বার্লিনে ফের বারাক ওবামা
ফের জার্মানিতে এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা৷ চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সঙ্গে জার্মানির প্রোটেস্ট্যান্ট চার্চের সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন তিনি৷ সেখানে ম্যার্কেলের ব্যাপক প্রশংসা করেছেন ওবামা৷
সাড়ম্বর স্বাগত
ব্রান্ডেনবুর্গের ফটকে স্থাপিত মঞ্চে যখন ওমামা এসে পৌঁছেন, হাজার হাজার মানুষ তখন তীব্র উচ্ছ্বাসে তাকে স্বাগত জানায়৷ সেখানে ‘চার্চ ডে’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত একটি আলোচনায় সাবেক এই মার্কিন রাষ্ট্রপতি অংশ নেন৷
আঙ্গেলা ম্যার্কেলের প্রচারণা?
সংস্কারের ৫০০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ওবামা এবং ম্যার্কেল পাশাপাশি দাঁড়িয়ে বক্তব্য দেন৷ দেশে-বিদেশে কিভাবে গণতন্ত্রকে সঠিক পথে রাখতে হয় এবং কিভাবে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হয়– এ সম্পর্কে তারা কথা বলেন৷ ম্যার্কেলের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কেউ কেউ এর সমালোচনা করেছেন৷ আগামী সেপ্টেম্বরে জার্মান সংসদ নির্বাচনে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে থাকার প্রচারণায় এই কর্মসূচিকে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে তাদের অভিযোগ৷
বিপুল উপস্থিতি, ব্যাপক নিরাপত্তা
যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের তুলনায় ওবামা জার্মানিতে অনেক বেশি জনপ্রিয়৷ যে হাজার হাজার মানুষ সাবেক এই মার্কিন রাষ্ট্রপতিকে দেখতে এসেছিলেন, তাদের সবাইকে কঠোর নিরাপত্তা তল্লাশির মাঝ দিয়ে যেতে হয়৷ নিরাপত্তায় হেলিকপ্টার টহলেরও ব্যবস্থা ছিল৷ এ ছাড়া স্নাইপাররা আশেপাশের উঁচু ভবনগুলোর ছাদে অবস্থান নেন৷
জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রতিরোধ
অসাধারণ কাজ করার জন্য এ সময় জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের প্রশংসা করেন ওবামা৷ পশ্চিমা অনেক দেশে জাতীয়তাবাদের উত্থান এবং বিদেশি-ভীতি নিয়েও তারা কথা বলেন৷ ওবামা বলেন, এই প্রবণতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে, কারণ, এটা মানবাধিকার লঙ্ঘন, গণতন্ত্রের অবদমন করতে পারে এবং ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সীমিত করে দিতে পারে৷
পরোক্ষ ইঙ্গিতে ট্রাম্প প্রসঙ্গ
উদার গণতন্ত্র ও কূটনীতির প্রয়োজনীয়তা প্রসঙ্গেও কথা বলেন ওবামা৷ ট্রাম্পের বর্তমান নীতির পরিবর্তে ওবামার তৃতীয় মেয়াদই কাম্য ছিল– এমন ইঙ্গিত দেন শ্রোতারা৷ এ সময় ওবামা তাঁর উত্তরাধিকারীর নাম সরাসরি উল্লেখ না করেই বলেন, ‘‘আমরা আমাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে রাখতে পারি না৷ আমরা দেয়ালের আড়ালে লুকোতে পারি না৷’’
মানবতাবাদী ওবামার
পূর্বের বছরগুলোতে ওবামা নিজেকে ধর্মপ্রাণ খ্রিষ্টান হিসাবে দাবি করে আসছিলেন৷ বৃহস্পতিবার উদ্বাস্তু নীতি নিয়ে আলোচনার সময় তিনি বলেন, সীমান্তের অপর পাড়ের প্রতিটি শিশুই সৃষ্টিকর্তার চোখে এ পাড়ের শিশুদের মতো একই রকম ভালোবাসার দাবিদার৷
পুরনো বন্ধু
এ্ই নিয়ে অষ্টমবারের মতো জার্মানিতে এলেন ওবামা৷ প্রথমবার এসেছিলেন ২০০৮ সালে৷ সেবার প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসাবে এসে তিনি দুই লাখ মানুষের সামনে বিদেশনীতি নিয়ে বক্তব্য দিয়েছিলেন৷ মার্কিন নজরদারির বিষয়ে জানাজানির আগে বহু জার্মান তরুণ ছিল রীতিমতো ওবামার প্রেমে মুগ্ধ৷