প্রশাসনিক কর্মকর্তারা কেন আক্রান্ত হচ্ছেন?
২৫ জুন ২০২০এই আক্রান্তরা কেউ মন্ত্রণালয়ে, বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়সহ বিভিন্ন সরকারি দফতরের কর্মকর্তা৷
মার্চ মাসে বাংলাদেশে করোনার সংক্রমণ শুরু হবার পর থেকে এক মাস আগ পর্যন্তও সংখ্যাটি ছিল অর্ধেক৷ গেল এক মাসে তা দ্বিগুণ হয়ে গেল৷ পুলিশেও গেল রোববার পর্যন্ত মোট সংক্রমিতের সংখ্যা প্রায় নয় হাজার৷ ডাক্তার, নার্স, চিকিৎসাকর্মীসহ ফ্রন্টলাইনের সব পেশার মানুষ করোনায় কমবেশি আক্রান্ত৷ এদের যারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন, তাদের করোনায় সংক্রমণ হবার ঝুঁকি বেশি এটা বলাই বাহুল্য৷ কিন্তু প্রশ্ন হল, যারা অফিসে রয়েছেন, তারা কেন এত আক্রান্ত হচ্ছেন? হতে পারে, যেহেতু টেস্টের সংখ্যা বেড়েছে, সে কারণে কর্মকর্তাদের মাঝেও আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে৷
আমরা দেখেছি, অনেকে অল্প আলামত দেখা দিলেও করোনার পরীক্ষা করাতে যেতে চান না৷ অথচ গবেষকেরা বারবারই বলেছেন, সাধারণ সর্দি কাশি জরের লক্ষ্মণ বা কখনো কোন লক্ষ্মণ ছাড়াও করোনার সংক্রমণ হতে পারে৷ এপ্রিল থেকে সরকার মাঠ পর্যায়ে কর্মরত চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ যে কেউ সরকারি নির্দেশনা পালন করতে গিয়ে করোনা আক্রান্ত বা মৃত্যুবরণ করলে অর্থ প্রণোদনার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে৷ এই প্রণোদনা হয়ত অনেককে পরীক্ষা করাতে উৎসাহিত করেছে, যা ইতিবাচক৷
এছাড়া পত্রিকাগুলো বলছে, এ পর্যন্ত প্রশাসনের আক্রান্ত ২১১ জন বিসিএস কর্মকর্তার ১০৪ জন মাঠ প্রশাসনে কর্মরত৷ শুরু থেকেই শুনে আসছি, সচিবালয়ে সংক্রমণ বন্ধ নেই৷ কিন্তু এসব অফিস বা মন্ত্রণালয়গুলোতে কি পর্যাপ্ত সুরক্ষার ব্যবস্থা আছে? যদি থাকে তাহলে কেন এত সংক্রমণ? সচিবালয়ে নানা কাজে বাইরে থেকে মানুষকে আসতে হয়৷ এছাড়া অফিসগুলোতে যেভাবে এখনো ফাইল চালাচালির পুরোনো সিস্টেম বহাল আছে, তাতে সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি সেখানে আছে বৈকি৷ এই করোনা উপলক্ষে অন্তত এই ব্যবস্থা আরো আধুনিকীকরণের উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে৷
এছাড়া সচিবালয়ে অনেক কর্মী আছেন, যাদের কাজের পরিধি এমন যে, একটু ডিজিটালাইজেশনের ছোঁয়া থাকলে সহজেই তারা ঘরে বসে কাজ করতে পারতেন৷ এর বাইরে অনেক কর্মীর প্রয়োজনীয়তা এই আধুনিক যুগে ফুরিয়েছে৷ তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে অন্য কাজে ব্যবহার করা উচিত৷ সেই পুরানো সিস্টেমের যুগ থেকে আমাদের বের হয়ে আসতেই হবে, করোনা অন্তত সেই তাগিদটি দিচ্ছে আমাদের৷