বাংলাদেশে আল জাজিরার ওয়েবসাইট বন্ধ?
২২ মার্চ ২০১৯কাতারভিত্তিক চ্যানেল আল জাজিরার ইংরেজি ওয়েব সাইটট ব্লক করেছে বাংলাদেশ– এমন শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যমটি৷প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করেছেন ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান ও সুইডিশ-বাংলাদেশি সাংবাদিক তাসনিম খলিল৷ তিনজন ব্যক্তির গুম হওয়ার সাথে বাংলাদেশের একজন উর্দ্ধতন নিরাপত্তা ও সামরিক কর্মকর্তার যোগসাজশ নিয়ে বুধবার বিকালে অনু্সন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকেই বেশিরভাগ পাঠক ওয়েবসাইটটিতে ঢুকতে পারছিলেন না বলে শুক্রবারের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়৷
ফেইসবুকে ডয়েচে ভেলের পাঠকরা এ নিয়ে দু ধরনের তথ্যই দিয়েছেন৷ কেউ বলেছেন সাইটটিতে প্রবেশ করতে পারছেন, কেউ জানিয়েছেন পারছেন না৷
কী আছে আল জাজিরার সেই প্রতিবেদনে?
প্রতিবেদনটি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অবঃ) তারিক আহমেদ সিদ্দিককে নিয়ে৷ এক অভিযোগকারীর বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, সামরিক বাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থাকে ব্যবহার করে মেজর জেনারেল (অবঃ) তারিক আহমেদ কমপক্ষে তিনজনকে গুম করেছেন৷ অভিযোগকারী যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত সাবেক সামরিক কর্মকর্তা কর্নেল শহীদ উদ্দীন খান৷ তার সাথে তারিক আহমেদ সিদ্দিকের পারিবারিক ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল বলে অভিযোগকারী দাবি করেন৷ শহীদ উদ্দীন খান দাবি করেন, গেল জানুয়ারিতে তাঁর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের তিন কর্মচারীকে নিরাপত্তা বাহিনী অপহরণ করে নিয়ে যায়৷ এরপর থেকে তাদের আর কোনো খোঁজ মেলেনি বলে আল জাজিরাকে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরাও৷ প্রতিবেদনের অনুসন্ধানে এই গুমের পেছনে তারিক আহমেদ সিদ্দিকের হাত ছিল বলে দাবি করা হয়৷
‘ওয়েবসাইট বন্ধে কোনো নির্দেশনা নেই'
এদিকে আল জাজিরার ওয়েবসাইট বন্ধে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন বিটিআরসি আন্তর্জাতিক গেটওয়ে প্রতিষ্ঠান, মোবাইল অপারেটর বা আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলোকে কোনো নির্দেশনা দেয়নি বলে জানা গেছে৷ যদিও এর আগে বিভিন্ন সময়ে ওয়েবসাইট, অ্যাপস বন্ধের জন্য তাদেরকে লিখিত নির্দেশনা প্রদান করত সরকারের এই সংস্থাটি৷
তবে এখন সরকার চাইলে কোনো ওয়েবসাইট বিটিআরসির মাধ্যম ছাড়াও ব্লক করে দিতে পারে৷ সম্প্রতি এমন প্রযুক্তি নিয়ে এসেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ বিভাগ৷ এর ফলে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো ওয়েবসাইট ব্লক করে দিতে পারে বলে জানা গেছে৷
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারদের সংগঠন আইএসপিএবি-এর সভাপতি এম এ হাকিম ডয়চে ভেলেকে জানান, ওয়েবসাইট বন্ধে বিটিআরসি বা মন্ত্রণালয় থেকে তাদের কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি৷ অবশ্য এর কোনো প্রয়োজন নেই বলেও মনে করেন তিনি৷ তিনি বলেন,‘‘ সম্প্রতি সরকারের টেলিযোগাযোগ বিভাগ প্রত্যেকটি আইআইজি বা ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে লেভেলে কিছু নতুন ডিভাইস বসিয়েছেন৷ এর মাধ্যমে মনিটরিং বা ফিল্টারিং সরকারের তরফ থেকেই সরাসরি করা হচ্ছে৷'' সাইবার নিরাপত্তায় আগে যে নির্দেশনা দেয়া হতো, সেটি এখন না দিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো নিজেরাই তা বাস্তবায়ন করে বলে জানান তিনি৷ আল জাজিরার ওয়েবসাইটটিও একই পদ্ধতিতে বন্ধ করা সম্ভব বলেও উল্লখ করেন হাকিম৷
এফএস/এসিবি