ইতিহাস যেখানে জীবন্ত
২৮ জানুয়ারি ২০১৬সেলিং করতে এসে ব্যার্ন্ড হেলমার্স হাফেল নদীর তীরে অবস্থিত ব্রান্ডেনবুর্গ শহরকে আবিষ্কার করেন৷ স্থির করেন, এখানেই বসবাস করবেন৷ একটি ওয়াটার স্পোর্টস সেন্টার খুলে এখানেই থেকে যান তিনি৷ তাঁর ওয়াটার স্পোর্টস সেন্টারে সেলিং বোটও ভাড়া পাওয়া যায়৷ ব্যার্ন্ড বলেন, ‘‘২০ বছরের বেশি ধরে আমি হাফেল নদীর তীরে ব্রান্ডেনবুর্গ শহরে বাস করছি৷ এ শহরের মজাই হলো এই যে, শহরটা নদী দিয়ে ঘেরা, চারপাশে অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্য – সেই সঙ্গে একটা ছোট শহরের যত সুযোগসুবিধা: ভালো অবকাঠামো, সরকারি পরিবহণের মাধ্যমে পটসডাম, বার্লিন ইত্যাদি বড় বড় শহরের সঙ্গে যোগাযোগ৷ এ সবের ফলে এখানকার জীবন খুব সুন্দর৷''
ব্রান্ডেনবুর্গ ক্যাথিড্রাল
নদী থেকে ব্রান্ডেনবুর্গ খুব ভালো দেখা যায়, তা সে লঞ্চ, কানু কিংবা হাউসবোট, যা থেকেই হোক না কেন৷ হাফেল নদী প্রায় ২০ কিলোমিটার জুড়ে শহরটাকে ঘিরে রেখেছে৷ ব্রান্ডেনবুর্গ ক্যাথিড্রালটি একটি দ্বীপের উপর দাঁড়িয়ে৷ ক্যাথিড্রালটি টুরিস্টদের কাছে বড় আকর্ষণ৷ ক্যাথিড্রালটি ব্রান্ডেনবুর্গ প্রদেশের প্রাচীনতম গির্জাগুলির মধ্যে পড়ে৷
২০১৫ ছিল উৎসবের বছর, কেননা এ-বছর ব্রান্ডেনবুর্গ ক্যাথিড্রাল ৮৫০ বছরে পা দেয়৷ অক্টোবর পর্যন্ত প্রায় আড়াইশ কনসার্ট, প্রার্থনাসভা, প্রদর্শনী ইত্যাদির আয়োজন করা হয়েছিল৷ ব্যার্ন্ড জানালেন, ‘‘আমার পরামর্শ হলো, ব্রান্ডেনবুর্গ ক্যাথিড্রালটা দেখে যাবেন৷ এ বছর ৮৫০ বছরে পা দিচ্ছে, গোটা এলাকার সাংস্কৃতিক কেন্দ্র বলে পরিচিত এই ক্যাথিড্রাল৷ এখান থেকেই মার্ক ব্রান্ডেনবুর্গ পত্তন করা হয়েছিল৷ গির্জাটা একটা ছোট দ্বীপের ওপর অবস্থিত, যার চারধার দিয়ে হাফেল নদীর শাখা বয়ে যাচ্ছে৷ একটা পুরনো দুর্গের ভিতের ওপর গির্জাটা তৈরি করা হয়েছে৷''
গির্জার চারপাশে সে আমলের স্লাভ জেলেদের একটা গ্রাম ছিল৷ সেটাই আজ ব্রান্ডেনবুর্গ শহরের সবচেয়ে পুরনো এলাকা৷ ব্যার্ন্ড বলেন, ‘‘আমার কাছে এই ক্যাথিড্রালের দ্বীপটা হলো শহরের সবচেয়ে সুন্দর এলাকাগুলির মধ্যে একটি৷ কেননা এখানে ছোট ছোট, সুন্দর বাড়িঘরগুলো ছাড়াও প্রচুর গাছপালা আছে৷ বেশ একটা শান্তির অনুভূতি, চারপাশ সত্যিই সুন্দর৷''
শিল্প সংগ্রহশালা
শহরের কেন্দ্রে আরো একটি দর্শনীয় বস্তু আছে৷ সেটা হলো শিল্প সংগ্রহশালা৷ এখানে ১৯১৪ সাল থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত, অর্থাৎ প্রায় এক শতাব্দী ধরে ইস্পাত তৈরি করা হত৷ সাবেক পূর্ব জার্মানির বৃহত্তম ইস্পাত কারখানা ছিল এখানে৷ ব্যার্ন্ড জানালেন, ‘‘ব্রান্ডেনবুর্গের একটা হাইলাইট হলো এই শিল্প সংগ্রহশালা৷ ব্রান্ডেনবুর্গ শহরের ইতিহাস যেন এখানে জীবন্ত হয়ে ওঠে৷ ব্রান্ডেনবুর্গ এককালে ১ লক্ষ ২০ হাজার অধিবাসীর ইস্পাতনগরী ছিল৷ মানুষজনের অধিকাংশ ইস্পাতের কারখানায় কাজ করতেন৷ এ সব দেখে আজও বোঝা যায়, ইস্পাতকর্মীদের কাজটা কত শক্ত ছিল৷''
সবশেষে শহরের উচ্চতম স্থান: মারিয়েনব্যার্গ পাহাড়ের ওপর ফ্রিডেন্সভার্টে টাওয়ার৷ তৈরি হয়েছিল ১৯৭৪ সালে৷ মারিয়েনব্যার্গ আর ফ্রিডেন্সভার্টে মিলিয়ে প্রায় একশ মিটার উঁচু ওপর থেকে দেখা দৃশ্যটা যেন ব্রান্ডেনবুর্গের একটা প্যানোরামা৷