পাকিস্তানই আফগানিস্তানের অস্থিতিশীলতার মূল উৎস: রিপোর্ট
১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯‘ইন্টারন্যাশানাল ইন্সটিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিস’ বা আইআইএসএস আন্তর্জাতিক স্তরে বিভিন্ন ঘটনাবলী ও প্রবণতার উপর নজর রেখে চলে৷ মঙ্গলবার প্রকাশিত এক রিপোর্টে ঐ সংস্থা গত এক বছরের ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে বেশ কিছু পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছে৷
আফগানিস্তানের বর্তমান অস্থির পরিস্থিতির জন্য রিপোর্টে অনেকাংশে পাকিস্তানকে দায়ী করা হয়েছে৷ ২০০১ সালে মার্কিন হামলার পর আল কায়দার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যোদ্ধারা পাকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছে৷ ফলে পাকিস্তানই এখন এক গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধক্ষেত্রে রূপান্তরিত হয়েছে৷ আফগানিস্তানে নিজেদের ঘাঁটি হারানোর পর আল কায়দা এখন পাকিস্তানেই জাঁকিয়ে বসার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে৷ পাকিস্তানের উত্তর পশ্চিমের উপজাতীয় এলাকার ‘তালেবানিকরন’কে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে সবচেয়ে দুশ্চিন্তার কারণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে রিপোর্টে৷ তবে পাকিস্তানের সঙ্গে আফগানিস্তানের এই সংযোগের ফলে আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও অন্যান্য কিছু দেশের গোয়েন্দা সংস্থার মধ্যে প্রকৃত অর্থে তথ্যের আদান প্রদান শুরু হয়ে গেছে৷ উল্লেখ্য, এপ্রিল মাসে পাকিস্তান সরকার দেশের উত্তর পশ্চিমে বুনের, লোয়ার দির ও সোয়াত অঞ্চলে উগ্রবাদী দমন অভিযান চালিয়েছিল৷ আইআইএসএস মনে করে, পাকিস্তান যদি ঐ সব এলাকায় অশান্তি বন্ধ করতে সমর্থ হয়, সেক্ষেত্রে আফগানিস্তানের পরিস্থিতির উপরেও তার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে৷ রাশিয়া, চীন, ভারত ও ইরানকে আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের ক্ষেত্রে আরও সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানানো হয়েছে৷
আর্থিক সঙ্কটের ফলে গোটা বিশ্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব প্রতিপত্তি কিছুটা কমে এলেও পরাশক্তি হিসেবে সেদেশের অবস্থান কিন্তু হুমকির মুখে পড়ে নি বলে রিপোর্টে মন্তব্য করা হয়েছে৷ অন্যান্য দেশের সঙ্গে আরও সহযোগিতা করলে পরিস্থিতি আমেরিকার অনুকূলেই থাকবে৷ পূর্বসূরি জর্জ ডাব্লু বুশের ‘একলা চলো রে’ নীতি ত্যাগ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা যেভাবে বাকি বিশ্বের সঙ্গে সহযোগিতার পথে অগ্রসর হচ্ছেন, তার প্রশংসা করলেও প্রকৃত অর্থে তিনি এখনো আন্তর্জাতিক ঐক্যমতের ভিত্তিতে কাজ করছেন না বলে মন্তব্য করা হয়েছে৷ অন্যদিকে সেরা শিল্পোন্নত ও উদীয়মান শক্তিধর দেশগুলির গোষ্ঠী ‘জি ২০’ স্তরে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রবণতা বেড়ে চলেছে৷ ভবিষ্যতে মার্কিন তথা পশ্চিমা বিশ্বের পররাষ্ট্র নীতির প্রভাব ক্রমশ আরও সীমিত হয়ে পড়বে বলে রিপোর্টে পূর্ববাণী করা হয়েছে৷ আর্থিক সঙ্কট ও অর্থনৈতিক মন্দার আলোকে চীনের বেড়ে চলা শক্তি ও প্রভাব আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে৷ মার্কিন কোষাগারের ঋণের বোঝার মধ্যে প্রায় ৭০,০০০ কোটি ডলার এখন চীনের প্রাপ্য৷ ফলে ডলারের বিনিময় মূল্য ও মার্কিন বিনিয়োগের স্থিতিশীলতা রক্ষার ক্ষেত্রে চীনের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে৷
লেখক: সঞ্জীব বর্মন, সম্পাদনা: আবদুল্লাহ আল ফারূক