ভোটারদের সংখ্যা প্রায় ৮২ কোটি
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪২০১৪ সালের আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে ভোটদাতাদের সংখ্যা অতীতের সব নির্বাচনকে অনেক ছাড়িয়ে গেছে৷ ১৯৫১-৫২ সালে ভারতের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে ভোটারদের সংখ্যা যেখানে ছিল ১৭ কোটি ৩২ লাখ ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে তা পাঁচগুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮১ কোটি ৫০ লাখ৷ অর্থাৎ, গত নির্বাচনের চেয়ে দ্বিগুণ৷ এর মধ্যে ১৫ কোটি অর্থাৎ মোট ভোটদাতাদের ২০ শতাংশ নতুন ভোটার, যাঁরা এই প্রথম জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবেন৷ নির্বাচন কমিশনের সংশোধিত ভোটার তালিকায় উল্লেখিত পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে এ কথা৷
পুরুষদের তুলনায় মহিলা ভোটারের অনুপাত অপেক্ষাকৃত কম৷ পুরুষ ভোটার ৫২ শতাংশ গতবারের তুলনায় এই অনুপাতে খুব একটা হেরফের হয়নি৷ সর্বশেষ জনগণনায় দেখা গেছে, ২০১৪ সালে ১৮ বছর ও তার অধিক বয়সের জনসংখ্যা ৮৩ কোটি ৩০ লাখ৷ নির্বাচন কমিশনের বিশেষ প্রচেষ্টায় ৯৮ শতাংশ ভোটদাতাদের নাম নথিভুক্ত করা সম্ভব হয়েছে৷ আগে এমন অনেক জায়গা ছিল যেখানকার ভোটারদের নাম ভোটার তালিকায় ছিল না৷
দেশের অর্ধেক ভোটার উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, বিহার ও পশ্চিমবঙ্গে৷ গত ২০ বছরে জনসংখ্যা বেড়েছে ৪৩ শতাংশ, কিন্তু ভোটার সংখ্যা বেড়েছে ৬৪ শতাংশ৷ কারণ পরিসংখ্যান ও অন্য তথ্যগত ত্রুটির কারণে ভোটার তালিকায় তাঁদের নাম ছিল না৷ কোনো কোনো রাজ্যে ভোটার সংখ্যা বেড়েছে অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় বেশি৷ গত ২০ বছরে দিল্লির ভোটদাতার সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়েছে৷ উত্তর প্রদেশে বেড়েছে ৭০ শতাংশ, মধ্যপ্রদেশ ও বিহারে বেড়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ৷ গত ১০ বছরের পরিসংখ্যান বলছে, ভোটারদের সংখ্যা সব থেকে বেশি বেড়েছে পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ৩০ শতাংশের বেশি, বলেছে নির্বাচন কমিশন৷
আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলির জন্য ব্যাপক নির্দেশিকা জারি করে নির্বাচন কমিশন সতর্ক করে দিয়েছেন যে, আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে সেই দলের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে৷ যার মধ্যে পড়ে ভোটারদের প্রভাবিত করতে নানা রকম উপহার দেয়া, লোভ দেখানো ইত্যাদি৷ নির্বাচনি ইস্তেহার প্রকাশের অধিকার স্বীকার করে নিয়েও বলা হয়, রাজনৈতিক দলগুলি যেন তাদের নির্বাচনি ইস্তেহারে এমন কোনো অবাস্তব প্রতিশ্রুতি না দেয়, যা পালন করা সম্ভব নয় কিংবা তা সংবিধানের আদর্শের পরিপন্থি হয়৷ যেসব প্রতিশ্রুতি দেয়া হবে আর্থিক দিক থেকে সেই দল বা প্রার্থীর পক্ষে তা পালন করা সম্ভব কিনা তার একটা রূপরেখা উল্লেখ করতে হবে৷ এই নির্দেশিকা সুপ্রিম কোর্টের মতানুসারে জারি করা হয়৷ সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য বলেছেন, নির্বাচনি ইস্তেহারে দেয়া প্রতিশ্রুতি দুর্নীতির মধ্যে না পড়লেও বিনা পয়সায় উপহার বা অন্যান্য জিনিস-পত্র দেয়া দুর্নীতির মধ্যে পড়ে৷
সম্প্রতি দুটি জনমত সমীক্ষায় ভারতীয় জনতা পার্টির পাল্লা ভারি বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে৷ এক সমীক্ষার অনুমান, বিজেপি সংসদের ৫৪৩টি আসনের মধ্যে পেতে পারে ১৮৮টি আসন৷ কোনো দলই ২৭২-এর ম্যাজিক সংখ্যা পাবে না৷ অর্থাৎ, ২০১৪ সালের ভোটে ত্রিশঙ্কু সংসদের সম্ভাবনা বেশি৷ সেক্ষেত্রে আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে কোয়ালিশন ছাড়া উপায় নেই৷ তবে সেই হিসেবে নবাগত অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টির গুরুত্ব বাড়তে পারে৷