বাভারিয়ায় সরকারি ভবনে ক্রস লাগানো যাবে
২০ ডিসেম্বর ২০২৩বাভারিয়ায় সরকারি প্রশাসনিক ভবনে ঢোকার মুখে ক্রস লাগানো থাকবে। জার্মানির সর্বোচ্চ আদালত এই রায় দিয়েছে।
২০১৮ সালে ক্রিশ্চান সোশ্যাল ইউনিয়ন(সিএসইউ) নেতা ও বাভারিয়ার সেসময়কার প্রশাসনিক প্রধান সব সরকারি ভবনে এই ক্রস লাগানোর সিদ্ধান্ত নেন। তার যুক্তি ছিল, এর ফলে বাভারিয়ার ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক চরিত্রের প্রতিফলন ঘটবে।
অ্যাসোসিয়েশন ফর ফ্রি থিংকিং নামে একটি সংস্থা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে যায়। তাদের দাবি ছিল, রাষ্ট্র ও চার্চের মধ্যে ফারাক রাখতে হবে এবং চার্চ যে সব সুবিধা পায় তা বন্ধ করতে হবে।
তাদের যুক্তি ছিল, এই সিদ্ধান্তের ফলে মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘিত হয়েছে এবং ধর্মীয় বিষয়ে রাজ্যের নিরপেক্ষ থাকার নীতিও মানা হচ্ছে না।
আদালতের মত
আদালত জানিয়েছে, ''এটা নিছক প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত। এর কোনো আইনি প্রতিক্রিয়া নেই। এই সিদ্ধান্ত কারো কোনো অধিকারও ভঙ্গ করছে না।''
আদালত জানিয়েছে, ''কোনো সন্দেহ নেই ক্রস হলো ক্রিশ্চানদের বিশ্বাসের একটা প্রতীক। কিন্তু যারা এই ভবনে আসবেন, তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসে তা আঘাত করবে না। এর কোনো আইনি প্রতিক্রিয়া নেই।''
এই সিদ্ধান্ত যিনি নিয়েছিলেন, সেই মার্কাস সোডার এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, ''ক্রস হলো ক্রিশ্চানদের এবং বাভারিয়ার সংস্কৃতির প্রতীক। এটা বাভারিয়ার অঙ্গ।''
আবেদনকারী সংস্থার কর্তারা জানিয়েছেন, তারা বিষয়টি নিয়ে ফেডারেল সাংবিধানিক আদালতে যাওয়ার কথা ভাবছেন। এটাই জার্মানির সর্বোচ্চ আদালত।
সংগঠনের চেয়ারপার্সন ট্য়ামেলিও বলেছেন, ''এখনই সব শেষ হয়ে যায়নি।''
সরকারি প্রশাসনিক ভবনে ক্রস লাগানোর সিদ্ধান্ত যখন প্রথম নেয়া হয়, তখন প্রোটেস্ট্যান্ট চার্চ এর প্রতিবাদ করেছিল। এমনকী ক্যাথলিক জার্মান বিশপস কনফারেন্সও এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছিল।
চার্চের আশঙ্কা ছিল, সেই বছর বাভারিয়ার নির্বাচনে এই বিষয়টাকে সামনে রেখে সিএসইউ জিততে চাইছে।
তবে মঙ্গলবার আদালতের রায় আসার আগে মিউনিখের আর্চবিশপ জানিয়েছিলেন, তিনি ক্রস লাগানোর সিদ্ধান্ত সমর্থন করেন। বাভারিয়া থেকে ক্রসকে সরিয়ে দেয়া যাবে না।
বাভারিয়া হলো জার্মানির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জনবহুল রাজ্য। এখানে দেশের সবচেয়ে বেশি ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বী মানুষ থাকেন। ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে রাজ্যের ৫৫ শতাংশ মানুষ ক্যাথলিক, ২১ শতাংশ প্রোটেস্ট্যান্ট, ছয় শতাংশ মুসলিম এবং ২০ শতাংশ জানিয়েছিলেন, তারা অন্য ধর্মের বা ধর্ম মানেন না।
জিএইচ/এসজি (ডিপিএ, কেএনএ, এএফপি)