ভারতে মহিলা সংরক্ষণ বিল ও করের বোঝা
১৫ মার্চ ২০১০ভারতের সংসদের উচ্চ কক্ষ – রাজ্যসভায় মহিলা সংরক্ষণ বিল অনুমোদনকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি যে বিতর্ক ও নাটক দেখা গেল, সেবিষয়ে মন্তব্য করেছে ‘ডি টাগেসসাইটুং' সংবাদপত্র৷ জার্মান পাঠকদের জন্য এই আইনের চরিত্র ও উদ্দেশ্য বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করার পর ঐ প্রতিবেদনে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, যাবতীয় রাজনৈতিক বিতর্ক সত্ত্বেও ভারতের বেশীরভাগ দলই কিন্তু এই উদ্যোগের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে৷ এমনকি প্রধান বিরোধী পক্ষ – অর্থাৎ ভারতীয় জনতা পার্টি ও বাম দলগুলিও এক্ষেত্রে সরকারের উদ্যোগের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে৷
বিজেপি নেতা অরুণ জেটলি বলেছেন, ‘‘এই বিপ্লবের অন্যতম হোতা হওয়ার বিশাল সম্মান আমরা পেলাম৷'' ‘ডি টাগেসসাইটুং' আরও মনে করিয়ে দিয়েছে যে, গত শতাব্দীর পঞ্চাশের দশকেই মহাত্মা গান্ধির অনুগামী কয়েক জন নেত্রী মহিলা সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন৷ কিন্তু এই পরিকল্পনা কার্যকর করার কাজ শুরু হয়েছিল আদিবাসী সম্প্রদায় বা নীচু জাতের মানুষের স্তরে৷ এরপর আশির দশকে রাজীব গান্ধিও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও সংবিধান পরিবর্তনের এই প্রক্রিয়া মোটেই সহজ হয় নি৷ সংকীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থের কারণে অনেক দল নানা অজুহাত খাড়া করে মহিলা সংরক্ষণ বিলের বিরোধিতা করে গেছে৷ কিন্তু রাজ্যসভায় তাদের সাম্প্রতিক আচরণের ব্যাপক নিন্দা হয়েছে সারা দেশে – লিখেছে ‘ডি টাগেসসাইটুং'৷
চীন ও ভারতের মত দেশে অভাবনীয় উন্নতির প্রেক্ষাপটে এই দুই দেশে বিদেশী সংস্থাগুলির বিনিয়োগের অভিজ্ঞতার একটা খতিয়ান তুলে ধরেছে ‘ফাইনান্সিয়াল টাইমস ডয়েচলান্ড৷' বহুজাতিক মোবাইল সংস্থা ‘ভোডাফোন' সম্প্রতি ভারতে এক অপ্রীতিকর ঘটনার সম্মুখীন হয়েছে৷ বকেয়া কর ও জরিমানা হিসেবে ঐ সংস্থার কাছে প্রায় ৪০০ কোটি ডলার দাবি করেছে কর দপ্তর৷ বিদেশী সংস্থাগুলি এশিয়ার বিভিন্ন দেশে প্রায়ই কর সংক্রান্ত জটিলতার সম্মুখীন হয়ে থাকে৷ চীন বা ভারতের মত দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির উচ্চ হার দেখে আকৃষ্ট হয়ে তারা যখন বিনিয়োগ করতে এগিয়ে আসে, তখন তাদের এই ঝুঁকিরও সম্মুখীন হতে হয়৷
ভারত ও জার্মানির মধ্যে কর আদায়ের ক্ষেত্রে বোঝাপড়া সংক্রান্ত দ্বিপাক্ষিক চুক্তি থাকা সত্ত্বেও, বাস্তবে জার্মান সংস্থাগুলি প্রায়ই অসুবিধার মুখে পড়ে৷ বিশেষ করে যে সব সংস্থা দুই দেশেই দপ্তর বা কারখানা চালায়, তাদের উভয় দেশেই কর দিতে হয়৷ শুধু প্রত্যক্ষ কর নয়, ভারতে এত রকমের পরোক্ষ কর চালু রয়েছে, যে জার্মান সংস্থাগুলি প্রায়ই নাজেহাল হয়ে পড়ে৷ তাই ভারত ও চীনের মত দেশের প্রবৃদ্ধির হাতছানি দেখে এগিয়ে এলে শুধু উদ্যোগী মনোভাব থাকলে চলে না, সঙ্গে পোড় খাওয়া কর বিশেষজ্ঞকেও নিয়ে আসতে হয় – লিখেছে ‘ফাইনান্সিয়াল টাইমস ডয়েচলান্ড৷'
সংকলন ও অনুবাদ : সঞ্জীব বর্মন, সম্পাদনা : দেবারতি গুহ