বর্জ্য পুনর্ব্যবহারে সহায়তা করে মাছি!
ইন্দোনেশিয়ার দক্ষিণ জাভায় ময়লা-আবর্জনা নিয়ে কাজ করে নজর কেড়েছেন আগুস পাকপাহান৷ সে কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে মাছি৷ আবর্জনা থেকে তৈরি হচ্ছে মাছ আর গবাদি পশুর খাবার৷ ছবিঘরে থাকছে সেই গল্প৷
ময়লা-আবর্জনাই যখন ‘সম্পদ’
আগুস পাকপাহান মূলত একজন অর্থনীতিবিদ৷ ইন্দোনেশিয়ার কৃষি শিল্পের উপমন্ত্রীর দায়িত্ব ছাড়ার পর প্রাকৃতিক সম্পদের অর্থনীতি নিয়ে আরো পড়াশোনা শুরু করলেন৷ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে নতুন কিছু করার আগ্রহ জন্মালো মনে৷ শুরু হলো জৈব বর্জ্য, বায়োলজিক্যাল এজেন্ট, স্বাস্থ্য, পরিবেশ এবং সামাজিক অর্থনীতির আন্তঃসম্পর্ক নিয়ে আরো পড়া, আরো জানার চেষ্টা৷ জানলেন, ময়লা-আবর্জনাকেও সহজেই সম্পদে রূপান্তর করা সম্ভব!
মাছির সহায়তা নেয়ার ভাবনা এলো যেভাবে...
মাছি ব্যবহার করে কীভাবে বর্জ্য, অর্থাৎ ময়লা-আবর্জনাকে সবচেয়ে ভালোভাবে কাজে লাগানো যায়? আগুস পাকপাহানও কিন্তু বিষয়টা জানতেন না৷ ড. দারমোনো তানিভিরইয়োনো নামের এক বিজ্ঞানী প্রথমে তাঁকে বলেছিলেন, কালো এক ধরনের মাছি আছে, তাদের মধ্যে যারা সৈনিক মাছি, তাদের কাজে লাগিয়ে বর্জ্য পদার্থকে পশুখাদ্যে পরিণত করা যায়৷
মাছের সস্তা খাবার
ড. তানিভিরইয়োনো আরো জানিয়েছিলেন, কালো রঙের ঐ মাছি রোগ ছড়ায় না৷ এ বিষয়টি জানার পরই পাকপাহান ভাবলেন, বর্জ্য থেকে মাছের খাদ্য তৈরি করলে কেমন হয়? মজার ব্যাপার হলো, কালো মাছি যখন লার্ভা অবস্থায় থাকে, তখন তাদের দেহ থাকে উচ্চ মাত্রার প্রোটিনে ভরপুর৷ এবং মাছের প্রিয় খাদ্য সেটি৷ ইন্দোনেশিয়া প্রতি বছর মাছের খাবার আমদানি করতে গিয়ে প্রচুর অর্থ ব্যয় করে৷ তো দেশেই সস্তায় মাছের খাবার তৈরি হলে, মন্দ কী!
মাছির চাষ
দক্ষিণ জাভার চিকুমপে অঞ্চলের চা বাগানে সার তৈরিতেও কাজে লাগানো হয়েছে কালো সৈনিক মাছিদের৷ এ জন্য পাকপাহান প্রথমে স্থানীয়দের বুঝিয়েছেন, কালো এই ধরনের মাছি কিভাবে উচ্চ মানের জৈব সার তৈরি করতে পারে৷ তারপর থেকে চিকুমপেতে শুরু হয়েছে মাছির চাষ৷ ওপরের ছবি দেখেই বোঝা যাচ্ছে, কাজটা মোটেই জটিল বা ব্যয়সাপেক্ষ নয়৷
বর্জ্য ব্যবস্থাপনাতেও কাজে লাগতে পারে মাছি
ড. পাকপাহান তানিভিরইয়োনো বললেন, ইন্দোনেশিয়ায় যদি জৈব এবং অজৈব বর্জ্য আলাদা করার মতো ব্যবস্থাপনা থাকতে, তাহলে সেই কাজেও কালো মাছির লার্ভা কাজে লাগানো যেত৷ এক বর্গ মিটার মাছির লার্ভা এক দিনে ১৫ কিলোগ্রাম আবর্জনা খেতে পারে৷ এভাবে অনেক জৈব বর্জ্যই তো লার্ভার পেটে আলাদা হয়ে যায়!
রাক্ষস মাছি
লার্ভা অবস্থার প্রথম দিনগুলোতেই শুধু কালো মাছিরা খাওয়া-দাওয়া করে৷ তারপর তারা শুস্ক জায়গার সন্ধানে চলতে শুরু করে৷ তবে লার্ভারা যখন খায়, ২৪ ঘণ্টা বিরামহীনভাবেই খায়৷
শূককীট সার
বর্জ্য শূককীটের পেটে যায়, তারপর তা মল হিসেবে বেরিয়েও আসে৷ শূককীটের সেই মলও কিন্তু খুব ভালো জৈব সার৷
পশুখাদ্য হিসেবে কালো সৈনিক মাছির চাষ
অনেক কৃষক গবাদি পশুর খাদ্য তৈরি করতেও কালো সৈনিক মাছি চাষ করে৷