পুলিশের লাঠি, কাঁদানে গ্যাস, জলকামান আর বিক্ষোভকারীদের ইটের লড়াই
আরজি কর ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের কারণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ দাবিতে হাওড়ার রাস্তায় হাজারো বিক্ষোভকারী। পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ, ইট, গ্যাস, লাঠি।
একের পর এক মিছিল
হাওড়া থেকে নবান্ন অভিযানে শামিল হন কয়েক হাজার মানুষ। একের পর এক মিছিল নবান্নর দিকে যেতে থাকে। নবান্ন অভিমুখে সব রাস্তা আগেই বন্ধ করে দিয়েছিল পুলিশ। সেখানে ছিল তিন স্তরের ব্যারিকেড। অনেক জায়গায় সেই সব ব্যারিকেড সরিয়ে দেয় পুলিশ। পুলিশের সঙ্গে জনতার খণ্ডযুদ্ধ হয়। এই বিক্ষোভ ও খণ্ডযুদ্ধের জেরে কার্যত অচল হয়ে যায় হাওড়ার অনেক এলাকা।
সকাল থেকেই পুলিশের ভিড়
সকাল থেকেই কলকাতা ও হাওড়ায় নবান্ন অভিমুখে সব রাস্তা পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ করে দেয়া হয়। হাওড়া ব্রিজে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়। হাওড়া ও কলকাতার বিভিন্ন রাস্তা বন্ধ করে দেয় পুলিশ।
বিক্ষোভ রুখতে জলকামান
ব্যারিকেডগুলোর পিছনে জলকামান রেখেছিল পুলিশ। ব্যারিকেড ভেঙে এগোতে গেলে জলকামান ব্যবহার করা হবে। বারবার পুলিশকে জলকামান ব্যবহার করতে হয়। সেই জলকামানের জলের তোড়ে বিক্ষোভকারীরা সাময়িকভাবে পিছনে চলে যান। জলকামান থামার পর তারা আবার সামনে এসে ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন।
অবিরাম কাঁদানে গ্যাস
প্রতিটি মিছিলকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুঁডেছে। বারবার কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটাতে হয় পুলিশকে। অনেক জায়গায় সেই শেল কুড়িয়ে নিয়ে পাল্টা পুলিশের দিকে ছুঁড়েছে আন্দোলনকারীরা। অনেক জায়গায় কাঁদানে গ্যাসের শেলও ফুরিয়ে যায়। নতুন করে শেল এনে তা ফাটাতে হয় পুলিশকে।
লাঠিচার্জ
বিক্ষোভকারীদের সরাতে পুলিশ মাঝেমধ্যেই বেধড়ক লাঠি চালায়। কখনো বিক্ষোভকারীদের তারা তাড়া করে। কখনো বিক্ষোভকারীদের তাণ্ডবের মুখে পড়ে পুলিশকে পিছিয়ে আসতে দেখা যায়। পুলিশের লাঠির আঘাতে অনেক বিক্ষোভকারী আহত হন।
আহত পুলিশ
বিক্ষোভকারীরা বারবার পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোঁড়ে। ইটের আঘাতে কয়েকজন পুলিশ আহত হন। পুলিশের জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস ও বিক্ষোভকারীদের ইটবৃষ্টিতে নবান্নমুখি হাওড়ার বেশ কিছু জায়গা রণক্ষেত্রর চেহারা নেয়।
দুই পক্ষ মুখোমুখি
অনেক জায়গায় ব্যারিকেড সরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। তারপর পুলিশ ও বিক্ষোভকারীরা মুখোমুখি দাঁড়িয়ে পড়ে। পুলিশ লাঠি চালায়। বিক্ষোভকারীরা কিছুটা পিছিয়ে য়ায়। আবার তারা জড়ো হয়ে নবান্নের দিতে যাওয়ার চেষ্টা করে।
পুলিশের হাতে
অনেক জায়গায় দেখা যায়, কয়েকজন পুলিশ মিলে বিক্ষোভকারীকে ধরে ফেলেছে। বিক্ষোভকারী কাকুতি মিনতি করছে। পুলিশ কাউকে আটক করেছে, কাউকে তাড়িয়ে দূরে নিয়ে গিয়েছে।
অনেক গ্রেপ্তার
হাওড়া থেকে অনেক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ হাওড়া ব্রিজ, ফোরশোর রোড, হাওড়া ময়দান, নবান্নের কাছে শরৎ চ্যাটার্জি রোড থেকে প্রচুর বিক্ষোভকারীকে আটক করে। অনেক চেষ্টা করেও বিক্ষোভকারীরা নবান্নের সামনে যেতে পারেননি।
বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য
বিক্ষোভকারীরা বলেন, মুখ্যমন্ত্রীই পুলিশ ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তাই আরজি করের ধর্ষণ ও হত্যার দায় নিয়ে তাকে পদত্যাগ করতে হবে। তাদের প্রশ্ন- বিক্ষোভ ঠেকাতে এত পুলিশ, আরকজি করে তারা ধর্ষণ ও হত্যা থামাতে পারলো না? হত্যাকাণ্ডের পরও দুষ্কৃতীরা আরজি কর ভাঙচুর করলো, তাদেরও পুলিশ ঠেকাতে পারলো না কেন?