শুধু কম্পিউটার গেম নয়
১২ অক্টোবর ২০১৭আউডি-র আর-এইট স্পোর্টস কার: মডেলটির সবচেয়ে সরল সংস্করণের দাম পড়ে এক লাখ ছেষট্টি হাজার ইউরো৷ এ ধরনের গাড়ি তো আর সর্বত্র কিনতে পাওয়া যায় না৷ বার্লিনের আউডি-সিটি শো-রুমে আর-এইট মডেলটিকে অন্তত ডিজিট্যালি দেখা সম্ভব – ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি হিসেবে৷
প্রশিক্ষণার্থী ইয়াকব মার্টেন্স এই প্রথমবার ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি চশমা পরেছেন৷ এভাবে তিনি গাড়িটাকে ভিতর ও বাইরে থেকে পরীক্ষা করতে পারবেন – এবং বিভিন্ন ধরনের পরিস্থিতিতে৷ ইয়াকব অভিজ্ঞতা হল, ‘‘ধীরে ধীরে শুরু করতে হয়, যাতে ব্যাপারটা ধাতস্থ হয়৷ তারপর একসময় ওর ভিতরে ঢুকে যাওয়া যায় – নিঃসন্দেহে একটা দারুণ অভিজ্ঞতা, গাড়িটাকে ভার্চুয়াল রিয়্যালিটির মাধ্যমে একেবারে নিজের চোখের সামনে দেখা৷''
আউডি-র লক্ষ্য হল, গ্রাহকরা যাতে তাদের পছন্দ মতো খুঁটিনাটি বদলে নিয়ে নিজেদের মনের মতো গাড়ি সৃষ্টি করতে পারেন৷
আউডি-সিটির মার্কেটিং প্রধান মানফ্রেড ককমান বললেন, ‘‘ভার্চুয়াল রিয়্যালিটির ফলে গ্রাহকরা আরো ঘন ঘন শো-রুমে আসবেন, এছাড়া গাড়িতে বাড়তি ফিচার বিক্রি বাড়বে বলে আউডি আশা করছে৷ সব আউডি ডিলারের পক্ষে তো আর সব মডেল স্টকে রাখা সম্ভব নয়৷''
এই ডিলারশিপে নাকি আগের চেয়ে ২৫ শতাংশ বেশি ফিচার বিক্রি হচ্ছে – যদিও শীঘ্রই সব ডিলারশিপে ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি চশমা থাকবে, কাজেই তা থেকে কোনো বিশেষ সুবিধা পাওয়া যাবে না বলে সেলসম্যানদের ধারণা৷
সেলস থেকে ডিজাইন
ডাইমলার কোম্পানিতে কর্মীরাই ভিআর প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন, যেমন স্টুটগার্টে ডাইমলারের ডিজাইন সেন্টারে৷ নিজেদের ডিজাইন করা এক আগামী পৃথিবীতে ডাইমলারের ডিজাইনার আর ইঞ্জিনিয়াররা ভার্চুয়াল রিয়্যলিটি চশমা পরে পরীক্ষা করে দেখছেন, চালকবিহীন এফও-১৫ যানটি থেকে কী ধরনের আলোক ও শব্দসংকেত দিয়ে পথচারীদের সতর্ক করা যেতে পারে৷
মার্সিডিজ ডিজাইনার মার্ক ননেনমাখার বললেন, ‘‘ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি হল প্রায় বাস্তব পরিস্থিতিতে আমাদের ধ্যানধারণাগুলো পরীক্ষা করার একটা দারুণ সুযোগ৷ দূর থেকে, একটা দ্বিমাত্রিক স্ক্রিন ব্যবহার করে৷ অথচ কীভাবে যেন তা বাস্তব বলে মনে হয়৷''
ডিজাইনাররা বিভিন্ন মডেলের ভিতরটা ডিজাইন করার জন্যও ভিআর প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকেন৷ এ পর্যন্ত শুধুমাত্র একটি লোকেশানেই পরিবর্তনগুলো করা এবং দেখা সম্ভব৷ ডাইমলার ডিজিটাল ডিজাইন-এর প্রধান ভেরা স্মিট বললেন, ‘‘আপাতত আমাদের সামনে একটা বিরাট চ্যালেঞ্জ হল, সারা বিশ্বে আমাদের যে বিভিন্ন স্টুডিও আছে – ক্যালিফর্নিয়ায়, চীনে ও জার্মানিতে – সেগুলিকে কীভাবে সিনক্রোনাইজ করা যায়৷ যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের স্টুডিও-য় ডিজাইনাররা ভিআর চশমা চোখে দিয়ে জার্মানির পরিবেশ দেখতে চান৷ তখন আমাদের রদবদল করতে হয়৷''
ভেরা স্মিট যতো শীঘ্র সম্ভব বিশ্বব্যাপী ডাইমলারের স্টুডিও নেটওয়ার্কটিকে সিনক্রোনাইজ করতে চান৷ দৃশ্যত ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি শীঘ্রই ডাইমলার গ্রুপের অন্যান্য বিভাগেও চালু হতে চলেছে৷
প্রতিবেদন: বেটিনা টোমা-শাডে/এসি