ভারতে নির্বাচন
৬ মার্চ ২০১২পাঁচটি রাজ্যের বিধানসভা ভোটের ফলাফলে কংগ্রেস পার্টির কপালে চিন্তার ভাঁজ৷ প্রত্যাশা পূরণের ধারেকাছেও যেতে পারেনি বিশেষ করে উত্তর প্রদেশে৷ রাজ্যে কংগ্রেসের জায়গা চার নম্বরে৷ ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে কংগ্রেসের মুখ হিসেবে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বের সম্ভাবনায় জল ঢেলে দিয়েছে৷
রাহুল গান্ধী এই পরাজয়ের দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়ে বলেছেন, ‘‘উত্তর প্রদেশে কংগ্রেসের ভিত দুর্বল৷ আমি দেশের জনতার জন্য কাজ করছি৷ আমার লক্ষ্য রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনার উন্নতি৷ সেটা আমি করে যাব৷ জয় যেমন আমি আশা করেছিলাম, তেমনি পরাজয়ও৷ এটা আমার কাছে এক শিক্ষা, ভবিষ্যতে সেই শিক্ষা আমি কাজে লাগাবো৷''
কংগ্রেস নেতৃত্ব কিন্তু রাহুলকে আড়াল করে বলছেন, রাহুল জাতীয় স্তরের নেতা৷ নির্বাচনী প্রচারে তিনি যে হাওয়া তুলেছিলেন, দলের স্থানীয় সংগঠন সেটাকে ভোটে পরিণত করতে পারেনি৷ উত্তর প্রদেশে ৪০৩টি আসনের মধ্যে মুলায়ম সিং-এর সমাজবাদী পার্টি ২১০টি আসন পেয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে মায়াবতীর বিএসপি পেয়েছে ৮৭টি, বিজেপি জোট ৪৬টি এবং কংগ্রেস জোট ৩৮টি৷
মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতীর রাজ্যপাট শেষ৷ আজ তিনি ইস্তফা দেন৷ তাঁর পরাজয়ের কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে, দলিত আইনের অপব্যবহার, উন্নয়নের বদলে নিজের ও পার্টির মূর্তি স্থাপন এবং দুর্নীতির সঙ্গে আপোশ৷ বিজেপি সভাপতি নীতিন গডকড়ি মনে করেন, এর কারণ রাজ্যে দুটি দলের মধ্যে মেরুকরণ৷ বিএসপিকে হটাতে আঞ্চলিক দল এসপিকে বেছে নিয়েছে ভোটাররা৷ অবশ্য বিজেপি প্রত্যাশা মতো সফল হয়নি৷ পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন মুলায়ম সিং৷
পাঞ্জাবে ক্ষমতায় ফিরেছে আকালি-বিজেপি জোট৷ ১১৭টি আসনের মধ্যে জোট পেয়েছে ৬৭টি আসন৷ কংগ্রেস ৪৭টি৷ উত্তরাখণ্ডের ৭০টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস ও বিজেপির হাড্ডাহাড্ডি লড়াই৷ সামান্য ব্যবধানে বাজি মেরেছে বিজেপি৷ পেয়েছে ৩৩টি আসন৷ কংগ্রেস ৩১টি৷ গোয়ায় ৪০টি আসনের মধ্যে ২২টি আসন পেয়ে বিজেপির নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা৷ কংগ্রেস দাঁড়াতে পারেনি৷ উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরের ৬০টি আসনের মধ্যে ৩৮টি আসন পেয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিজের দখলে রাখতে পেরেছে কংগ্রেস৷
এই নির্বাচনি ফলাফল জাতীয় রাজনীতিতে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে৷ বিজেপি ও অন্যান্য বিরোধী দল মনমোহন সিং সরকারকে সংসদের ভিতরে ও বাইরে আরো বেশি কোণঠাসা করবে বিভিন্ন ইস্যুতে৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন