এক জঙ্গির বিস্ময় জাগানো স্বীকারোক্তি
৩১ মার্চ ২০২২২০১৫ সালের ১৩ নভেম্বরের সেই হামলার দায় স্বীকার করেছিল তথাকথিত ইসলামি জঙ্গি সংগঠন আইএস৷
জার্মানি-ফ্রান্স ফুটবল ম্যাচ চলার সময় স্টেডিয়ামের বাইরে আত্মঘাতী বোমা ফাটায় তিন জঙ্গি৷ সালাহর দায়িত্ব ছিল এক কনসার্ট হলে হামলা চালানোর৷ কিন্তু অন্য জঙ্গিরা আত্মঘাতী হলেও ৩২ বছর বয়সি সালাহ অক্ষত অবস্থায় বাটাক্লানের কনসার্টস্থল থেকে পালিয়ে যান৷
তার বেঁচে যাওয়ার প্রকৃত কারণ এতদিন জানা যায়নি৷
হামলার পর সুইসাইড ভেস্ট ছুঁড়ে ফেলে নিজের শহর ব্রাসেলসে চলে যান সালাহ৷ ২০১৬ সালের এপ্রিলে সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷
২০১৫ সালের নভেম্বরের সিরিজ বোমা হামলায় অন্তত ২০ জন জড়িত ছিলেন বলে ফ্রান্সের পুলিশের সন্দেহ৷ তাদের মধ্যে ছয়জন এখনো পুলিশের নাগালের বাইরে৷ তাদের অনুপস্থিতিতেই বিচারকাজ শুরু করা হয়৷ এছাড়া অন্তত পাঁচ জন সিরিয়ায় আইএস-এর হয়ে যুদ্ধ করতে গিয়ে মারা গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ তবে হামলায় সরাসরি জড়িতদের মধ্যে একমাত্র সালাহই এখনো বেঁচে আছেন৷
গত ছয় বছরে সেদিন সুইসাইড ভেস্ট না ফাটানোর বিষয়ে মুখ খোলেননি সালাহ৷ বুধবার প্যারিসের বিশেষ আদালতে শুনানি শুরুর পরও জানিয়েছিলেন, আইন অনুযায়ী তার নীরব থাকার অধিকার রয়েছে, তাই তিনি এ বিষয়ে কিছু বলবেন না৷ কিন্তু হামলায় শিকারদের পক্ষের এক উকিল হঠাৎ প্রেমিকাকে নিয়ে ব্যক্তিগত প্রশ্ন করলে এতদিন গোপন করে রাখা তথ্যটি হঠাৎই জানিয়ে দেন সবাইকে৷
তিনি জানান, সেদিন শেষ মুহূর্তে ইচ্ছে করেই সুইসাইড ভেস্টের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিজেকেও উড়িয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করেছিলেন, ‘‘হ্যাঁ, আমি শেষ মুহূর্তে বেল্টের বোতাম টেপার সিদ্ধান্ত বদলেছিলাম৷ না কাপুরুষতা থেকে বা ভয় থেকে তা করিনি, আসলে শেষ মুহূর্তে তা আর তা করতে চাইনি, ব্যাস...৷''
কিন্তু সুইসাইড ভেস্ট বিস্ফোরিত না হওয়া, নিজের বেঁচে যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে হয়েছিল সালাহকে৷ আদালতে তিনি বলেন, ‘‘অন্যদের বলেছিলাম, বেল্টটা ঠিকভাবে কাজ করেনি৷ হ্যাঁ, সেদিন মিথ্যে বলেছিলাম৷ এবং সে কারণে লজ্জাও লাগছিল৷ অন্য জিহাদীদের চোখের দিকে তাকাতেও ভয় লাগছিল৷ তখন বয়স তো মাত্র ২৫৷ বিষয়টি নিয়ে আমি তখন সত্যিই লজ্জিত ছিলাম৷''
এসিবি/ কেএম (এএফপি, ডিপিএ, ইএফই)