বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের পরামর্শ
১ মে ২০২০কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার বলেন, ‘‘বাংলাদেশে জরুরি ভিত্তিতে একটি জাতীয় কমিটি গঠন করতে হবে। কোনো দলের পরিচয় নিয়ে নয়, বরং রোগবিস্তার সম্পর্কে জানেন, আন্তর্জাতিক বিষয়ে অভিজ্ঞ, চিকিৎসক, সমাজবিদ ও অর্থনীতিবিদরা ওই কমিটির সদস্য হবেন এবং দলমত নির্বিশেষে সবাই ওই কমিটিকে সমর্থন করবেন। ওই কমিটির নেতৃত্বেই মহামারি নিয়ন্ত্রণ এবং আগামী দিনে যে ভয়াবহ অর্থনৈতিক বিপর্যয় নেমে আসার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে, আলোচনার মাধ্যমে তা মোকাবেলা পথ বের করতে হবে।
‘‘একটি দেশে যদি একজন ব্যক্তির হাতে সমস্ত নিয়ন্ত্রণ এবং সব ক্ষমতা থাকে, সেই জাতির মুক্তির সম্ভবনা নাই। এ অবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে এবং সমাজে নানা বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের সামনে নিয়ে এসে তাদের ভূমিকা পালন করতে দিতে হবে।”
এ বিষয়ে টিভি টুডে-র এডিটর-ইন-চিফ, বিশিষ্ট সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, ‘‘বর্তমান সংকটটি শুধু স্বাস্থ্য সংকট নয়, বরং সর্বব্যাপী সংকট। আমি মনে করি, প্রথমত আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর নজর দিতে হবে। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে ব্যাপক পরীক্ষা করতে হবে এবং আক্রান্তদের চিকিৎসায় গুরুত্ব দিতে হবে। তাবে এটা করতে গিয়ে সাধারণ মানুষকে সাধারণ স্বাস্থ্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। দুটিকে একসঙ্গে চালিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
‘‘দ্বিতীয়ত, দরিদ্রতার কারণে অনাহারে ও অপুষ্টিতে ভোগা মানুষদের জন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করে ধারাবাহিকভাবে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। রাতারাতি ঘোষণা দিয়ে গার্মেন্টস কারখানা চালু করা বা লকডাউন তুলে নেওয়া অবিবেচনা হবে। বরং ধারাবাহিকভাবে যেসব এলাকায় বা যেসব সেক্টরে স্বাভাবিক কাজকর্ম শুরু করলে আমরা সফল হতে পারবো, সেসব জায়গা সচল করতে হবে। সর্বমহল যেন এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সেটাও বিবেচনায় নিতে হবে।’’
করোনা সংকটকালের শুরুর দিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নানা সমন্বয়হীনতার কথা মনে করিয়ে দিয়ে এই বক্তা আরো বলেন, ‘‘কোভিড-১৯ রোগটি পুরো বিশ্বের জন্যই নতুন। আমাদের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর শুরুতে বলেছিল তারা রোগ মোকাবেলায় সম্পূর্ণ প্রস্তুত। অথচ তারা এটাই জানতো না যে, রোগটি মারাত্মক ছোঁয়াচে এবং সাধারণ হাসপাতালে এর চিকিৎসা সম্ভব নয়৷’’
আগামী ৩ মে ‘ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে’। আরএসএফ, আইপিআই এবং সিপিজে-র মতো নানা আন্তর্জাতিক সংস্থার দেওয়া তথ্যানুযায়ী, গত কয়েকমাসে করোনা ভাইরাস নিয়ে রিপোর্ট করার কারণে সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বা নানা হুমকি দেওয়া হয়েছে। চীন, ইরান এবং আফ্রিকা ও ল্যাটিন অ্যামেরিকার কয়েকটি দেশ থেকে এ ধরনের খবর এসেছে।
বাংলাদেশেও করোনা সংকটকালে ত্রাণ চুরিসহ নানা বিষয়ে খবর প্রকাশের কারণে বেশ কয়েকজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা হয়েছে। উভয় বক্তাই এ আইনকে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতাবিরোধী মনে করেন এবং তারা আরো মনে করেন, সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ করতে এর ব্যাপক অপপ্রয়োগ হয়।
এসএনএল/এসিবি