একটু কষ্ট করুন
১ জুন ২০১৬কিসে ভেজাল নেই? ফল খেতে যান, পাবেন কার্বাইড, নয়ত ফরমালিন৷ মাছ, শাকসবজি তাতেও মেশানো একই জিনিস৷ রোজার সময় মুড়ি খাবেন? তাতেও ইউরিয়া মেশানো৷ মিষ্টিজাতীয় খাবার কিনতে যান, সঙ্গে বিনামূল্যে পাবেন রং৷ মসলার ক্ষেত্রেও তাই৷
তাহলে কী খাবেন? যেহেতু বাজার ভেজাল খাবারে ছেয়ে গেছে, তাই খাবার গ্রহণের আগে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে৷ কিছু প্রক্রিয়া অনুসরণ করে খাবারকে ফরমালিন আর কার্বাইডমুক্ত করা যেতে পারে৷ যেমন সবজি রান্নার আগে সেগুলো লবণ মেশানো গরম পানিতে কয়েক মিনিট ডুবিয়ে রাখুন৷ তারপর পানি থেকে সবজি তুলে ভালো পানি দিয়ে আবার ধুয়ে নিন৷ ফল খেতে চাইলে অন্তত এক ঘণ্টা আগে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন৷ এছাড়া ফল ধোয়ার বিশেষ ডিটারজেন্ট পাওয়া যায়৷ সেটি ব্যবহার করা যেতে পারে৷ আর ফলের খোসা না খাওয়াই ভালো৷
মাছ, মাংসের ক্ষেত্রেও তা-ই৷ রান্নার আগে ঘণ্টাখানেক পানিতে ডুবিয়ে রাখলে অনেকখানি ফরমালিন দূর হয়ে যাবে৷ আরও ভালো হয় যদি পানির সঙ্গে ভিনেগারও মিশিয়ে দেন৷ তাহলে কয়েক মিনিটের মধ্যেই ফরমালিন চলে যাবে৷
এসব প্রক্রিয়া মেনে চলার পাশাপাশি ভেজালমুক্ত খাবার খুঁজে বের করে সেগুলো কেনার চেষ্টা ও উদ্যোগ নিতে হবে৷ এজন্য প্রয়োজনে কিছুটা সময়ও ব্যয় করতে হবে৷ যেমন মসলা আর মুড়ির ক্ষেত্রে, হাতে বানানো হয় এমন জায়গা খুঁজে বের করে সময় নিয়ে সেখানে যেতে হবে৷ আর ফল কেনার আগে কিছু বিষয় খেয়াল করতে হবে৷ যেমন মৌসুমের আগেই ফলটি বাজারে এসেছে কিনা, ফলের রং দেখতে যেমন হওয়া উচিত তার চেয়ে একটু অন্যরকম মনে হচ্ছে কিনা, ফলের গায়ে কোনো মাছি বসছে না কেন - এসব বিষয় দেখতে হবে, কেননা, মৌসুমের আগেই ফল বাজারে আসার অর্থ ব্যবসায়ীরা ফল পাকার আগেই গাছ থেকে নামিয়ে রাসায়নিক দিয়ে সেগুলো পাকিয়েছে৷
দেশি ফলের ক্ষেত্রে ফলগুলো যে এলাকায় জন্মায় সরাসরি সেই অঞ্চলের কৃষকদের কাছ থেকে ফল কেনার চেষ্টা করতে হবে৷ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের কারণে এই বিষয়টি এখন অনেক সহজ হয়ে গেছে৷
মিষ্টি জাতীয় খাবার ঘরে তৈরি করাই উত্তম৷ এতে যেমন নিজের হাতে তৈরি খাবারের আলাদা স্বাদ পাওয়া যাবে, তেমনি বাজারের রং মেশানো জিলাপি আর মিষ্টি থেকে পাওয়া যাবে মুক্তি৷ মিষ্টি তৈরির উপায় জানতে ইউটিউবের সহায়তা নেয়া যেতে পারে৷
শেষ কথা – ভেজাল খাবার খাওয়ার কারণে স্বাস্থ্যের অনেক ক্ষতি হয়৷ ভেজালের পরিধি যেহেতু শিশু খাবার পর্যন্ত পৌঁছে গেছে, তাই শিশু স্বাস্থ্যও আজ হুমকির মুখে৷ সুতরাং দৈনন্দিন জীবনের সমস্যা সমাধানের জন্য যেমন অনেক চিন্তা ও সময় খরচ করা হয়, ভেজালমুক্ত খাবার নিশ্চিতের বিষয়টিও তেমন গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে হবে৷
আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷