পরিবেশ রক্ষায় সাতটি চরম বার্তা
দশকের পর দশক ধরে চিত্রকর, সঙ্গীতশিল্পী এবং অ্যাক্টিভিস্টরা তাদের কাজের মাধ্যমে দাগ কেটে যায় এমন সব দৃশ্যমান বার্তা সৃষ্টি করেছেন৷ কখনো কখনো কল্পনার সীমাও অতিক্রম করেছেন৷
আর্কটিকে কনসার্ট
২০১৬ সালে প্রখ্যাত ইতালীয় পিয়ানিস্ট ও সুরকার লুডোভিকো এইনাউডি আর্কটিকের হিমশৈলের মাঝে একটি ভাসমান মঞ্চে সঙ্গীত পরিবেশন করেন৷ গ্রীনপিসের আয়োজনে এই কনসার্টটি ছিল বৈশ্বিক উষ্ণতার ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সে অঞ্চলের মানুষকে সচেতন করা৷ কনসার্টটি উপলক্ষে তৈরি করা ‘এলিজি ফর দ্য আর্কটিক' শিরোনামের একটি নতুন সঙ্গীতও পরিবেশন করেন তিনি৷
জলে ডোবা আত্মারা
ব্রিটিশ ভাস্কর জেসন ডিকেয়ারস টেইলরের মানব ভাস্কর্যগুলো পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে সমুদ্র তলদেশের শোভা বাড়াচ্ছে৷ যেমন, পশ্চিম আফ্রিকার লানসারোটের দক্ষিণ উপকূলের কাছাকাছি এই ‘মুসিও আটলান্টিকো'৷ এগুলো পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে তৈরি৷ প্রতিটি ভাস্কর্য একটি কৃত্রিম প্রবালপ্রাচীর তৈরি করে, যা সমুদ্রের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কাজ করে৷ স্কুবাডাইভারদের কাছেও আকর্ষণীয়৷
ডুবন্ত ভেনিসকে রক্ষা করবে এই হাত
সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ার কারণে পৃথিবীর অনেক অঞ্চলের মতো ডুবে যাওয়ার শঙ্কা আছে ভেনিসেরও৷ সেই শঙ্কাকে তুলে ধরতেই তৈরি করা হয়েছে এই হাত, যা শহরটির গ্র্যান্ড ক্যানেলের পানি ফুঁড়ে বেরিয়ে তুলে ধরেছে ঐতিহাসিক কা' সাগরেডো হোটেলকে৷ ‘সহযোগিতা' নামের এই ভাস্কর্যটি ২০১৭ সালে তৈরি করেছেন ভাস্কর লরেনজো কুইন৷ বৈশ্বিক উষ্ণতা রোধে এখনই কাজে নেমে পড়ার আহ্বান জানাচ্ছে এই ভাস্কর্যটি৷
ওয়ালস্ট্রীটে গমের ক্ষেত
ম্যানহাটানের ব্যস্ত শহরতলীতে গমের ক্ষেত– ভাবা যায়! ঠিক এই কাজটিই করেছেন শিল্পী আগনেস ডেনেস৷ ১৯৮২ সালে এই শিল্পী ওয়ালস্ট্রীট ও ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের মাঝে দুই একর জমির ওপর গম লাগান৷ প্রকল্পটির নাম দেন ‘গমক্ষেত– একটি মোকাবেলা'৷ কয়েক মাস ধরে তিনি এগুলোর পরিচর্যা করে ফসলও কাটেন৷ বিশ্বে ক্ষুধা দূর করা ও প্রকৃতির বৈচিত্র্য রক্ষায় সচেতনতা তৈরির জন্য তাঁর এই প্রয়াস৷
রক্তে ভেজা ছোট্ট মৎস্যকন্যা
ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনের সবচেয়ে বিখ্যাত মূর্তি ‘দ্য লিটল মারমেইড'৷ অথচ সময়ে সময়ে এই মূর্তিটিকে দুষ্কৃতিকারীদের কারণে সহ্য করতে হয়েছে চরম অবমাননা৷ গেল মে মাসে ফারাও দ্বীপে তিমি শিকারের বিরোধিতাকারীরা একে লাল রং দিয়ে ঢেকে দেন৷ এর আগে মৎস্যকন্যাকে শিরশ্ছেদ, হাত কেটে দেয়া এবং উড়িয়ে দেয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে৷
জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে দেয়াল লিখন
প্রখ্যাত অঙ্কনশিল্পী বাঙ্কসি, যার কাজ ব্রিক্রি হয় হাজার হাজার ইউরোতে, ২০০৯ সালে লন্ডন ক্যানেলে অদ্ভুত একটি দেয়াল লিখন তৈরি করলেন৷ স্প্রে দিয়ে তিনি লিখলেন, ‘‘বৈশ্বিক উষ্ণতায় আমি বিশ্বাস করি না৷'' লেখাটির বৈশিষ্ট্য ছিল এর কিছু অংশ পানির ওপরে, কিছু অংশ নিচে৷ এটি সাড়া ফেলে দেয় এবং এ বিষয়ে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে একটি চুক্তি করতে উদ্বুদ্ধ করে৷
ডিজিটাল শিল্পকর্মে প্রকৃতির হৃদস্পন্দন
‘‘একটি হৃদস্পন্দন, একটি গাছ''– ভার্চুয়াল বন তুলে ধরার নাজিহা মেজটাওই‘র এই কাজটি প্রজেক্টর দিয়ে দেখানো হয়েছিল প্যারিসের আইফেল টাওয়ারের গায়ে৷ নিজস্ব স্মার্টফোন সেন্সরের মাধ্যমে দর্শনার্থীরা এই কাজটির ভেতরে ঢুকে দেখেছেন কী নিপুণভাবে শিল্পী হৃদস্পন্দনের সঙ্গে একটি গাছের বেড়ে ওঠাকে যুক্ত করেছেন৷ ২০১৪ সালে প্রকল্পটি শুরু হবার পর হাজারো গাছ লাগানো হয়েছে৷