প্রেসিডেন্টকে সরাতে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা
৮ এপ্রিল ২০১৯রাজধানী খার্তুমে সেনা সদর দপ্তরের সামনে টানা তিন দিনের বিক্ষোভ ও অবস্থানে অংশ নিচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ৷ সুরক্ষিত ওই কম্পাউন্ডের ভেতরে প্রেসিডেন্টের বাসভবন এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় রয়েছে৷
অতি মাত্রায় মূল্যস্ফীতির মধ্যে হঠাৎ করে রুটির দাম বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে গত ডিসেম্বরে রাজধানী খার্তুমসহ সুদানের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ শুরু হয়৷ বশির সরকারের অব্যবস্থাপনাকে খাদ্য সংকট ও প্রায় ৭০ ভাগ মূল্যস্ফীতির জন্য দায়ী করছেন বিক্ষোভকারীরা৷
গত শনিবার থেকে সেনাসদরের সামনে অবস্থান করছেন হাজার হাজার মানুষ৷ নিরাপত্তাবাহিনীর ব্যাপক কাঁদুনে গ্যাসে এই পর্যন্ত সেখানে একজন চিকিৎসকসহ পাঁচ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে৷
সব মিলিয়ে গত ডিসেম্বর থেকে প্রেসিডেন্ট বিরোধী বিক্ষোভে ৩২ জন নিহতের কথা জানিয়েছেন সরকারি কর্মকর্তারা৷ তবে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের হিসাবে এই সংখ্যা ৫১ জন৷
চার মাস আগে বিক্ষোভের সময় প্রেসিডেন্টকে সরাতে বিক্ষোভকারীরা সেনা হস্তক্ষেপ চাইলেও বশিরের পক্ষেই অবস্থান নিয়েছিল সেনা কর্তৃপক্ষ৷ এভাবে ১৯৮৯ সাল থেকে তাঁর ক্ষমতায় থাকার পেছনে সেনা সমর্থনই মুখ্য হিসাবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে৷
সে সময় সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ‘‘দেশের নেতৃত্ব, জনগণের স্বার্থ ও জাতীয় নিরাপত্তার কাজ করার বিষয় নিশ্চিত করছে সেনাবাহিনী৷ এক্ষেত্রে জনগণের নিরাপত্তায় জীবন, সম্মান ও সব শক্তি নিয়োগ করা হবে৷''
সোমবার ভোরে নিরাপত্তাবাহিনীর বেশ কয়েকটি ট্রাকে বিক্ষোভকারীদের তুলে নিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা৷ ‘‘এরপর তারা ব্যাপক কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করা শুরু করে,'' এএফপিকে বলেন একজন প্রত্যক্ষদর্শী৷
এদিকে বিক্ষোভের বিষয়ে সুদান সরকারের অবস্থান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷ এক বিবৃতিতে এক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থার পররাষ্ট্র বিভাগ৷
এতে বলা হয়, ‘‘বহু বছর ধরে অস্বাভাবিক বাধা-বিপত্তির বিপরীতে অসাধারণ সহনশীলতা দেখিয়েছে সুদানের জনগণ৷ সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের মাধ্যমে তাদের এই বিশ্বাসকে উর্ধ্বে তুলে ধরতে হবে সরকারকে৷''
অন্যদিক, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সেনাসদরের সামনে অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা৷ ‘‘শনিবার আমরা যা শুরু করেছি, তা দাবি আদায় পর্যন্ত চলবে৷ যতক্ষণ না প্রেসিডেন্ট পদত্যাগ করবেন, ততক্ষণ আমরা এই স্থান ত্যাগ করব না,'' এএফপিকে বলেন ওসামা আহমেদ নামে এক বিক্ষোভকারী৷
এমবি/জেডএইচ (এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স)