ব্রেক্সিট চুক্তিতে পরিবর্তন চান জনসন
২৩ জুলাই ২০২১দীর্ঘ ও জটিল প্রক্রিয়ার পর গত বছরই ব্রেক্সিট কার্যকর হয়েছে৷ দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর করে ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে গেছে৷ কিন্তু সেই বিচ্ছেদের কালো ছায়া আবার নতুন করে সংঘাতের কারণ হয়ে উঠছে৷ কারণ উত্তর আয়ারল্যান্ড৷ ইইউ সদস্য দেশ আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে ব্রিটেনের একমাত্র স্থলসীমান্তে নিয়ন্ত্রণ এড়াতে ব্রেক্সিট চুক্তির মধ্যে বিশেষ ‘নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড প্রোটোকল' নামের এক ধারা রাখা হয়েছিল৷ এর আওতায় ব্রিটেনের সেই প্রদেশে ইইউ-র শুল্ক ও একক বাজারের নিয়ম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে৷ বিভক্ত আইরিশ ভূখণ্ডের দুই অংশের মধ্যে শান্তি বজায় রাখতেই এমন ব্যবস্থা স্থির করা হয়েছিল৷ ফলে উত্তর আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে ব্রিটেনের বাকি অংশের মধ্যে কার্যত নতুন এক সীমা সৃষ্টি হয়েছে৷
ব্রেক্সিট চুক্তি স্বাক্ষরের সময় সেই ধারাকে ব্রিটেনের বড় সাফল্য হিসেবে তুলে ধরলেও এখন বেঁকে বসেছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন৷ তিনি নতুন করে দরকষাকষি করতে ইইউ-র উপর চাপ সৃষ্টি করছেন৷
বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন এবং জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে জনসন আবেদন-নিবেদন থেকে শুরু করে হুমকিও দিয়েছেন৷ ফন ডেয়ার লাইয়েন নতুন করে ‘নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড প্রোটোকল'-এ কোনোরকম পরিবর্তনের সম্ভাবনা সরাসরি নাকচ করে দিয়েছেন৷ তবে সেই চুক্তির কাঠামোর মধ্যে ‘সৃজনশীল' ও ‘নমনীয়' কোনো সমাধানসূত্র নিয়ে আলোচনা করতে তাঁর আপত্তি নেই৷ তিনি উত্তর আয়ারল্যান্ডে স্থিতিশীলতার স্বার্থে এবং অনিশ্চয়তা এড়াতে উভয় পক্ষের অঙ্গীকারের উপর জোর দেন৷
বরিস জনসনের সরকার বুধবার ‘নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড প্রোটোকল'-এ পরিবর্তনের কিছু প্রস্তাব মেনে নেবার জন্য ব্রাসেলসের উদ্দেশ্যে ডাক দিয়েছিল৷ ব্রেক্সিটের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী ডেভিড ফ্রস্ট বলেন, বর্তমান বিধিনিয়মের কারণে উত্তর আয়ারল্যান্ডে শান্তি হুমকির মুখে পড়েছে৷ তাই ন্যায্য ও বাস্তবসম্মত সমাধানসূত্রের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে৷ তিনি প্রোটোকলের কিছু নিয়ম স্থগিত রেখে ‘চূড়ান্ত' বোঝাপড়ার পক্ষে সওয়াল করেছেন৷
গোটা ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ার সময় বরিস জনসন একাধিক বার বোঝাপড়ার শর্ত খেলাপ করে ব্রাসেলসে আস্থা হারিয়েছেন৷ সে কারণে ইইউ বাধ্য হয়ে ব্রিটেনের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছে৷ ‘নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড প্রোটোকল'-কে ঘিরে নতুন সংঘাতের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷ ব্রাসেলস মনে করিয়ে দিয়েছে, যে ব্রিটেন এখনো এই চুক্তির সব শর্ত কার্যকর না করে বোঝাপড়া খেলাপ করছে৷ সে দেশ আবার একতরফা পদক্ষেপ নিলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটতে পারে৷
ইইউ আলোচনার দরজা একেবারে বন্ধ করে দিচ্ছে না৷ এক ইইউ মুখপাত্র বলেন, ব্রেক্সিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মারোস সেফকোভিচ ডেভিড ফ্রস্টের সঙ্গে কথা বলতে আগ্রহী৷ এখনো অবশ্য আলোচনার দিনক্ষণ স্থির হয় নি৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, এপি)