1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ব্ল্যাকবেরিকে ‘হোয়াইট’ রাখতে সচেষ্ট যুক্তরাষ্ট্র

৬ আগস্ট ২০১০

সৌদি আরব বন্ধ করে দিয়েছে, অক্টোবর থেকে বন্ধ করে দিচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতও৷ ভারতও ভাবছে, কী করা যায়৷ সবারই উৎকণ্ঠা ব্ল্যাকবেরি নিয়ে, কারণ নিরাপত্তা৷

https://p.dw.com/p/OdYE
এবার উৎকণ্ঠা ব্ল্যাকবেরি নিয়েছবি: DPA

এই স্মার্টফোনে কথা বলা, ই-মেইল কিংবা মেসেজ আদান-প্রদান ধরতে পারছে না নিরাপত্তা সংস্থাগুলো৷ শঙ্কা আছে, এর সুবিধা নিয়ে জঙ্গি কিংবা সন্ত্রাসীরা নিজেদের সংগঠিত করছে৷

সমস্যায় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রও৷ তবে তাদের উৎকণ্ঠা একটু আলাদা৷ তারা ভাবছে, ব্ল্যাকবেরি ব্যবহারকারী অ্যামেরিকানদের সমস্যা নিয়ে৷ তাই এই বিষয়ে সৌদি আরব, আমিরাত, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা করতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র৷ উদ্দেশ্য, একটা সমাধান বের করা৷ যাতে ব্ল্যাকবেরিও সচল থাকে, আবার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগটাও দূর হয়৷

ব্ল্যাকবেরি তৈরি করছে ক্যানাডার কোম্পানি রিসার্চ ইন মোশন-আরআইএম৷ বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তার বিচারে এখন নকিয়ার পরই এর স্থান৷ এই ফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্রাউজ করা যাচ্ছে ৯০টি দেশে৷ ২০০২ সালে বাজারে আসার পর থেকে দিন যতই গড়াচ্ছে, হাতে মুঠোয় থাকা এই ‘কম্পিউটার' বিক্রি ততই বাড়ছে৷ সমস্যাটা দেখা দিয়েছে হালে৷ যখন কিনা কয়েকটি দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থার সুরক্ষার কোপ পড়েছে ব্ল্যাকবেরির ওপর৷

জঙ্গি সমস্যা নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্য৷ একই সমস্যা রয়েছে ভারতেও৷ ২০০৮ সালে মুম্বাই হামলার পর ভারত নড়েচড়ে বসেছে৷ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোথাও কোনো গলদ রাখতে রাজি নয় তারা৷ আর তখনই চোখ পড়ে ব্ল্যাকবেরির ওপর৷ দেশটিতে এই ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০ লাখের ওপর৷ নিরাপত্তা সংস্থাগুলো এই ফোন ব্যবহারকারীদের ওপর কোনো নজরদারিই চালাতে পারছে না৷ কর্মকর্তাদের শঙ্কা, আধুনিক এই প্রযুক্তি নিজেদের কাজে লাগাচ্ছে জঙ্গি কিংবা সন্ত্রাসীরা৷ এই নিয়ে আরআইএম-এর সঙ্গে কথাও বলেছেন ভারতের কর্তাব্যক্তিরা৷

Blackberry No FLASH
ব্ল্যাকবেরির মেসেজ ট্রেস করার প্রযুক্তি ভারতকে দিয়েছে আরআইএমছবি: dpa

শোনা যাচ্ছিলো, ব্ল্যাকবেরির মেসেজ ট্রেস করার প্রযুক্তি ভারতকে দিয়েছে আরআইএম৷ তবে এই খবর নাকচ করেছে প্রতিষ্ঠানটি৷ তাদের মুখপাত্র সাৎচিত গায়কোয়াড় বুধবারই সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘এই ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি৷'' যার মানে হলো, গ্রাহকের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার ক্ষেত্রে কোনো আপস করতে চাইছে না তারা৷ তবে গায়কোয়াড় একইসঙ্গে বলেছেন, সমস্যা সুরাহার জন্য তারা ভারতের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন৷ আর এর মধ্যেই সঙ্কটের অবসানে ভূমিকা রাখার আগ্রহ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র৷ দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র পি জে ক্রাউলি বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বললেন, ‘‘ভারত, সৌদি আরব, আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আমরা কথা বলতে যাচ্ছি, নিরাপত্তার উদ্বেগের বিষয়টি আমরা তাদের কাছ থেকে শুনব৷ আর একই সঙ্গে আরআইএম-এর সঙ্গেও কথা বলব আমরা৷ নিরাপত্তার দিকটি যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি অবাধ তথ্য প্রবাহও আমাদের নিশ্চিত করতে হবে৷ সব বিষয় বিবেচনায় রেখে সবাই মিলেই এর একটা সমাধান বের করতে হবে৷''

ক্রাউলি স্বীকার করেছেন, বিভিন্ন দেশ ব্ল্যাকবেরি নিষিদ্ধ করায় তাঁর দেশের সরকার চাপে পড়েছে৷ যুক্তরাষ্ট্রে অনেক ব্যবসায়ী এতে ক্ষুব্ধ৷ একদিন আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনও ব্ল্যাকবেরি সমস্যা নিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনার ওপর জোর দেন৷

আরব আমিরাত জানিয়েছ, আগামী ১১ অক্টোবর থেকে সেদেশে ব্ল্যাকবেরি নিষিদ্ধ৷ এরপর সিদ্ধান্ত টানে সৌদি আরব৷ তবে তারা শুক্রবার থেকেই তা নিষিদ্ধ করেছে৷ কোনো মোবাইল অপারেটর যদি এরপরও ব্ল্যাকবেরিতে তাদের নেটওয়ার্ক সচল রাখে, তবে ১৩ লাখ ডলার জরিমানা করা হবে৷ এখানে বলে রাখা ভালো, সৌদি আরবে সাত লাখ ব্যক্তির হাতে ব্ল্যাকবেরি রয়েছে৷ লেবাননও ব্ল্যাকবেরি নিষিদ্ধ করার পথে এগোচ্ছে৷ ব্ল্যাকবেরির মাধ্যমে ইসরায়েলের চর হিসেবে কাজ করার সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বেশ কয়েকজনকে৷ বাহরাইনও চিন্তিত৷ তবে কুয়েত বলছে, তারা এখনি নিষিদ্ধ করার কথা ভাবছে না৷ পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে৷ এই অবস্থায় নিজ দেশের প্রতিষ্ঠান হিসেবে এর মধ্যে মাথা গলাতে হচ্ছে ক্যানাডাকেও৷ কারণ এই জটিলতা দেখা দেওয়ার পর স্টক এক্সচেঞ্জে আরআইএম-এর শেয়ারের দাম পড়তে শুরু করেছে৷ তাই ক্যানাডা বলছে, তারাও বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা করবে৷

প্রতিবেদন: মনিরুল ইসলাম

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল ফারূক