1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ব্রিটেন ও ইউরোপের মধ্যে বচসা তুঙ্গে

২১ মে ২০২০

ব্রিটেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে বোঝাপড়ার সম্ভাবনা কমার সঙ্গে সঙ্গে উত্তেজনাও বাড়ছে৷ দুই শীর্ষ প্রতিনিধির মধ্যে মতোবিরোধ নিয়ে চিঠি চালাচালি চলছে৷

https://p.dw.com/p/3cZZi
ফাইল ফটোছবি: picture-alliance/dpa/K. O'Connor

ব্রেক্সিট-পরবর্তী দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্থির করতে তৃতীয় দফার আলোচনাও ব্যর্থ হবার পর ব্রিটেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়ে গেছে৷ কূটনৈতিক শিষ্টাচারের বদলে খোলা চিঠির মাধ্যমে একে অপরকে দোষারোপ করছে দুই পক্ষ৷ ব্রিটেনের ব্রেক্সিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ডেভিড ফ্রস্ট এক চিঠিতে ইইউ-র বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ এনেছেন৷ ইইউ-র প্রধান মধ্যস্থতাকারী মিশেল বার্নিয়ে পালটা চিঠিতে ব্রিটেনকে এমন মনোভাব সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছেন৷

ব্রিটেন মঙ্গলবার ইইউ-র বিরুদ্ধে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির ক্ষেত্রে ‘বাড়তি, ভারসাম্যহীন ও অভূতপূর্ব' দাবির অভিযোগ করেছিল৷ ডেভিড ফ্রস্ট এই চিঠির সঙ্গে চুক্তির এক খসড়া প্রকাশ করেন৷ তিনি এ প্রসঙ্গে অন্যান্য দেশের সঙ্গে ইইউ-র বাণিজ্য চুক্তির কিছু অংশ তুলে ধরে দাবি করেন, যে ইইউ ব্রিটেনকে একই রকম সুবিধা দিতে রাজি নয়৷ ব্রিটেন কেন একইরকম সুবিধা পাবার যোগ্য নয়, সেই প্রশ্ন তোলেন ফ্রস্ট৷ তাঁর মতে, দুই ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সহযোগীর মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য সম্পর্কের বদলে ‘নিম্ন মানের' এক বাণিজ্য চুক্তির প্রস্তাব রেখেছে ইইউ৷

ইইউ শুরু থেকেই ভৌগলিক অবস্থানের প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করে ভবিষ্যৎ সম্পর্কের কাঠামোর কিছু পূর্বশর্ত স্থির করেছে৷ ব্রিটেন ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হবার কারণে ইইউ নিজস্ব স্বার্থ রক্ষা করতে কিছু বাড়তি রক্ষাকবচ স্থির করেছে৷

বার্নিয়ে তাঁর চিঠিতে ব্রিটেনের আচরণের কড়া সমালোচনা করেন৷ তাঁর মতে, আলোচনার মাধ্যমে বিরোধ মেটানোর বদলে চিঠির মাধ্যমে তর্জনগর্জন করলে আখেরে কোনো লাভ হবে না৷ বিশেষ করে ফ্রস্ট যে সুরে অভিযোগ পেশ করেছেন, তা পারস্পরিক আস্থা ও গঠনমূলক মনোভাবের পরিপন্থি৷ বার্নিয়ে তিন পৃষ্ঠার চিঠিতে ফ্রস্টের প্রতিটি অভিযোগের আলাদা করে জবাব দেন৷ তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে ব্রিটেনকে নিজ দায়িত্বে বিভিন্ন সম্ভাবনার মধ্যে কোনো একটিকে বেছে নিতে হবে৷ অন্য দেশ যে সব সুবিধা পেয়েছে, ব্রিটেন ‘স্বয়ংক্রিয়ভাবে' সে সব সুবিধার দাবি করতে পারে না৷ বার্নিয়ে আরও মনে করিয়ে দেন, যে ব্রিটেন ও ইইউ-র শীর্ষ নেতারা ভবিষ্যৎ সম্পর্কের রূপরেখা হিসেবে যে রাজনৈতিক ঘোষণাপত্র স্বাক্ষর করেছিলেন, ইইউ পুরোপুরি তার ভিত্তিতেই ব্রিটেনের সঙ্গে আলোচনা করছে৷

তথাকথিত ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড' বা প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে বৈষম্য এড়ানোর বিষয়টিকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে মতবিরোধ প্রকট হয়ে উঠছে৷ ব্রিটেন ইইউ ত্যাগ করার প্রধান সুবিধা হিসেবে অন্যান্য দেশের সঙ্গে স্বাধীনভাবে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে৷ ইইউ-র সঙ্গেও নিজস্ব সুবিধা অনুযায়ী বাণিজ্যিক চুক্তি চায় বরিস জনসনের সরকার৷ অন্যদিকে ইইউ বাণিজ্য চুক্তির শর্ত হিসেবে নিজস্ব অভ্যন্তরীণ বাজার অটুট রাখতে কিছু রক্ষাকবচ নিশ্চিত করতে চাইছে৷ ইইউ-র বাজারের নাগাল পেতে হলে ব্রিটেনকে শ্রম, পরিবেশ ইত্যাদি মানদণ্ড মেনে চলতে হবে এবং বেশ কিছু বিধিনিয়মও স্বীকার করতে হবে৷ অর্থাৎ ব্রিটেন দুই নৌকায় পা রেখে এগোতে পারবে না, এমনটাই নিশ্চিত করতে চাইছে ইইউ৷ চলতি বছর দুই পক্ষের মধ্যে বোঝাপড়া না হলে ২০২১ সালের ১লা জানুয়ারি থেকে ব্রিটেন বিশেষ সুবিধা হারিয়ে বিশ্বের বাকি দেশের মতো ইইউ-র সঙ্গে বাণিজ্য করতে বাধ্য হবে৷

এসবি/কেএম (ডিপিএ, এএফপি)