মধ্যপ্রাচ্যে খ্রিষ্টানহত্যা বন্ধ করতে বললেন পোপ
১০ জুলাই ২০১৫দক্ষিণ অ্যামেরিকা সফরের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার বলিভিয়ায় যান পোপ ফ্রান্সিস৷ শুক্রবারই তাঁর প্যারাগুয়েতে যাওয়ার কথা৷ ইকুয়েডর থেকে বলিভিয়ায় পৌঁছানোর পর সান্তা ক্রুজে আয়োজিত এক সভায় তিনি সারা বিশ্বে, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে ‘খ্রিষ্টানদের বিরুদ্ধে গণহত্যা'-র উল্লেখ করে এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আজ আমরা বড় দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করছি মধ্যপ্রাচ্য এবং বিশ্বের অন্যান্য জায়গায় কীভাবে আমাদের ভাই এবং জবাই করা হচ্ছে, নির্যাতন করা হচ্ছে৷ শুধু মহান যিশুর ওপর বিশ্বাস রাখার কারণেই হত্যা করা হচ্ছে তাঁদের৷'' সার্বিকভাবে চলমান পরিস্থিতিকে ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ' হিসেবে উল্লেখ করে পোপ আরো বলেন, ‘‘এক ধরণের গণহত্যাই চলছে এখন৷ এটা বন্ধ করতেই হবে৷''
পোপ ফ্রান্সিস আগেও মধ্যপ্রাচ্যে খ্রিষ্টানদের বিরুদ্ধে হত্যা-নির্যাতনের বিষয়ে উদ্বেগ এবং উষ্মা প্রকাশ করেছেন৷ ইরাক এবং সিরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ধরে ধরে হত্যা করা হচ্ছে, নারীদের ধর্ষণ করা হচ্ছে, ধর্মান্তরিত করা হচ্ছে – এ সব উল্লেখ করে ইসলামি জঙ্গি সংগঠন আইএস-এর কঠোর সমালোচনাও করেছেন তিনি৷
বলিভিয়ায় ক্যাথলিক চার্চের অতীত কর্মকাণ্ডের সমোলোচনা করতেও ছাড়নেননি পোপ ফ্রান্সিস৷ ঔপনিবেশিক শাসনের সময় দক্ষিণ অ্যামেরিকায় ক্যাথলিক চার্চ যে আদিবাসীদের ওপর ধর্মের নামে অত্যাচার চালিয়েছে, তা স্বীকার করে নিয়ে বিনীতভাবে ক্ষমাও চেয়েছেন তিনি৷ বলিভিয়ার প্রথম আদিবাসী প্রেসিডেন্ট এবো মরালেসসহ উপস্থিত অন্য আদিবাসী শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘‘কথাটা বলার সময় অনুশোচনা হচ্ছে আমার৷ ঈশ্বরের নামে এক সময় স্থানীয়দের বিরুদ্ধে কী নারকীয় পাপকর্মই না হয়েছে!''
বরাবরের মতো বিশ্বের আপামর দরিদ্র মানুষের হয়েও কথা বলেছেন পোপ ফ্রান্সিস৷ সান্তা ক্রুজবাসীদের প্রতি বর্তমান সময়ের ভোক্তাসমাজকে প্রত্যাখ্যান করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এখন সবার মানসিকতাটাই কেমন যেন, সব কিছুরই একটা মূ্ল্য নির্ধারণ করা হয়, সবই এখন কেনা যায়, সবকিছুই সমঝোতাযোগ্য৷ এমন ভাবনা নিয়ে চলার অবস্থা এবং সামর্থ্য খুব অল্প লোকের আছে৷''
এসিবি/ডিজি (এপি, এএফপি, রয়টার্স)