1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পুলিশ যখন আসামি

ফাবিয়ান ফিশারকেলার/এসি২৬ জুন ২০১৪

নারায়ণগঞ্জের বহুল আলোচিত সাতখুনের মতো ঘটনা এদেশে ঘটে না৷ তবুও মাঝেমধ্যে পুলিশি পদক্ষেপ মাত্রা ছাড়িয়ে যায়, যেমন ২০১০ সালে স্টুটগার্টে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশের লাঠি, চোখ জ্বালা করা স্প্রে ও জলকামানের ব্যবহার৷

https://p.dw.com/p/1CPvg
Symbolbild Polizeigewalt
ছবি: picture-alliance/dpa

২০১০ সালের ঘটনা, কিন্তু সে প্রসঙ্গ উঠল দু'টি কারণে৷ প্রথমত, ২৬শে জুন হলো ‘‘নিপীড়নের শিকারদের প্রতি সমর্থনের আন্তর্জাতিক দিবস''৷ ক্যাথলিক গির্জার প্রধান পোপ ফ্রান্সিস দিনটি উপলক্ষ্যে শারীরিক নিপীড়ন ও অত্যাচারকে একটি ‘কার্ডিনাল সিন' বা মৌলিক অপরাধ বলে অভিহিত করেছেন৷ সব খ্রিষ্টানদের উচিত একত্রিত হয়ে শারীরিক নিপীড়নের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং যারা নিপীড়নের শিকার হয়েছে, তাদের ও তাদের পরিবারবর্গকে সাহায্য করা৷ সব ধরনের নিপীড়নই নিন্দনীয়, বলেছেন পোপ৷

নিপীড়নের শিকারদের প্রতি সমর্থনের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষ্যে পোপ ইতিপূর্বেই এই সব মন্তব্য করেন৷ অপরদিকে ২৪শে জুন জার্মানির স্টুটগার্ট শহরের জেলা আদালতে একটি মামলার শুনানি শুরু হয়েছে চার বছর আগের একটি ঘটনা নিয়ে৷ দিনটি ছিল ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর, যা স্টুটগার্টবাসীদের কাছে ‘কৃষ্ণ বৃহস্পতিবার' নামে পরিচিত৷ স্টুটগার্টের রেলওয়ে স্টেশনটিকে নতুন করে গড়ার প্রকল্প নিয়ে জনতা ও প্রশাসনের মধ্যে তখন এক সংঘাতের পরিস্থিতি৷ রেলওয়ে স্টেশনের সামনে শ্লসগার্টেন নামধারী উদ্যানটির কিছু গাছ কাটার পরিকল্পনা করছেন সরকার৷

তারই বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীরা সমবেত হয়েছিলেন৷ তাদের উপর চড়াও হয় পুলিশ৷ জলকামানের প্রচণ্ড জলধারা হঠাৎ মুখে এসে পড়লে যে কী হতে পারে, তার মূর্তিমান নিদর্শন অবসরপ্রাপ্ত বৃদ্ধ ডিট্রিশ ভাগনার: ব্ল্যাক থার্সডে যাবৎ তিনি প্রায় অন্ধ৷ ভাগনারের বিবরণ অনুযায়ী পুলিশ জ্ঞানত, এবং প্রায় মজা করেই জলের কামান তাক করেছিল আন্দোলনকারীদের মাথার দিকে৷ তিনি দেখেছেন, কিভাবে শিশুদের দিকে চোখে জ্বালা ধরা মরিচের স্প্রে ছোঁড়া হয়েছে৷ তাই ডিট্রিশ ভাগনার দেখতে চান, এই নির্মম পুলিশি অভিযানের জন্য দায়ী পুলিশ কর্মকর্তারা কী ধরনের সাজা পান৷ মামলা সেই দু'জন পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে, যাঁরা জলের কামান ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন৷

জার্মান পুলিশ শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি রাইন্যার ভেন্ড ‘দি ভেল্ট' পত্রিকাকে বলেছেন, পুলিশি অত্যাচার নিয়ে এদেশে কোনো সমস্যা নেই৷ বছরে আড়াই থেকে তিন হাজার অভিযোগ দায়ের করা হয় পুলিশের বিরুদ্ধে – সারা দেশ জুড়ে – এবং বহু বছর ধরে এই পরিসংখ্যান বাড়ে কিংবা কমেনি৷ পুলিশ যে আন্দোলনকারী কিংবা বিক্ষোভ প্রদর্শনকারীদের উপর ক্রমেই আরো বেশি খড়গহস্ত হচ্ছে, তারও কোনো প্রমাণ নেই৷ সমালোচকরা বলেন, পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে গেলে অন্যান্য পুলিশদের সাক্ষ্য লাগে – কিন্তু পাওয়া যায় না৷ সতীর্থদের বিরুদ্ধে সাক্ষী দিতে অধিকাংশ পুলিশ রাজি নন৷ অপরদিকে পুলিশের জবানবন্দি অভিযুক্ত সতীর্থদের পক্ষে যাওয়াটাই স্বাভাবিক – এবং আদালত স্বভাবতই পুলিশের জবানবন্দিতেই বেশি প্রত্যয় রাখেন৷

গত পাঁচ বছরে বিশ্বের অন্তত ১৪১টি দেশে মানুষ নিপীড়নের শিকার হয়েছেন এবং সে নিপীড়ন অংশত ভয়াবহ৷ শিল্পোন্নত দেশ জার্মানিতে পুলিশের হাতে অথবা পুলিশ হেফাজতে সে ধরনের নিপীড়নের কথা কল্পনাই করা যায় না৷ তবুও স্টুটগার্টের শ্লসগার্টেনের পুলিশি অভিযানকে কেন্দ্র করে আনা এই মামলাই প্রমাণ করে যে, জার্মানিতে অন্যায়কে নিত্যনৈমিত্তিক বা অকিঞ্চিৎকর বলে গণ্য করার সময় আসেনি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য