বইমেলার শ্রমজীবী মানুষের কথা
শুধু লেখক প্রকাশকেরা নন বইমেলাকে প্রাণবন্ত করে তোলার পেছনে ভূমিকা রাখেন শ্রমজীবী মানুষেরাও৷ বইমেলা বাড়তি আয়ের সুযোগ তাদের জন্য৷ তাদের কথা থাকছে ছবিঘরে৷
জাফর ইকবালের কাজের চাপ
ঢাকার আরামবাগের ফ্রেশ ফয়েল প্রিন্টিং প্রেসে কাজ করেন জাফর ইকবাল৷ বছরের শুরুর সময়টায় তার কাজের চাপ বাড়ে, বাড়তি রোজগার হয়৷ যদিও কাগজের দাম বাড়ায় এবার বই বাঁধাইয়ের চাপ তেমন নেই বলে জানান জাফর৷
ব্যস্ততা নেই আগের মতো
২০২৩ সালের বইমেলায় ৪৭ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছিল, যেখানে তার আগের বছর বিক্রি হয়েছে ৫২ কোটি টাকার৷ দীর্ঘদিন ধরে ছাপাখানার কাজে জড়িত ঢাকার ফকিরাপুলের জবা প্রিন্টিং এর এই কর্মচারি জানান, পাঁচ বছর আগেও বইমেলায় তার কাজের চাপ কয়েকগুন বেশি ছিল, আয়ও হতো বেশি৷
দিনমজুর লোকমানের আক্ষেপ
বই বিক্রি ও ছাপা কমে যাওয়ার প্রভাব পড়ছে ছাপাখানার ব্যবসায়৷ ৩০ বছর ধরে ঢাকার আরামবাগে প্রেসপাড়াতে দিনমজুর হিসেবে কাজ করেন লোকমান হাকিম৷ তিনি জানান, ব্যবসার মন্দায় তার পরিচিত অনেকেই ছাপাখানা বন্ধ হয়ে গেছে অথবা আকার ছোট করতে বাধ্য হয়েছেন অনেক ব্যবসায়ী৷
মেলার হাওয়াই মিঠাই
রঙ-বেরঙের হাওয়াই মিঠাই বিক্রি করেন আফজাল হোসেন৷ এখন তার প্রতিদিনের গন্তব্য বাংলা একাডেমীর বইমেলা প্রাঙ্গন৷ মেলায় জনসমাগম বেশি হওয়ায় আয়ও বেশি বলে জানান আফজাল৷
স্টলের চাকচিক্য
বইয়ের বিক্রি কমলেও বাড়ছে মেলার চাকচিক্য৷ নানা সাজসজ্জায় স্টল বা প্যাভিলিয়ন আকর্ষণীয় করতে চেষ্টার কমতি নেই প্রকাশকদের, যা কাজের সুযোগ করে দিয়েছে মোঃ আরমান হোসেনের মতো বৈদ্যুতিক মিস্ত্রীর৷
নিপার মালা বিক্রি
ছিন্নমূল মানুষদের কেউ কেউ বইমেলায় ফুল বা ফুলের মালা বিক্রি করে টাকা রোজগারের চেষ্টা করেন৷ তেমনই একজন নিপা আক্তার৷ তবে তার অভিযোগ, মেলা প্রাঙ্গনে তার মতো ভ্রাম্যমাণ ফুল বিক্রেতাদের দেখলেই তাড়া করছে পুলিশ৷
‘এখন আর বই টেনে পোষায় না’
পুরান ঢাকার বাংলাবাজারে ভ্যান টানার কাজ করেন লুৎফর রহমান৷ তিনি বলেন, ‘‘আগে বইমেলায় যেমন কাজের চাপ ছিল, এখন তার এক-তৃতীয়াংশও নেই৷ এখন যা আয় হয়, তা দিয়ে আর পোষায় না৷’’
স্টল তৈরি
২০১৮ সাল থেকে বইমেলায় স্টল তৈরির কাজ করেন আলী হোসেন ও মোকছেদ হোসেন৷ গত কয়েক বছরে একুশে বইমেলার পরিসর বেড়েছে৷ বেড়েছে স্টল ও প্যাভিলিয়নের সংখ্যা৷ এতে কাজ বেড়েছে আলী হোসেনদের৷
পড়াশোনার পাশাপাশি ব্যবসা
গোপালগঞ্জের একটি সরকারি কলেজে স্নাতক তৃতীয় বর্ষে পড়াশোনা করেন নোমান ইসলাম৷ গত চার বছর ধরে তিনি বইমেলার কাছে খাবারের ব্যবসা করছেন৷
ভ্রাম্যমাণ দোকান
শাহবাগ থেকে বইমেলায় যাওয়ার পথটিতে ভ্রাম্যমান বিক্রেতারা নানা পণ্যের পসরা সাজিয়েছেন৷ বইয়ের পাশাপাশি মেয়েদের কানের দুল, চুড়ি, ক্লিপসহ বিভিন্ন অলঙ্কারের বিক্রি ভালো হয় বলে জানান ভ্রাম্যমাণ দোকানি জাফর আহমেদ৷