বিবাহবিচ্ছেদ আইন
বাংলাদেশে দিন দিন বিবাহবিচ্ছেদ বাড়ছে৷ বাংলাদেশে বসবাসকারী বিভিন্ন ধর্মের নাগরিকরা আইন অনুযায়ী কীভাবে বিবাহবিচ্ছেদ করতে পারেন, সেই তথ্য থাকছে ছবিঘরে৷
ইসলাম
১৯৭৪ সালের মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রেশন আইন অনুযায়ী, কাজীর মাধ্যমে তালাক দিতে হবে এবং তালাকের নোটিশ স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে অথবা স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে এবং স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা কিংবা সিটি কর্পোরেশনকে পাঠাতে হবে৷ মুখে তালাক দিলে সেটি কার্যকর হবে না৷
স্বামী-স্ত্রীর অধিকার সমান নয়
স্বামী কোনো কারণ ছাড়া স্ত্রীকে তালাক দিতে পারলেও, স্ত্রী সেটা করতে পারেন না৷ এর জন্য আইনে কতগুলো কারণ উল্লেখ আছে৷ শুধুমাত্র সেসব কারণেই স্ত্রী স্বামীকে তালাক দিতে পারেন৷
কয়েকটি কারণ
স্বামী চার বছর ধরে নিরুদ্দেশ থাকলে, দুই বছর স্ত্রীর ভরণপোষণ না দিলে বা ব্যর্থ হলে, একাধিক স্ত্রী গ্রহণ করলে, সাত বছরের বেশি কারাদণ্ড পেলে, যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া তিন বছর ধরে দাম্পত্য দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে, বিয়ের সময় স্বামী পুরুষত্বহীন থাকলে, দুই বছর ধরে অপ্রকৃতিস্থ থাকলে অথবা কুষ্ঠ ব্যাধিগ্রস্থ বা মারাত্মক যৌনরোগে আক্রান্ত থাকলে৷ বাকি কারণগুলো জানতে উপরে (+) বাটনে চাপ দিন৷
হিল্লা বিয়ে নিষিদ্ধ
একটা সময় ছিল যখন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তালাক হয়ে যাওয়ার পর তাঁরা আবার বিয়ে করতে চাইলে, স্ত্রীকে আগে হিল্লা বিয়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হত৷ এক্ষেত্রে দ্বিতীয় বিয়ের ব্যক্তি (স্বামী) স্ত্রীকে তালাক দিলে বা মারা গেলে স্ত্রী পুনরায় প্রথম স্বামীকে বিয়ে করতে পারতেন৷ মধ্যবর্তীকালীন এই বিয়ের নামই হচ্ছে ‘হিল্লা’ বিয়ে৷ তবে বর্তমানে এটি নিষিদ্ধ৷
হিন্দু ধর্ম
সনাতন হিন্দু আইনে সরাসরি বিবাহবিচ্ছেদের কোনো বিধান নেই৷ তবে ভারতে ১৯৫৫ সালের হিন্দু বিবাহ আইনে কয়েকটি বিশেষ ক্ষেত্রে আনা অভিযোগ প্রমাণ হলে বিবাহবিচ্ছেদ সম্ভব৷ এছাড়া ‘স্পেশ্যাল ম্যারেজ অ্যাক্ট’ অনুযায়ীও ডিভোর্স সম্ভব৷ তবে বাংলাদেশে এ সব আইন প্রযোজ্য নয়৷ স্ত্রী যদি একান্তই স্বামীর সঙ্গে থাকতে না চান তাহলে তিনি অন্য কোথাও আলাদা থাকতে পারেন৷ এক্ষেত্রে স্ত্রী স্বামীর কাছ থেকে খোরপোশ পাওয়ার অধিকারী৷
খ্রিষ্টান ধর্ম
বাংলাদেশে এক্ষেত্রে ১৮৬৯ সালের ‘ক্রিশ্চিয়ান ডিভোর্স অ্যাক্ট’ মানা হয়৷ তবে ক্যাথলিকরা এই আইনের মাধ্যমে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটাতে পারেন না, কারণ ক্যাথলিকরা বিবাহবিচ্ছেদ মানেন না৷ তবে প্রোটেস্ট্যান্টরা এই আইনের আওচায় বিবাহবিচ্ছেদ করে থাকেন৷ এই আইনে অবশ্য বিবাহবিচ্ছেদের ক্ষেত্রে স্ত্রীকে স্বামীর মতো সমতা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে৷