ফিরলো সোনার ছেলেরা
১৬ জুলাই ২০১৪বাস্তিয়ান শোয়াইন্সটাইগার প্রিয় পতাকা গায়ে জড়িয়ে ছিলেন পুরোটা সময়৷ ব্রান্ডেনবুর্গ গেটের সামনে মঙ্গলবার অপেক্ষমান অসংখ্য ফুটবল ভক্তের সামনে তিনি স্মরণ করেন ২০০৬ সালের কথা৷ সেবার জার্মানিতে আয়োজন করা হয় বিশ্বকাপের৷ কিন্তু বিশ্বকাপ জয় করা হয়নি জার্মানদের৷ সেই খেদ এবার মিটেছে৷ তাই জার্মান দলের এই সহ-অধিনায়কের মন্তব্য, ‘‘আমরা এবার কাপ নিয়ে ফিরেছি৷''
জার্মান দলের অধিনায়ক ফিলিপ লাম ভক্তদের সামনে হাজির হন বিশ্বকাপ হাতে৷ এই কাপ জয়ের স্বপ্ন নাকি তিনি দেখেছিলেন সেই ছোটবেলায়৷ তিনি বলেন, ‘‘১৯৯০ সালের বিশ্বকাপের কথা মনে পড়ে আমার৷ সেসময় (তখনকার অধিনায়ক) লোথার ম্যাথিউস কাপ তুলে ধরেছিলেন৷''
চতুর্থবার বিশ্বকাপ বিজয়ী জার্মান দলকে অভ্যর্থনা জানাতে বার্লিনকেই বেছে নেয় জার্মান ফুটবল ফেডারেশন ডিএফবি৷ ফাইনালের আগেই শুরু হয়ে গিয়েছিল প্রস্তুতি৷ মঙ্গলবার তাই পাঁচ লাখ মানুষের ধারণক্ষমতা সম্পন্ন ব্রান্ডেনবুর্গ গেটের সামনের অংশটি কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় সকালেই৷ একপর্যায়ে সেখানে প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপে বাধ্য হয় বার্লিনের পুলিশ৷
জার্মান ফুটবল ভক্তরা বিজয়ী দলকে সংবর্ধনা দিতে আসেন জাতীয় দলের জার্সির আদলে তৈরি জার্সি গায়ে৷ কেউ কেউ আবার ইতোমধ্যে চার তারকা বিশিষ্ট জার্সিও যোগাড় করে ফেলেছেন৷ আসলে আডিডাস অল্প কিছু জার্সি তৈরি করেছিল, যাতে চারবার বিশ্বকাপ জয়ের বিষয়টি ছিল৷ এবার সেই জয় নিশ্চিত হওয়ায় আরো দশ মিলিয়ন নতুন জার্সি তৈরির ঘোষণা দিয়েছে ব্রান্ডটি৷ চীনে তৈরি হবে এ সব জার্সি৷
‘এটা তোমারও শিরোপা'
বার্লিনের ভক্তদের ভিড় দেখে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা৷ কোচ ইওয়াখিম ল্যোভ সমবেত জনতার উদ্দেশে বলেন, ‘‘তোমাদের ছাড়া, আমরা আজ এখানে পৌঁছাতে পারতাম না৷ তাই আমরা সবাই বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন৷''
ল্যোভের বক্তব্যের পর জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা আলাদা আলাদা গ্রুপে স্টেজে আসতে শুরু করেন৷ স্টেজ থেকে তাঁরা বলসহ বিভিন্ন উপহার সামগ্রী ছুড়ে দিয়েছেন ভক্তদের উদ্দেশ্যে৷ বলাবাহুল্য ভক্তদের খুব অল্প অংশই এ সব উপহার পেয়েছেন৷
জাতীয় দলের রক্ষণভাগের খেলোয়াড় জেরোম বোয়াটেং ভক্তদের উদ্দেশ্যে চিৎকার করে বলেন, ‘‘হ্যালো বার্লিন৷'' এরপর তিনি এমন ভাব করেন যে ভক্তদের উত্তর শুনতে পাননি৷ সবশেষে বোয়াটেং বলেন, ‘‘আমি বার্লিনের হওয়ার গর্ব বোধ করছি৷''
নিজের ব্যক্তিগত টুইটার অ্যাকাউন্টে একটি ছবিও শেয়ার করেছেন বোয়াটেং৷ এতে তাঁর সঙ্গে আছেন জাতীয় দলের অপর তারকা মেসুট ও্যজিল:
অন্যদিকে পোডোলস্কি শেয়ার করেছেন জার্মানির মাটিতে বিশ্বকাপের ছবি:
ডয়চে ভেলের হাতে বিশ্বকাপ
এর আগে মঙ্গলবার সকালে চার তারকা চিহ্নিত বিশেষ বিমানে বার্লিনে পৌঁছান জাতীয় দল৷ বিমান থেকে প্রথমে বেরিয়ে আসেন অধিনায়ক ফিলিপ লাম৷ এরপরই পতাকা জড়ানো শোয়াইন্সটাইগার বেরিয়ে আসেন৷ তাঁদের অনুসরণ করেন জাতীয় দলের অন্যান্য খেলোয়াড়রা৷ বিশ্বকাপ বহন করা এই বিমানে ছিলেন ডয়চে ভেলের ক্রীড়া প্রতিবেদক ইওশা ভেবার৷ ফিরতি উড়ালে কিছুক্ষণ বিশ্বকাপটি বহনের সুযোগও পান তিনি:
বিমানে ছবি তোলা থেকে বিরত ছিলেন না ফুটবলাররাও৷ চ্যান্সেলর ম্যার্কেলের সঙ্গে সেল্ফি তুলে আলোচিত লুকাস পোডলস্কি টুইটারে পোস্ট করেন ‘ক্যাপ্টেন পোডোলস্কির' ছবি:
অন্যদিকে সেরা গোলরক্ষক মানুয়েল নয়ার বিশ্বকাপ নিয়ে হাজির হন বিমানের ককপিটে৷ সেখানে ছবি তোলার পর বিমানে থাকতেই টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘‘বার্লিন, আমরা আসছি! এই মুহূর্তে প্যারিসের উপরে রয়েছি৷ আর বেশিক্ষণ লাগবে না৷''
উল্লেখ্য, বিশ্বকাপ ফাইনালে আর্জেন্টিনাকে ১-০ গোলে হারায় জার্মানি৷ চতুর্থবার বিশ্বকাপ জয় করতে তাদের অপেক্ষা করতে হয়েছে ২৪ বছর৷