বন্যা: জার্মানিতে ত্রাণ ও উদ্ধারকাজে সেনা
২০ জুলাই ২০২১জার্মানিতে দেশের ভিতরে সেনা মোতায়েনের ক্ষেত্রে সাংবিধানিক নানা বিধিনিষেধ আছে। কিন্তু জার্মানির দুইটি রাজ্য রাইনল্যান্ড প্যালাটিনেট এবং নর্থ রাইন-ওয়েস্টফালিয়ায় ভয়াবহ বন্যা হয়েছে। বন্যার এমন তাণ্ডব জার্মানিতে আগে কখনো দেখা যায়নি। এই দুই রাজ্যেই সেনা নেমেছে, সেই সঙ্গে পাঠানো হয়েছে ভারী সামরিক যন্ত্রপাতি, যা দিয়ে বন্যা বিধ্বস্ত জায়গাগুলি থেকে ধ্বসস্তূপ সরানো হবে।
গত কয়েকদিনে এক হাজার সেনা এবং দুইশটি সামরিক যান ওখানে পাঠানো হয়েছে। বন্যায় বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। অসংখ্য বাড়ি ভেঙে পড়েছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়াতে ৫৫০ জন, রাইনল্যান্ড-প্যালাটিনেটে তিনশ জন এবং বাভারিয়াতে ১০০ জন সেনা পাঠানো হয়েছে। চারটি রিকভারি ট্যাঙ্ক, দুইটি ইঞ্জিনিয়ারিং ট্যাঙ্ক, পাঁচটি ট্যাঙ্ক ট্রাক, তিনটি ব্রিজ তৈরির ট্যাঙ্ক, নয়টি সব জায়গায় যেতে পারে এমন অ্যাম্বুলেন্স এবং ১৪টি সেনা নিয়ে যাওয়ার যান পাঠানো হয়েছে। সেই সঙ্গে আছে দুইটি হেলিকপ্টার, আটটি অগ্নিনির্বাপক ট্রাক, উপগ্রহ যোগাযোগ ব্যবস্থা, রাস্তা সারাবার উপকরণ এবং ফিল্ড কিচেন।
সাংবিধানিক রক্ষাকবচ
দেশের সংবিধানে জার্মান সেনার কার্যকলাপ কী হবে, তা বলা আছে। সীমান্ত ছাড়া দেশের ভিতরে সেনা নামাতে হলে অসামরিক প্রশাসনকে আগে অনুরোধ করতে হবে। সেই অনুরোধ তারা করতে পারবেন মানুষের সুরক্ষার জন্য বা ভয়ংকর বিপদের হাত থেকে রক্ষা পেতে।
সেনা দেশের ভিতর কী করতে পারবে বা পারবে না, সেটাও বলে দেয়া আছে। কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় হলে সেনা কখনোই নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে পারবে না। এমনকী তারা পুলিশকেও সহায়তা করতে পারবে না। যদি সোশ্যাল অর্ডারের ক্ষেত্রে ভয়ংকর বিপদের সম্ভাবনা থাকে, তা হলেই তারা সাহায্য করতে পারবে। এই সব বিধিনিযেধ এখন জার্মানির রাজনৈতিক সংস্কৃতির অঙ্গ হয়ে গেছে।
সেনা এখন বন্যাক্রান্ত এলাকায় ২৩টি অপারেশন চালাচ্ছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই স্থানীয় প্রশাসন তাদের অনুরোধ করেছিল। সেনা মুখপাত্র জানিয়েছেন, আরো প্রায় ১২টি অনুরোধ সেনা কর্তৃপক্ষের বিবেচনাধীন আছে। বাভারিয়া ও স্যাক্সনি থেকে আরো এই ধরনের অনুরোধ আসতে পারে। কারণ, সেখানেও বন্যা হয়েছে।
বেন নাইট/জিএইচ