'প্রাউড বয়েজ'দের ট্রাম্প চেনেন না?
১ অক্টোবর ২০২০প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ফের চাপের মুখে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার বিরোধী প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেনের সঙ্গে প্রথম বিতর্ক সভায় যোগ দিয়েছিলেন ট্রাম্প। সেখানে একাধিক বিতর্কিত কথা বলেছেন তিনি। তবে সব চেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে তাঁর বর্ণবাদী মন্তব্য নিয়ে।
বিতর্কসভায় ট্রাম্পকে বর্ণবাদ এবং অতি দক্ষিণপন্থী শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদীদের নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। প্রশ্ন করা হয়েছিল প্রাউড বয়েজদের নিয়ে। ট্রাম্প সেই প্রশ্ন কার্যত এড়িয়ে গিয়ে আক্রমণ করেন বামপন্থী আন্দোলনকারীদের। তাঁর বক্তব্য, বামপন্থীদের জন্যই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গন্ডগোল হচ্ছে। শুধু তাই নয়, শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদীদের শাস্তির বিষয়েও কার্যত নীরব থাকেন প্রেসিডেন্ট।
মঙ্গলবার এ ঘটনার পরে বিভিন্ন শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদী গোষ্ঠী ট্রাম্পকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ধন্যবাদ দিতে শুরু করে। প্রাউড বয়েজদের তরফ থেকে ট্রাম্পকে কুর্নিশ জানানো হয়। গোটা দেশ জুড়ে বিতর্ক শুরু হয়ে যায়। বুধবার ফের হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে, প্রেসিডেন্ট বলেছেন, প্রাউড বয়েজ কারা তিনি জানেন না। অন্যায় করলে শাস্তি পেতেই হবে।
ড্যামেজ কন্ট্রোল করার চেষ্টা শুরু করে দিয়েছেন ট্রাম্প। কিন্তু বিতর্ক তাতেই বন্ধ হচ্ছে না। ট্রাম্প বর্ণবাদী, এ অভিযোগ আগেও একাধিকবার উঠেছিল। তিনি বর্ণবাদীদের আড়াল করেন বলেও অভিযোগ উঠেছিল। সে কারণেই পুলিশ বর্ণবাদী আচরণ করলে তিনি পুলিশের পাশে দাঁড়ান বলে বিক্ষোভকারীরা মন্তব্য করেছিলেন। ট্রাম্প নিজে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা এ ধরনের অভিযোগের উত্তর দেননি। বরং বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলন থেকেই উত্তেজনা ছড়াচ্ছে বলে বার বার বামপন্থীদের আক্রমণ করেছেন তিনি। তবে মঙ্গলবার তাঁর মন্তব্য, সব চেয়ে বেশি বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
প্রাউড বয়েজ হলো অ্যামেরিকার বর্ণবাদী গোষ্ঠী। ২০১৬ সালে এই গোষ্ঠীর জন্ম হয়। মুসলিম বিরোধী, কৃষ্ণাঙ্গ বিরোধী, শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদী এই গোষ্ঠী দেশে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত। প্রকাশ্যে এই গোষ্ঠী সোশ্যাল মিডিয়ায় বিদ্বেষমূলক পোস্ট করে। তবে তাদের বেশির ভাগ কর্মসূচিই গোপনে হয়। তাদের একাধিক গোপন যোগাযোগ মাধ্যম আছে বলেও মনে করা হয়। রাস্তাঘাটেও এই গোষ্ঠীর সদস্যরা মার দাঙ্গায় অংশ নেয়।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, প্রাউড বয়েজদেরও অনেক ভাগ আছে। তাদের সমর্থনকারী আরো অসংখ্য গোষ্ঠী আছে। ট্রাম্পের শাসনকালে এদের কার্যকলাপ অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে তারা প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ দিয়েছে। তবে মঙ্গলবার যা ঘটেছে, তা অভূতপূর্ব। অনেকেই মনে করছেন, মঙ্গলবারের মন্তব্যের জন্য ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বড় খেসারত দিতে হতে পারে।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি)