বার্লিনে গাঁজা ক্যাফে
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৩মোনিকা হ্যারমান বার্লিনের ক্রয়েৎসব্যার্গের মেয়র হিসেবে কাজ শুরু করেছেন গাত আগস্ট মাসে৷ তাঁর কাজের তালিকায় গাঁজা বৈধকরণের ব্যাপারটি বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে৷ জার্মানির সংসদ নির্বাচনের আগে আগে এই বিষয়ে বেশ খানিকটা বিতর্কও তৈরিতে সক্ষম হয়েছেন মেয়র৷ ক্রয়েৎসব্যার্গের গ্যোরলিৎসার পার্ক মাদক বেচা-বিক্রির হাবে পরিণত হয়েছে৷ হ্যারমান মনে করেন, গাঁজা বৈধ করার মাধ্যমে মাদকের অবৈধ বাণিজ্য রোধ করা সম্ভব হবে৷
‘‘আমরা যদি ডিলার এবং তাদের পণ্যের উপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চাই, তাহলে গাঁজা বিতরণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে,'' বলেন সবুজ দলের রাজনীতিবিদ হ্যারমান৷ এই প্রক্রিয়ায় ধীরে ধীরে ডিলারদের ব্যবসা ধ্বংস করা যাবে এবং গাঁজার ব্যবহারও রোধ করা সম্ভব হবে৷
যারা ক্যাফেতে বসে মনের সুখে গাঁজা টানতে আগ্রহী তারা নিশ্চয়ই মেয়রের এই পরিকল্পনায় সন্তুষ্ট হবেন৷ আর মেয়র তো এমন কিছু করছেন না যার নজির বিশ্বের কোথাও নেই৷ পাশের দেশ নেদারল্যান্ডসের রাজধানী আমস্টারডামের ক্যাফেতে ক্যাফেতে বিক্রি হচ্ছে গাঁজা৷ তাহলে বার্লিনে নয় কেন?
মেয়র হ্যারমান অবশ্য নেদারল্যান্ডসের মাদক নীতিকে বার্লিনের জন্য মডেল হিসেবে বিবেচনা করছেন না৷ বরং শহর-চালিত ক্যাফেতে তিনি খদ্দেরদের মাদক সম্পর্কে সচেতন করতে পারেন এমন প্রশিক্ষিত বিক্রয়কর্মী নিয়োগ করতে চান হ্যারমান৷ এতে করে মাদকসেবীদের ‘‘কাউন্সিলিং'' সম্ভব হবে৷
বলাবাহুল্য, গাঁজা বৈধ করার বিষয়টি জার্মানিতে খুব সহজ হবে না৷ এক্ষেত্রে মাদক নীতিতে সংস্কার প্রয়োজন হবে৷ বর্তমান জার্মান আইন অনুযায়ী, গাঁজা কেনা এবং বেঁচা দু'টোই অবৈধ৷ তবে গাঁজা বহনের ক্ষেত্রে নিয়মে খানিকটা ধোঁয়াশা রয়েছে৷ এক্ষেত্রে রাজ্য সরকারগুলোর মধ্যে সীদ্ধান্তে ভিন্নতা আছে৷ বার্লিনে ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ১৫ গ্রাম পর্যন্ত গাঁজা বহন করা অবৈধ নয়৷ অন্যদিকে হামবুর্গ শহর বা নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়া রাজ্যে সর্বোচ্চ ৬ গ্রাম গাঁজা বহন করা বৈধ৷
মেয়র হ্যারমানের গাঁজা বৈধ করার প্রস্তাবে এখন অবধি রাজনৈতিক সমর্থনও খুব একটা পাওয়া যায়নি৷ সামাজিক গণতন্ত্রী, সবুজ দল এবং পাইরেট পার্টি গাঁজা নীতি শিথিল করার পক্ষে হলেও, স্থানীয় রক্ষণশীলরা নিষিধাজ্ঞা বলবৎ রাখতে চান৷ তারা এই সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব পুলিশের উপর ন্যস্ত করার পক্ষে৷