বিতর্কে ম্লান ব্রাজিলের জয়
১৩ জুন ২০১৪পাঁচবারের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়নদের সামনে ফুটবলের বড় কোনো আসরে সাফল্য না পাওয়া ক্রোয়েশিয়া ‘আন্ডারডগ'-ই ছিল৷ তবে তরুণদের নিয়ে গড়া ব্রাজিল দল নিজেদের দর্শকদের সামনে খেলার প্রাথমিক চাপ কাটিয়ে ওঠার আগেই ক্রোয়াটরা যেভাবে আক্রমণ শানাতে শুরু করেছিল, তাতে মনেই হয়নি জয় ছাড়া অন্য কোনো ফলাফল তাদের প্রত্যাশিত ছিল৷ ১১ মিনিটে ম্যাচের প্রথম গোলটা হয়েছে অপ্রত্যাশিতভাবেই৷ ডিফেন্ডার মার্সেলো আলতো করে গোলরক্ষককে ব্যাক পাস দিতে গিয়ে নিজের জালেই ঢুকিয়ে দেন বল৷ আত্মঘাতী গোল! ১-০ গোলে এগিয়ে যায় ক্রোয়েশিয়া৷
তারপর নিজেদের গুছিয়ে নিয়ে গোল পরিশোধের চেষ্টায় ঝাঁপিয়ে পড়তে দেরি করেনি ব্রাজিলিয়ানরা৷ ২৯ মিনিটে আসে কাঙ্খিত সেই মুহূর্ত৷ ২৫ মিটার দূর থেকে নেইমারের বাঁ পায়ে নেয়া শট, বারে লেগে বল জালে ঢোকার আগে ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক শুধু সেদিকে ঝাঁপাতেই পেরেছিলেন, বল ছুঁতে পারেননি৷
নেইমারের মন মাতানো ফুটবলের কিছু নমুনা তারপরও দেখা গেছে৷ তবে ৭১ মিনিটে পেনাল্টি থেকে করা তাঁর গোলটি নিয়ে এখনো বিতর্ক চলছে৷ জাপানের রেফারি নিশিমুরার দেয়া পেনাল্টির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন ক্রোয়েশিয়ার খেলোয়াড়রাও৷ ফ্রেডকে পেনাল্টি বক্সে এক ডিফেন্ডার টেনে ধরলেও, ফ্রেড পড়ে গিয়ে পেনাল্টি আদায় করেছেন বলেই ক্রোয়াটদের দাবি৷ ৯০ মিনিটে অস্কার ডান পায়ের টোকায় যে গোলটি করেন তা নিয়ে অবশ্য কোনো বিতর্ক নেই৷ সেই গোলেই শেষ হয়ে যায় ক্রোয়েশিয়ার ম্যাচে ফেরার আশা৷
ম্যাচে যে ব্রাজিলেরই প্রাধান্য ছিল৷ পরিসংখ্যানেই তা পরিষ্কার৷ ফিফা ডটকমের পরিসংখ্যান বলছে, পুরো ম্যাচে ব্রাজিল বিপজ্জনক আক্রমণ করেছে ৪৮টি, ক্রোয়েশিয়ার সেরকম আক্রমণ ছিল ৩৯টি৷ গোলের সুযোগ ব্রাজিল পেয়েছে ১৪টি, ক্রোয়েশিয়া ১০টি৷ ব্রাজিলের গোলরক্ষক হুলিয়ো সিজার গোল বাঁচিয়েছেন সাতবার, ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষকে দলকে রক্ষা করেছেন ১৩ বার৷ ঠিক পাস ব্রাজিলের ৪৩২টি, ক্রোয়েশিয়ার ২৮৪টি৷ বল নিয়ন্ত্রণে রাখার ব্যাপারেও ব্রাজিল এগিয়ে, বল তাদের পায়ে ছিল ৫৮ শতাংশ সময়, ক্রোয়াটদের ৪২ শতাংশ সময়৷
অবশ্য পরিসংখ্যানই শেষ কথা নয়৷ রেফারির সিদ্ধান্তের কারণে বিতর্ক দিয়েই শুরু হলো বিশ্বকাপ ২০১8 – এটাই বড় কথা৷ বিশ্বকাপে অবশ্য তা নতুন কিছু নয়!
এসিবি/ডিজি (এএফপি, ফিফাডটকম)