1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শতবর্ষ

৫ আগস্ট ২০১৪

১৯১৪ সালের ২৮শে জুলাই বেজে ওঠে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের দামামা৷ চার বছরেরও বেশি সময় ধরে চলে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, শেষ হয় ২০১৮ সালে৷ যুদ্ধ প্রতিরোধে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর তৈরি হয় লিগ অফ নেশনস, ইউনাইটেড নেশনস আজ তারই পরিবর্তীত রূপ৷

https://p.dw.com/p/1Coz9
ছবি: Reuters

যুদ্ধ প্রতিরোধে বিশ্বের বহু দেশ আজও এই প্রতিষ্ঠান, অর্থাৎ জাতিসংঘের সঙ্গে যুক্ত৷ তাই নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদরদপ্তরে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শতবর্ষ উপলক্ষ্যে একটি বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়, যা চলবে ২০১৮ সাল পর্যন্ত৷ মহাযুদ্ধ স্মরণে রাশিয়া, ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিশিষ্ট কবিদের কবিতা পাঠ করা হয় সেখানে৷ ১৪টি দেশের রাষ্ট্রদূত এই কবিতাগুলো পাঠ করেন৷ জাতিসংঘে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত অশোক কুমার মুখার্জি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গীতাঞ্জলি থেকে কবিতা পড়ে শোনান, যে কবিতাগুলো শোনা যাবে সাউন্ড ক্লাউডে-ও৷

১৯১৪ সালের ২৮শে জুলাই সার্বিয়ার বিরুদ্ধে অস্ট্রিয়ার যুদ্ধ ঘোষণার মধ্যে দিয়ে যে রক্তাক্ত সংঘাতের শুরু, সাড়ে চার বছরে তাতে জড়িয়ে পড়েছিল ৪০টি দেশ৷ সামরিক বেসামরিক নাগরিক মিলে প্রায় ২ কোটি মানুষের প্রাণহানি ঘটে এই যুদ্ধে৷

তাই প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শতবর্ষে ইউরোপীয় শহরগুলিতেও যুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরা হচ্ছে বিভিন্ন প্রদর্শনীতে৷ কোথাও যুদ্ধের ঘটনাগুলো নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠান হচ্ছে, কোথাও করা হচ্ছে সেনা প্যারেড৷ তবে সবগুলো অনুষ্ঠানেই শান্তির আহ্বান উঠে আসে৷ বেলজিয়ামে জার্মান আগ্রাসনের একশ বছর পূর্তিতে ইউরোপীয় নেতাদের বক্তব্যেও উঠে আসে শান্তির বাণী৷ সোমবার দিনটির স্মরণে বেলজিয়ামে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজনও করা হয়৷

জার্মান প্রেসিডেন্ট ইওয়াখিম গাউক জার্মানির আক্রমণকে বড় ধরনের অবিচার হিসেবে উল্লেখ করেন৷ মানবাধিকার রক্ষায় সবদেশকে একত্রে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি৷ ১৯১৪ সালে জার্মান সেনাদের হামলায় পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় বেলজিয়ান শহর৷ অনুষ্ঠানে ব্রিটেনের প্রতিনিধিত্ব করেন প্রিন্স উইলিয়াম, সাথে ছিলেন তার স্ত্রী কেট৷ উইলিয়াম বলেন, ‘‘আমরা এক শতক আগে একে অপরের শত্রু ছিলাম, কিন্তু আজ আমরা বন্ধু এবং সহযোগী৷''

Gedenkfeier Erster Weltkrieg Lüttich Gauck Rede 4.8.2014
জার্মানির প্রেসিডেন্ট ইওয়াখিম গাউকছবি: picture-alliance/dpa

এই অনুষ্ঠানের পর উইলিয়াম এবং গাউক বেলজিয়ামের দক্ষিণাঞ্চলের শহর মোনস-এ নিহত সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান৷ সেন্ট সিম্ফোরিন মিলিটারি সিমেট্রিতে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে নিহত জার্মান ও কমনওয়েলথ সেনাদের সমাহিত করা হয়েছিল৷

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেন, ‘‘শান্তি স্থাপনের ক্ষেত্রে ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে কখনো যেন ভুল বোঝাবুঝি না হয় এবং আমরা একসাথে কাজ করতে পারি৷'' বেলজিয়ামের রাজা কিং ফিলিপ বলেন, ‘‘সমন্বিত ইউরোপ, গণতান্ত্রিক ইউরোপ আমরা চাই, যা আমাদের পূর্বসূরিরা চেয়েছিলেন৷''

এছাড়া বিশ্বের অন্যান্য স্থানেও প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শতবর্ষ উপলক্ষ্যে নানা আলোচনা ও অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে৷ সোমবার স্কটল্যান্ডে গ্লাসগো ক্যাথেড্রালে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন, প্রিন্স চার্লসসহ প্রায় এক হাজার বিশিষ্ট ব্যক্তি নিহতদের আত্মার শান্তি কামনায় প্রার্থনা করেন৷ এছাড়া লন্ডনের স্থানীয় সময় রাত ১০টায় ওয়েস্ট মিনিস্টার ক্যাথেড্রালে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়৷ একশ বছর আগে ঠিক এর এক ঘণ্টা পরেই ব্রিটেন যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল৷

১৯১৪ সালের ৪ঠা আগস্ট জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার মাধ্যমে ব্রিটেন যে ধ্বংসযজ্ঞ শেষ করতে চেয়েছিল, সেই ‘ওয়ার টু এন্ড অল ওয়ারস'-কে স্মরণ করে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামারন ব্রিটেনবাসীকে এক ঘণ্টার জন্য একটি ছাড়া বাড়ির সমস্ত আলো বন্ধ রাখার আহ্বান জানান৷ তাই লন্ডনের বড় বড় সব স্থাপনা –পার্লামেন্ট হাউজ, টাওয়ার ব্রিজ, সেন্ট পলস ক্যাথেড্রাল এদিন স্থানীয় সময় রাত ১০টায় ডুবে গিয়েছিল অন্ধকারে৷ বাড়িগুলোতে জ্বলছিল কেবলমাত্র একটি করে আলো৷

ক্যামেরনের কথায়, ‘‘এই একটি আলো শান্তির প্রতীক, যা বিশ্বের সব অন্ধকার দূর করবে৷''

এপিবি/ডিজি (এপি, এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য