতুন কাজে যোগ দেয়ার পাঁচ দিনের মধ্যেই আমাকে কোয়ারান্টিনে যেতে হয়েছে৷ ফলে চ্যালেঞ্জটা অনেক কঠিন হয়ে গেল৷ যে শহরে থাকি তা চেনাই হলো না এখনো৷ তবে দোহা শহরে থাকার অর্থ হলো লেবাননের চেয়ে অনেক ভালো অর্থনৈতিক নিরাপত্তার মধ্যে থাকা৷ লেবাননে তো অর্থনীতি এবং স্বাস্থ্যব্যবস্থা দুটোরই খুব খারাপ অবস্থা৷ আমার পরিবারকে নিয়ে তাই খুব চিন্তায় আছি৷
দিয়া দিব আবু দালো, স্থাপত্যের ছাত্রী, আম্মান, জর্ডান
আমি যে সুস্থ আছি, কোয়ারান্টিনে থাকার মতো যথেষ্ট জায়গা যে আমার আছে, সেজন্য আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ৷ গরিবদের তো এসব নেই৷ জিনিসপত্রের দামও বেড়েছে৷ এর বাইরে তিন সপ্তাহ ধরে যে ঘরে থাকছি, এ বিষয়টিও কষ্ট দিচ্ছে৷