পৌষ সংক্রান্তির মাছের মেলা
পৌষ সংক্রান্তি উদযাপনের নানা আয়োজন থাকলেও সবচেয়ে ভিন্নভাবে উদযাপিত হয় হবিগঞ্জ ও মৌলভিবাজারে৷ মাছের মেলা হয় সেখানে৷ বিশালাকৃ্তির মাছের সমারোহ ঘটে এই মেলায়৷ নিলামে ওঠে মাছ৷
২০০ বছরের মেলা
স্থানীয়রা জানান, ২০০ বছর ধরে চলে আসছে হবিগঞ্জের পইল গ্রামের এই মাছের মেলা৷ মাঘ মাসের প্রথম দিন একদিনের জন্য এই মেলা বসতো৷ এখন জনদাবির মুখে এই মেলার পরিসর ২ দিনের করা হয়েছে৷
বড় মাছের সাম্রাজ্য
মেলায় বড় মাছের রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলে৷ প্রধান আকর্ষণ হিসেবে থাকে বোয়াল, আইড়, চিতল, গজার, রুই, কাতল, বাঘাই, রিঠাসহ বিভিন্ন প্রজাতির বড় বড় মাছ৷
শুধুই দেশি মাছ
মেলায় শুধুই দেশি মাছের সমারোহ থাকে৷ চাষের বা সামুদ্রিক মাছকে নিরুৎসাহিত করা হয় এই মেলায়৷ মাছগুলোর সবই সিলেট অঞ্চলের ভাটি এলাকা হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ এলাকার হাওর, খাল-বিল ও নদ-নদী থেকে আসা৷
মৌলভীবাজারের মাছ মেলা
হবিগঞ্জের পইল মাছের মেলার ঐতিহ্যকে অনুসরণ করে গড়ে উঠেছে মৌলভীবাজারের মাছ মেলা৷ মৌলভীবাজারের শেরপুর গ্রামে কুশিয়ারা নদীর তীরে এই মেলা বসে৷ এই মেলাতেও হাওর ও কুশিয়ারা নদীর মাছ আসে৷
লাখ টাকার মাছ
এবার হবিগঞ্জের পইলের মেলায় ৪০ কেজি ওজনের একটি বাঘাই মাছের দাম হাঁকা হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা৷ মাছটি মেঘনা নদী থেকে মেলায় নিয়ে এসেছেন বানিয়াচং উপজেলার নন্দিপাড়া গ্রামের মাছ বিক্রেতা মুজিবুর রহমান৷ এটিই এবারের মেলার সবচেয়ে দামি মাছ ছিল বলে জানা যায়৷
হাজারো মানুষের ভিড়
মেলায় ভোর থেকে হাজার মানুষের ঢল নামে৷ কেনার চেয়ে দেখার বিষয়ে সবার আগ্রহ বেশি৷ মেলা কমিটি জানায়, মেলা উপলক্ষে হবিগঞ্জ জেলা সদরের শায়েস্তানগর থেকে পইলের মাছ মেলা পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয় মেলাকে ঘিরে৷ পইল গ্রামের সব বাড়িতে অতিথি ভরপুর৷
মেলা নয় উৎসব
শত বছরের ঐতিহ্যবাহী এই মেলাকে সুষ্ঠুভাবে করতে সারা বছর ধরে করে কাজ করে যান মেলা উদযাপন কমিটি৷ কমিটির সভাপতি হবিগঞ্জ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ আহমদুল হক৷ সম্পূর্ণ কমিটির খরচে এই মেলা পরিচালনা করা হয়৷ মাছ বিক্রেতাদের থেকে কোনো চাঁদা বা স্টলের জন্য ভাড়া নেওয়া হয় না৷ এটিকে শুধু মেলা নয়, উৎসব হিসেবেও দেখে মেলা কর্তৃপক্ষ৷