নির্বাচনে গণমাধ্যমের প্রভাব
নির্বাচনে গণমাধ্যমের প্রভাব নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে৷ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, নির্বাচনের সময় গণমাধ্যমের ইতিবাচক, কিন্তু সীমিত প্রভাব রয়েছে৷ আর কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, নির্বাচনের সময় গণমাধ্যম রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করে৷
ভোটদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণে গণমাধ্যমের প্রভাব
১৯৪০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের করা এক গবেষণায় দেখা যায়, মাত্র আট শতাংশ ভোটার গণমাধ্যমে নির্বাচনি প্রচারণার সংবাদ দেখে তাদের ভোটদানের সিদ্ধান্ত নেন৷ বাকি ভোটাররা পূর্বধারণা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেন৷
সামাজিক মাধ্যমের প্রভাব
গত জুলাইতে প্রকাশিত প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৬ ও ২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় টুইটারের কারণে রিপাবলিকানদের ভোট কিছুটা কমেছে৷
বাংলাদেশ প্রেক্ষিত
বাংলাদেশের ইতিহাসে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হিসেবে অস্থায়ী সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলোকে ধরা হয়৷ ১৯৯১, ১৯৯৬ (১৫ ফেব্রুয়ারি ছাড়া), ২০০১ ও ২০০৮ সালে এই নির্বাচনগুলো হয়েছিল৷ এই চার নির্বাচনে গণমাধ্যমের সত্যিকারের ভূমিকা ও প্রভাব দেখা গিয়েছিল বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল আলম চৌধুরী৷
শেষ দুই নির্বাচনে গণমাধ্যমের ভূমিকা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক খান ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ‘‘জিয়া থেকে এরশাদের সময় সাংবাদিকেরা চেষ্টা করেছেন বাস্তব পরিস্থিতি তুলে ধরতে৷ কিন্তু এখন আর সেরকম হয় না৷ গত দুই নির্বাচন নিয়ে গণমাধ্যমের ভূমিকা সবল নয়৷ সামনের নির্বাচনেও এর পরিবর্তন হবে বলে আমার মনে হয় না৷’’
আগামী নির্বাচনে ভূমিকা কেমন হতে পারে?
জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এরশাদের পতনের আগে সংবাদপত্রগুলো চারদিন বন্ধ ছিল, যা তার পতন ত্বরান্বিত করেছিল৷ জিয়ার সময় সাংবাদিকেরা গ্রেপ্তার হলেও তারা সত্য প্রকাশ করেছেন৷ কিন্তু এখন গণমাধ্যমের প্যাটার্ন পরিবর্তন হয়ে গেছে৷ রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর নির্ভর করছে আগামী নির্বাচনে গণমাধ্যম সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে কতটা ভূমিকা রাখতে পারবে৷’’