প্রফেসর ইউনূসকে নিয়ে সরব জার্মান বার্তা মাধ্যম
৬ মার্চ ২০১১‘‘অপসারণের মুখে দ্য হোলি ম্যান'' - মিউনিখ থেকে প্রকাশিত দৈনিক স্যুদডয়চে সাইটুং এই শিরোনামের আওতায় লিখছে: ‘‘নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী এবং ক্ষুদ্র ঋণ-এর জনক মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর দেশবাসীর কাছে এক আদর্শ পুরুষ হিসেবে নন্দিত হয়েছেন৷ এবার তাঁকে গ্রামীণ ব্যাংকের নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে৷''
ইউনূস'এর ক্ষুদ্রঋণ সংক্রান্ত ধ্যানধারণা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার কথা উল্লেখ করে পত্রিকা লিখছে: ‘‘প্রবলভাবে আত্মবিশ্বাসী, সদা হাস্যমুখ এই ছোটখাটো মানুষটি জোর দিয়ে বলে এসেছেন যে, বিশ্বের দারিদ্র্যকে মিউজিয়ামে নির্বাসিত করার মত ক্ষমতা ধরে ক্ষুদ্রঋণ৷ করে তুলতে পারে তাকে প্রদর্শনের জিনিস, সত্যিকারের জীবনে যার কোন স্থান থাকবে না৷ ... ২০০৬ সালে দরিদ্রতম মানুষদের ক্ষুদ্রঋণ দেয়ার উদ্যোগের স্বীকৃতি হিসেবে তাঁকে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করা হয়৷ ইউনূস বাংলাদেশে এবং একই সাথে বিশ্বের বাকি অংশে এক পূণ্যাত্মা হিসেবে নন্দিত হয়েছেন৷''
অধ্যাপক ইউনূসকে তাঁর প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকের শীর্ষ পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার সরকারি উদ্যোগের পিছনে কারণটা রাজনৈতিক বলে মনে করে দৈনিক স্যুদডয়চে সাইটুং৷ পত্রিকার মতে, ২০০৭ সালে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই-এর লক্ষ্য নিয়ে নাগরিক শক্তি দল গঠন করে তিনি রাজনৈতিক মহলের বিরাগভাজন হন৷
বার্লিন থেকে প্রকাশিত দৈনিক টাগেসসাইটুং - টাৎস'ও মনে করে যে ইউনূস'কে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে সরিয়ে দেয়ার যে উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার, তার কারণ রাজনৈতিক৷ ক্ষুদ্রঋণ প্রসারের ক্ষেত্রে তাঁর যুগান্তকারী ভূমিকার কথা উল্লেখ করে পত্রিকা লিখছে: ‘‘ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংক সেই সব মানুষের কাছে ক্ষুদ্রঋণকে জনপ্রিয় করে তুলেছেন যারা একসময় ঋণ পাওয়ার যোগ্য বলেই বিবেচিত হতো না৷ আজ বাংলাদেশে গ্রামীণ ব্যাংকের গ্রহীতার সংখ্যা ৮০ লাখেরও বেশি এবং তার ৯৭ শতাংশই নারী৷ ২০০৬ সালে ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংক যৌথভাবে পান নোবেল শান্তি পুরস্কার৷''
টাগেসসাইটুং আরো লিখছে: ‘‘ইউনূস ও গ্রামীণ আজও পশ্চিমের উন্নয়ন সাহায্য মহলে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই-এর এক ব্রহ্মাস্ত্র বলে প্রশংসিত৷ তাদের আছে প্রভাবশালী বন্ধুরা৷ আয়ারল্যান্ডের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মেরি রবিনসনের নেতৃত্বে গঠিত হয় ‘‘ফ্রেন্ডস অফ গ্রামীণ'' গোষ্ঠী৷ বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রেসিডেন্ট জেমস ওলফেনজনও তার সঙ্গে যুক্ত৷ তাঁরা মনে করেন, ইউনূস ও গ্রামীণ এক ‘তথ্য বিকৃতি অভিযান'এর শিকার৷''
প্রতিবেদন: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ