কয়েকজন ব্লগারকে হত্যার পরিকল্পনা
৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬আলোচিত কয়েকজন ব্লগারের মধ্যে দু'জনের অবস্থান ইউরোপে৷ তাঁদের একজন অনন্য আজাদের সঙ্গে সর্বশেষ আশঙ্কা নিয়ে কথা হয়েছে কয়েকবার৷ চলতি মাসে ঢাকা যাবার পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি৷ তবে সেটা একান্ত আপনজন ছাড়া কাউকে জানাননি তিনি৷
অনন্যর এই পরিকল্পনার মাঝেই ৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকার দৈনিক যুগান্তর জানিয়েছে, চার ব্লগারকে হত্যার পরিকল্পনা করা হচ্ছে চলতি মাসে, যার মধ্যে আছেন তিনিসহ আরো তিনজন ব্লগার৷
নুর নবী দুলাল নামক আরেক ব্লগার, যিনি ‘ইস্টেশন' ব্লগের মডারেটর, তাঁকে হত্যার পরিকল্পনার কথা তিনি পত্রিকা মারফতই জেনেছেন৷ দুলাল বলেন, ‘‘২০১৩ সালের পর থেকেই আমি চরম আস্থাহীনতায় ভুগছি৷ নিলয় নীল এর হত্যাকাণ্ডের পর থেকে আত্মগোপনে থাকি সব সময়৷ এখনো একই অবস্থায় আছি৷''
যুগান্তরে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, আলোচিত ব্লগারদের সতর্ক করা হয়েছে৷ তবে অনন্য আজাদ ও নুর নবী দুলাল জানিয়েছেন, তাঁদের কেউ সতর্ক করেনি৷ পত্রিকার মাধ্যমে জেনেছেন তাঁরা৷ এই বিষয়ে জানতে চাইলে সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহা জানান, কোন ব্লগার হুমকির মুখে আছেন কিংবা কাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হচ্ছে তা ইন্টারনেট নজরদারির মাধ্যমে তাঁরা জানতে পারেন৷ প্রাপ্ত তথ্য তাঁরা পুলিশকে জানান৷ আর ব্লগারদের জানানোর দায়িত্ব পুলিশের৷
যুগান্তর পত্রিকায়ও তানভীর হাসান জোহার বরাতে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে৷ বর্তমান সরকারের তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি বিভাগে কর্মরত এই বিশেষজ্ঞ ডয়চে ভেলেকে জানান, জঙ্গিদের দ্বারা পরিচালিত বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ পর্যবেক্ষণ করে তারা কয়েকজন ব্লগারের নাম পেয়েছেন৷ তাঁদের উপর হামলার সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করা হচ্ছে৷ এ জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নিচ্ছে তারা৷
তিনি বলেন, ‘‘আধুনিক প্রযুক্তি এবং ধরা পড়া জঙ্গিদের ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে জঙ্গি তৎপরতা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন তথ্য বের করা সম্ভব হচ্ছে৷ হত্যার মূল পরিকল্পনাকারীরা শিক্ষিত এবং পর্যাপ্ত তথ্যের অভাবে তাদের ঠিকভাবে ধরা যাচ্ছে না৷''
ডয়চে ভেলের সঙ্গে আলাপকালে জোহা একজন ব্লগারের নাম উল্লেখ করেছেন যার বাড়তি নিরাপত্তা প্রয়োজন৷ তিনি বলেন, ‘‘গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার যদিও সঙ্গে লোকজন নিয়ে চলাফেরা করেন, আমার মনে হয় তার নিরাপত্তা আরো বাড়ানো উচিত৷ আমি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলেছি৷''
উল্লেখ্য, গত বছর বাংলাদেশে চার মুক্তমনা ব্লগার এবং এক প্রকাশককে কুপিয়ে হত্যা করে উগ্রপন্থিরা৷ চলতি মাসে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এবং বইমেলাকে কেন্দ্র করে ব্লগারদের উপর আরো হামলার আশঙ্কা করা হচ্ছে৷
ব্লগারদের রক্ষায় কী করা যেতে পারে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷