1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুন্ন হয়নি’

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৪ মার্চ ২০২০

আওয়ামী লীগ নেতাকে দুর্নীতির মামলায় জামিন না দেয়ায় বিচারককে তাৎক্ষণিক প্রত্যাহার এবং নতুন বিচারক দিয়ে জামিন দেয়ার ঘটনায় বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুন্ন হয়নি বলে দাবি করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক৷

https://p.dw.com/p/3Yquy
Bangladesch Dhaka - Anisul Huq - Justiz und Parlamentsminister in Bangladesch
ছবি: Privat

প্রত্যাহার হওয়া ওই বিচারকের বিরুদ্ধে পিরোজপুর জেলা আইনজীবী সমিতির আনা ‘আরো অনেক অভিযোগের' তদন্ত হবে বলেও ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন তিনি৷

আইনমন্ত্রী দাবি করেন, ‘‘ওই বিচারকের চরম দুর্ব্যবহারের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে তাঁকে তাৎক্ষণিক প্রত্যাহার করে জামিন রিকল করে আওয়ামী লীগ নেতাকে জামিন দেয়া হয়৷ জামিন রিকল করার বিধানতো আছে৷' তবে জামিন দেয়া, না দেয়া আদালতের এখতিয়ার বলেও জানান তিনি৷
যা ঘটেছে

দুর্নীতির মামলায় মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে পিরোজপুর জেলা ও দায়রা জজ আব্দুল মান্নান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল আউয়াল এবং তাঁর স্ত্রীকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন৷ এর পরপরই তাঁকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার করে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়৷ বিকেলে যুগ্ম জেলা জজ নাহিদ নাসরিনের আদালত থেকে জামিন রিকলের মাধ্যমে তাঁরা জামিন পান৷ আর এই সময়ের মধ্যে বিচারক প্রত্যাহার ছাড়াও পিরোজপুরে আওয়ামী লীগ নেতার পক্ষে বিক্ষোভ এবং সড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটে৷

বিচারককে তাৎক্ষণিক প্রত্যাহারের মাধ্যমে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুন্ন করা হয়েছে: ইউনূস আলী আকন্দ

প্রতিক্রিয়া

বুধবার হাইকোর্ট ওই বিচারককে প্রত্যাহার কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন৷ আইনজীবী ইউনূস আলী আকন্দ বিষয়টি বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চর নজরে আনলে তাঁরা স্বপ্রণোদিত হয়ে এই রুল জারি করেন৷ ১১ মার্চের মধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবকে রুলের জবাব দিতে বলেছেন আদালত৷

আইনজীবী ইউনূস আলী আকন্দ বলেন, ‘‘ওই বিচারককে তাৎক্ষণিক প্রত্যাহারের মাধ্যমে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুন্ন করা হয়েছে৷ বিচার বিভাগকে হুমকির মুখে ঠেলে দেয়া হয়েছে৷ এটা সংবিধানের স্পষ্ট লঙ্ঘন৷ আগে আমরা জানতাম হাকিম নড়েতো হুকুম নড়েনা৷ এবার আমরা দেখলাম হাকিমও নড়ল, হুকুমও নড়ল৷''

তিনি বলেন, ‘‘সংবিধানের ২২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিচার বিভাগ স্বাধীন৷ নিয়োগ, বদলি, পোস্টিং সব বিচার বিভাগের হাতে৷ এখানে প্রশাসন কোনো হস্তক্ষেপ করতে পারেনা৷ এটা আদালত অবমাননা৷ বিচারক সরিয়ে দিয়ে আরেকজন বিচারক এনে জামিন নেবে এটাতো নজীরবিহীন ঘটনা৷''

এদিকে এই ঘটনাকে বিচার বিভাগের ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ উল্লেখ করে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এবং বিএনপি'র যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন আইনমন্ত্রী এবং দুদক চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি করেছেন৷ 

নিশ্চিত করে বলছি বিচার বিভাগের ওপর কোনো হস্তক্ষেপ করা হয়নি: আইনমন্ত্রী

আইনমন্ত্রীর বক্তব্য

পদত্যাগের দাবি উড়িয়ে দিয়ে আইনমন্ত্রী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সব ফালতু কথার জবাব দেয়ার প্রয়োজন মনে করিনা৷'' তিনি বলেন, ‘‘উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তাকে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই প্রত্যাহার করা হয়েছে৷ আমি নিশ্চিত করে বলছি বিচার বিভাগের ওপর কোনো হস্তক্ষেপ করা হয়নি৷ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুন্ন হয়নি৷ ওনার দুর্ব্যবহার এত খারাপ ছিলো যে তাঁকে প্রত্যাহার না করলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হতো৷ যত অভিযোগই থাকুক না কেন তিনিতো দুর্ব্যবহার করতে পারেন না৷''

এই বিচারকের বিরুদ্ধে ‘আরো অনেক অভিযোগের' ব্যাপারে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী জানান, যেহেতু অভিযোগের তদন্ত হবে তাই আমি সেগুলো প্রকাশ করতে চাইনা৷ পিরোজপুর আইনজীবী সমিতি তাঁর বিরুদ্ধে রেজ্যুলেশন পাস করেছে৷

পিরোজপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এস এম বেলায়েত হোসেন রেজ্যুলেশন পাসের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘‘ওই বিচারক সবসময় আদালতে আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন৷ এছাড়া তিনি জামায়াত শিবিরের লোক সঙ্গে নিয়ে অনুষ্ঠান করেন৷ বাসায় নাচ, গান হয়৷ কিছু অবৈধ নিয়োগও দিয়েছেন তিনি৷''

কিন্তু বিচারকের বিরুদ্ধে জেলা আইনজীবী সমিতির এই রেজ্যুলেশন পাস করা হয় মঙ্গলবার আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল আউয়াল ও তার স্ত্রীকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়ার পর৷ এর ব্যাখ্যায় আইনজীবী সমিতির সভাপতি দাবি করেন, ‘‘জামিন না দেয়ার সাথে আমাদের রেজ্যুলেশন পাসের কোনো সম্পর্ক নাই৷ আমরা সকাল ১০ টায় বসতে চেয়েছিলাম৷ কিন্তু পরিস্থিতির কারণে তখন বসতে পারিনি৷ আমরা দুপুর ১টার পর বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিই৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য