1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পরমাণু প্রশ্নে বাধা

১২ নভেম্বর ২০১৩

বহু দশক ধরে একঘরে থাকার পর ইরান আবার আন্তর্জাতিক দরবারে আবার গ্রহণযোগ্যতা আদায় করার চেষ্টা করছে৷ প্রক্রিয়ার শুরুতে কিছু সাফল্য এলেও সন্দেহ এখনো দূর হয় নি৷ ইরানকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক বিভাজনও লক্ষ্যণীয়৷

https://p.dw.com/p/1AFYM
ইরান ও আইএইএ-র মধ্যে সমঝোতা হলো সোমবারছবি: Getty Images/Afp/Atta Kenare

প্রথমেই সাফল্যের একটা খতিয়ান নেয়া যাক৷ জেনিভায় গত সপ্তাহান্তে ইরানের সঙ্গে সে দেশের বিতর্কিত পরমাণু কর্মসূচি সংক্রান্ত আলোচনার গুরুত্ব আচমকা এতটা বেড়ে যায় যে, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য দেশগুলি ও জার্মানি – অর্থাৎ ‘পি-৫+১'-এর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা একে একে তাতে যোগ দিতে থাকেন৷ কয়েক মাস আগেও এমন ঘটনা অকল্পনীয় ছিল৷ প্রায় একই সময় আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা আইএইএ-র প্রধান ইয়ুকিয়া আমানো-র তেহরান সফরও ইরানের বর্তমান সরকারের প্রতি নতুন আস্থার পরিচয় দেয়৷ অতীতের বিবাদ ভুলে ইরান ও আইএইএ-র মধ্যে সমঝোতার এক ‘রোডম্যাপ'-এর কথা শোনা গেছে সোমবার৷ একই দিনে ব্রিটেন ও ইরানের মধ্যে আবার কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে৷ আপাতত ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ কূটনীতিক অজয় শর্মা ঘন ঘন ইরান সফর করবেন৷ ভবিষ্যতে আবার লন্ডন ও তেহরানে দূতাবাস খোলা হবে বলে আশা করছে দুই পক্ষ৷

Genf Atomgespräche 10.11.2013
জেনিভায় জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডো ভেস্টারভেলেছবি: picture-alliance/dpa

প্রতীকী অর্থে এমন সব ঘটনাকে ঘিরে উৎসাহ দেখা দিলেও ইরানের সরকারের সদিচ্ছার স্পষ্ট পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি – অথবা বলা যায় তার সময় এখনো আসেনি৷ প্রেসিডেন্ট রোহানির প্রশাসন এ বিষয়ে আন্তরিক – এমনটা ধরে নিলেও দেশের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ খামেনেই এই প্রয়াসকে শেষ পর্যন্ত সমর্থন করবেন কিনা, তা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না৷ আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার চাপে তেহরান বাধ্য হয়ে কিছুটা নতি স্বীকার করছে, নাকি শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচির প্রতি সম্পূর্ণ অঙ্গীকার দেখাচ্ছে, সেই প্রশ্নের উত্তরও এখনো পাওয়া যায়নি৷ ‘পি-৫+১' এবং আইএইএ-র সঙ্গে বোঝাপড়া অনুযায়ী আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা যদি বিনা-বাধায় ইরানের সব পরমাণু স্থাপনায় প্রবেশের অধিকার পান, সেটা একটা আস্থাবর্ধক পদক্ষেপ হতে পারে৷ তারপর ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধিকরণের মাত্রা নিয়ে বোঝাপড়ায় আসতে হবে৷ ইরান সেই বোঝাপড়া মেনে চলছে কিনা, তা যাচাই করার গ্রহণযোগ্য প্রক্রিয়া চালু হলে তখনই ইরানের প্রতি সামগ্রিক আস্থা ফিরে আসতে পারে৷ অর্থাৎ ইরান যে পরমাণু অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে না, তেহরানের এমন দাবির সপক্ষে অকাট্য প্রমাণ চাই৷

Genf Atomgespräche 10.11.2013
ইরানের প্রশ্নে সতর্ক অ্যামেরিকাছবি: Reuters

এদিকে ইরানের প্রতি পশ্চিমা জগতের ‘নরম' মনোভাবের কড়া সমালোচনা শোনা যাচ্ছে অ্যামেরিকার দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইসরায়েল ও সৌদি আরবের পক্ষ থেকে৷ তাদের মতে, তেমন কিছু না দিয়েই ইরান বড় বেশি প্রতিদান পাচ্ছে৷ ইসরায়েল এ নিয়ে বেশ সোচ্চার থাকলেও সুন্নি-প্রধান সৌদি আরব ইরানের সম্ভাব্য পুনর্বাসন নিয়ে প্রকাশ্যে তেমন বক্তব্য রাখছে না৷ গোটা অঞ্চলে ইরানের শিয়া রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রভাব আরও বেড়ে যাক, এমনটা রিয়াধ মোটেই চায় না৷

ইরানকে কেন্দ্র করে পশ্চিমা দেশগুলির মধ্যেও বিভাজন লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ ব্রিটেন বর্তমান প্রক্রিয়ার প্রেক্ষাপটে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মজবুত করতে চাইছে৷ এমনকি সব শর্ত মানলে ইরানের উপর থেকে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার সম্ভাবনাও কথাও বলছে সে দেশ৷ অন্যদিকে ফ্রান্স তেহরানের প্রতি অত্যন্ত কড়া মনোভাব দেখাচ্ছে৷ এমনকি ইরানের সংবাদ মাধ্যমে জেনিভা আলোচনায় সাফল্যের অভাবের জন্য সরাসরি ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী লোরঁ ফাবিউসকে দায়ী করা হয়েছে৷ মার্কিন প্রশাসন সতর্কতার সঙ্গে ধাপে ধাপে সম্পর্ক গড়ে তোলার পথে এগোনোর পক্ষপাতি৷ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি সোমবার আশা প্রকাশ করে বলেছেন, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি চূড়ান্ত হয়ে যেতে পারে৷

এসবি/ডিজি (এএফপি, রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য