পশ্চিমবঙ্গেও সিএএ বিরোধী প্রস্তাব
২৭ জানুয়ারি ২০২০পশ্চিমবঙ্গ প্রথম থেকেই এনআরসি, অর্থাৎ নাগরিক পঞ্জি এবং সিএএ, অর্থাৎ নাগরিকত্ব আইনের সংশোধনীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সরকার লিখিতভাবেও কেন্দ্র সরকারকে জানিয়ে দিয়েছে, যে এনআরসি, সিএএ তো বটেই, জাতীয় জনসংখ্যা নথিভুক্তি, অর্থাৎ এনপিআর-এর কাজও পশ্চিমবঙ্গে হবে না৷ সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কলকাতা সফরে এলে, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে রাজভবনে তাঁর যে একান্ত বৈঠক হয়, সেই বৈঠকেও এনআরসি, সিএএ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে এসেছেন বলে জানিয়েছিলেন মমতা ব্যানার্জি৷ কিন্তু এতদিন পর্যন্ত সরকারিভাবে, রাজ্য বিধানসভায় সিএএ-র বিরুদ্ধে কোনও প্রস্তাব গৃহিত হয়নি৷ বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস সেই দাবি তুললেও মুখ্যমন্ত্রী তা খারিজ করেন এই বলে, যে এনআরসির বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভাতেই দেশের মধ্যে প্রথম নিন্দা প্রস্তাব আনা হয়েছিল৷ কাজেই আলাদা করে কোনও বিরোধী প্রস্তাব আনার দরকার নেই৷
কিন্তু অবশেষে সেই সিদ্ধান্ত বদলালেন মুখ্যমন্ত্রী৷ সোমবার রাজ্য বিধানসভায় সিএএ-এর বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনা হল, যে প্রস্তাবে সমর্থন জানাল বাম এবং কংগ্রেস৷ বিজেপি বিধায়করা স্বাভাবিকভাবেই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন, কিন্তু সেই নিয়ে কোনও বিতর্কের অবকাশ ছিল না৷ ভোটাভুটি ছাড়াই প্রস্তাবটি এদিন বিধানসভায় পাস হয়ে যায়৷
কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরি সোমবার সকালে এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘এই প্রস্তাব এর আগে বাংলায় যারা বিপক্ষ দল, কংগ্রেস, সিপিএম-তাদের সকলের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছিল৷ সেই সময় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী রাজি ছিলেন না৷ আজ তিনি রাজি হয়েছেন৷ সেই জন্যে তাঁকে সাধুবাদ জানাচ্ছি৷'
মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় এ প্রসঙ্গে এদিন বলেন, কংগ্রেস, বামেরা এখন সিএএ বিরোধী প্রস্তাবের ক্রেডিট নেওয়ার চেষ্টা করছে৷ কিন্তু এখন তার সময় নয়৷ এখন একজোটে লড়াইয়ের সময়৷ মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানান, ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে সিএএ-এর বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রচার শুরু হবে৷ ওই দিন হবে মহা মানব বন্ধন৷ ছয় তারিখ থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বোঝাতে শুরু করবেন তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা৷
তবে কলকাতায় লাগাতার মিছিল বিক্ষোভ চলছে এনআরসি, সিএএ-র বিরুদ্ধে৷ সোমবারও শহরের বিভিন্ন রাস্তায় মিছিল, পথ নাটক করেন মূলত ছাত্র-ছাত্রীরা৷ আর রবিবার, সাধারণতন্ত্র দিবসের দিন শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণ, ১১.৫ কিমি রাস্তা ধরে দীর্ঘ এক মানব বন্ধনে সামিল হন সাধারণ মানুষ৷