বর-কনের বিয়ের প্রস্তুতি
‘বিয়ে’ প্রতিটি মানুষের জীবনেই একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন৷ অনেক আকাঙ্খা, স্বপ্ন জড়িয়ে যাচ্ছে এর সঙ্গে৷ প্রতিটি মেয়েই চায় এই দিনে তাকে রাজরানীর মতো লাগুক৷ তবে এই ইচ্ছে পূরণ করতে বিশাল প্রস্তুতির প্রয়োজন৷ দেখে নিন কিছু টিপস৷
প্রস্তুতি
বিয়ে মানেই সাজগোজ, বিশেষ করে কনের ক্ষেত্রে৷ তাই প্রথমেই ঠিক কী কী করতে চান, তার একটা লিস্ট তৈরি করে নিন৷ মনে রাখতে হবে, কনে যত ‘স্ট্রেস ফ্রি’ থাকবে, বিয়ের দিন তাঁকে দেখতে তত বেশি সুন্দর লাগবে৷ বেশিরভাগ ধকল যে যায় কনের ওপর দিয়েই!
স্বাস্থ্যকর খাবার
পারিবারিক, মানসিক বা অন্যান্য কাজের অতিরিক্ত চাপ এড়াতে স্বাস্থ্যকর ও সুষম খাবার খেতে হবে৷ অর্থাৎ পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে কনে তো বটেই, বরকেও৷ লক্ষ্য রাখতে হবে, বাড়তি চাপে যেন শরীরে আয়রন বা ভিটামিনের স্বল্পতা দেখা না দেয়৷ এই নিয়ম শুরু করতে হবে বিয়ের কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই৷
সবজি, সালাদ পানি
বিয়ের কেনাকাটা বা বাইরের অন্যান্য ঝামেলা করতে গিয়ে যখন-তখন বাইরের ভাজা খাবার এড়িয়ে চলুন এবং যথেষ্ট পানি পান করুন৷ এতে ত্বক ভালো থাকবে৷ সম্ভব হলে এই কাজটি বিয়ের অন্তত ছ’সপ্তাহ আগে থেকে শুরু করুন৷
ব্যায়াম
শরীরের ওজন যাই হোক না কেন নিজেকে ‘ফিট’ রাখার জন্য বিয়ের কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই হালকা ব্যায়াম করতে পারেন৷ এতে শুধু শারীরিকভাবে ফিট নয় আত্মবিশ্বাসও তৈরি হয়, যা নতুন জীবনের সূচনায় অবশ্যই কাজে লাগবে৷
কনের চুল
বিয়ের দিন চুল যেভাবেই রাখুন না কেন, চুলকে হতে হবে সুস্থ, ঝরঝরে আর সুন্দর৷ সেজন্য সপ্তাহে দু’দিন মাথায় ভালো করে নারকেল তেল দিন এবং দু’ঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলুন৷ আর হ্যাঁ, বিয়ের অন্তত ১০ দিন আগে পার্লার থেকে চুল কেটে আসুন৷ এতে বিয়ের দিন চুল ইচ্ছেমতো সেট করা যাবে৷
বরের চুল, দাড়ি
চুল কাটার পর প্রথম কয়েকদিন ছেলেদের দেখতে কেমন যেন রোগা এবং কিছুটা অন্যরকম লাগে, বিশেষ করে যদি চুল একটু বেশি ছাঁটা হয়ে থাকে৷ তাই সুন্দর এবং স্মার্ট দেখাতে অন্তত সাত থেকে ১০ দিন আগেই চুল কাটান৷ দাড়ি থাকলে দু-তিন আগে ছেটে নেয়া ভালো৷ আর ‘ক্লিন শেভ’ করা ছেলেরা বিয়ের দিন অবশ্যই শেভ করবেন৷
পোশাক
যথেষ্ট সময় থাকতে বর-কনে দু’জনেরই পোশাক তৈরি করে ফেলুন এবং ‘ফিটিংস’ ঠিকঠাক মতো হয়েছে কিনা, তা দেখে নিন৷ কেননা শেষ মুহূর্তে কোনো খুঁত বের হলে হয়ত সেটা পুরোপুরি ঠিক করা সম্ভব নাও হতে পারে৷ অর্থাৎ স্বপ্নপূরণে ত্রুটি থেকে যেতে পারে৷
ত্বক, চুল, মেহেদি
কয়েক সপ্তাহ আগে ত্বক, মেহেদি ও চুলের জন্য একজন ভালো বিউটিশিয়ানের পরামর্শ নিন৷ সবচেয়ে ভালো হয় এমন একজনকে পেলে, যিনি আপনার ত্বক ও চুলের ধরন সম্পর্কে আগে থেকেই জানেন৷ এছাড়া বিশেষ এই দিনটিরর জন্য আগে থেকেই আপনার পছন্দের পার্লারে একটা ‘বুকিং’ দিয়ে রাখতে ভুলবেন না কিন্তু!
দুশ্চিন্তা এড়িয়ে চলুন
আপনি যত দামি পোশাকই পরুন আর সেরা পার্লার থেকে বিয়ের সাজ সেজে আসুন না কেন, আপনার কোনো দুশ্চিন্তা থাকলে তার ছাপ অতি সুন্দর মুখেও পরবে৷ তাই যতটা সম্ভব দুশ্চিন্তা কম করুন৷ বিয়ে নিয়ে কোনো দুঃখ, কষ্ট বা অভিমান থাকলে পরিবারের সাথে আলোচনা করে আগেই মিটিয়ে ফেলুন৷
মানসিক প্রস্তুতি
অন্যান্য প্রস্তুতির মতো যৌনমিলনের জন্যও প্রস্তুতি প্রয়োজন এবং তা ছেলে-মেয়ে উভয়েরই৷ এ ব্যাপারে অভিজ্ঞ, বিশ্বাসী এবং যার সাথে আপনি খোলাখুলি কথা বলতে পারেন সেরকম একজন খুঁজে নিন৷ এর সঙ্গে বই আর ইন্টারনেট তো রয়েছেই৷ ‘নার্ভাসনেস’ কাটানোর জন্য একটু সময় থাকতেই যৌনমিলন, অর্থাৎ চিরস্থায়ী বন্ধনের এই গুরুত্বপূর্ণ দিকটি সম্পর্কে জেনে নিন৷
বিয়ের দিন
প্রথমে পার্লারে অপেক্ষা৷ তারপর বিয়ের আসরে দীর্ঘসময় বসে থাকা৷ এর থেকে কনে অনেকসময় অসুস্থ বোধ করতে পারেন৷ বরের অপেক্ষার ধরন ভিন্ন হলেও খানিকটা নার্ভাস কিন্তু দু’জনেই থাকেন৷ তা তারা পূর্ব পরিচিত হোক বা না হোক৷ তাই এ রকম পরিস্থিতিতে দু’জনের জন্যই হালকা খাবার বিশেষ উপকারী৷ তাই পোলাও-মাংস-বিরিয়ানি নয়, এ দিন হালকা, সাধারণ খাবারই বর-কনের উপযুক্ত৷
জার্মানদের বিয়ে
জার্মানিতে বিয়ের প্রায় পুরো আয়োজনই করে থাকে বর ও কনে নিজে৷ আর বেশিরভাগ বিয়েই হয় খুব সাদাসিধেভাবে৷ তবে যারা আয়োজন করে বিয়ে করেন, তারা অবশ্য অনেকক্ষেত্রেই পরিবারের সহযোগিতা পান৷ জার্মান মেয়েরা বিয়ের লম্বা সাদা পোশাকটি অনেক দেখেশুনেই কেনেন৷ তবে জার্মানরা বিশেষ গহনা পরেন না৷ মজার ব্যাপার হলো, আজও অনেক জার্মান বিশ্বাস করেন যে বিয়ের আগে হবু স্বামী কনের পোশাক দেখে ফেললে অমঙ্গল হয়৷