বিশ্বকাপ জেতার আনন্দ রূপ নিলো দাঙ্গায়
১৬ জুলাই ২০১৮অতি উৎসাহী এবং উচ্ছৃঙ্খল কিছু মানুষ বিভিন্ন ভবনের জানালা ভেঙে ফেলে৷ কিছু দোকানে লুটপাটও চালিয়েছে তারা৷
খেলা শেষ হওয়ার সাথে সাথে ফ্রান্সের জাতীয় পতাকার রঙে রঙিন হয়ে ওঠে আইফেল টাওয়ার৷ সেনে ভেসে উঠছিল ১৯৯৮ এবং ২০১৮, যে দুই সালে ফ্রান্স বিশ্বকাপ জিতেছে৷ বিশ্বকাপ জয়ের উন্মাদনা এত বেশি ছিল যে,অনেকে নগ্ন হয়ে কেবল পতাকা শরীরে জড়িয়ে ছিলেন৷ বিভিন্ন জায়গায় স্মোক বোমা ছোড়া হয়েছিল, যা থেকে ছড়িয়ে পড়ছিল ফ্রান্সের পতাকার তিনটি রঙ৷ গাড়িতে বাজছিল হর্ন আর পতাকা হাতে অনেকেই নেমে পড়েছিলেন রাস্তায়৷ কেবল প্যারিস নয়, পুরো ফ্রান্স জুড়েই ছড়িয়ে পড়েছিল উন্মাদনা৷
খেলা দেখার সময় কিশোর ও তরুণদের সবচেয়ে পছন্দের জায়গা ছিল শঁজেলিজে৷ ফ্রান্স ক্রোয়েশিয়াকে ৪-২ গোলে পরাজিত করার পর সেখানে তরুণদের ভিড় আরো বাড়তে থাকে৷ এক পর্যায়ে প্রায় ৯০ হাজার তরুণ-কিশোর-কিশোরী জড়ো হন সেখানে৷
তাদের মধ্যে একজন ১৯ বছরের গোফ্রি হ্যামশিক বললেন, ‘‘গত কয়েক বছর ধরে ফ্রান্স অনেক ধরনের সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যেমন সন্ত্রাসী হামলা৷ কিন্তু এই একটা জিনিস আমাদের সবাইকে এক করেছে৷ এই দেশে ভিন্ন ধরনের সংস্কৃতির মানুষ রয়েছে৷ কিন্তু ফুটবলে কোনো ধর্ম নেই, ভেদাভেদ নেই৷ তাই এটা সবার মধ্যে ভালো একটা অনুভূতি ছড়িয়ে দেয়৷''
সবকিছু ভালোই চলছিল৷ কিন্তু এক পর্যায়ে অতি উৎসাহী কিছু তরুণ বেশ কয়েকটি দোকানের কাঁচ ভাঙা শুরু করে, বিভিন্ন ভবনের দিকে বোতল ছুড়তে থাকে, আশেপাশে থাকা অস্থায়ী বেড়াগুলো ভেঙে ফেলে৷ তাই মধ্যরাতে এলাকাটি হঠাৎ করেই রণক্ষেত্রে রূপ নেয়৷
ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় ৪ হাজার পুলিশ৷ জলকামান আর কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে৷
আগামী কয়েকদিন ধরে ফ্রান্সে এই উন্মাদনা অব্যাহত থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ আজ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট ভবন এলিজে প্রাসাদে চ্যাম্পিয়ন দলটিকে সংবর্ধনা দেবেন প্রেসিডেন্ট মাঁক্রো৷
তবে ফ্রান্স বিশ্বকাপ জিতলেও ক্রোয়েশিয়া কিন্তু ফুটবল ভক্তদের হৃদয় জয় করে নিয়েছে৷ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেটা সবচেয়ে বেশি প্রতিফলিত হয়েছে৷
এপিবি/এসিবি (এপি, এএফপি, রয়টার্স)