নিম্ন রক্তচাপের কারণ ও নিয়ন্ত্রণের উপায়
‘লো প্রেশার’ বা নিম্ন রক্তচাপ হলে তা উচ্চ রক্তচাপের মতো আতঙ্কের কারণ হয় না ঠিকই, তবে তা মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটায়৷ তাই লো প্রেশারের কারণ ও নিয়ন্ত্রণের উপায় জানা থাকলে কাজে লাগবে৷
অকারণেই ক্লান্ত?
আপনার কি অকারণেই ক্লান্ত লাগে কিংবা হঠাৎ করে চোখের সমানে সবকিছু কেমন ঘোলাটে মনে হয়? তাহলে আপনার প্রেশার বা রক্তচাপটা একটু ‘চেক’ করিয়ে নেওয়া উচিত৷ এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শে লো প্রেশারের সম্ভাব্য কারণগুলো খুঁজে বের করতে হবে৷
বয়ঃসন্ধিকাল
বয়ঃসন্ধিকালে ছেলে-মেয়েরা যখন লম্বা হয় তখন শরীরে রক্তের চাপ কমতে পারে, যা কিনা শরীরে হরমোন পরিবর্তনের সাথে সম্পৃক্ত৷ তবে এ নিয়ে ভাবনার কিছু নেই৷ কারণ এই সমস্যা নিজে থেকেই চলে যায়৷ জানান ডা. বডো শিফমান৷
মাসিক ঋতুস্রাব
অতিরিক্ত ঋতুস্রাবের কারণে অনেক মেয়েরই প্রেশার লো হতে পারে৷ এ সময়ে আয়রন ট্যাবলেট বেশ উপকারী৷ অবশ্য সেই সিদ্ধান্ত নেবে আপনার ডাক্তার৷ তবে যেসব খাবারে আয়রন রয়েছে, অর্থাৎ কলিজা, মাংস, ডিম, বিভিন্ন শাক, কলা, আপেল, টমেটো ইত্যাদি খেলেও কিন্তু উপকার পেতে পারেন৷
ওষুধের প্রভাব
উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ সেবন থেকেও অনেক সময় প্রেশার কমে যেতে পারে বা মাথা ঘুরতে পারে৷ এটা সাধারণত হয়ে থাকে ওষুধের পরিমাণ কম-বেশি বা ওষুধ সহ্য না হওয়ার কারণে৷ তবে এক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ অনুসরণ করা উচিত৷
অন্য অসুখের প্রভাব
ডায়াবেটিস বা পার্কিনসন্স রোগ থাকলেও কখনো কখনো রক্তের চাপ কমে যেতে পারে৷ নার্ভ ধমনীকে ‘কন্ট্রোল’ করে থাকে বলে, রক্তে চিনির মাত্রা বেড়ে গেলে তা নার্ভের ক্ষতি করে৷ এরকম পরিস্থিতিতে রক্তের চাপ কমে নীচের দিকে, অর্থাৎ পায়ে নেমে যেতে পারে৷
মানসিক চাপ
হঠাৎ করে অন্য কোনো সমস্যা বা মানসিক অবস্থার কারণে মনের ওপর প্রচণ্ড চাপ পড়ে আর তা থেকেও রক্তের চাপ একেবারে নেমে গিয়ে ‘প্যানিক অ্যাটাক’ হতে পারে৷ এ কথা জানান ডা. ভল্ফগাং ফন শাইড্ট৷ আসলে অনেক কারণেই প্রেশার কমে যেতে পারে৷ তাই প্রতি দুই থেকে তিন সপ্তাহ অন্তর প্রেশার মাপা এবং তা ‘চার্ট’ করে লিখে রাখা জরুরি৷ একমাত্র তবেই বিশেষজ্ঞের পক্ষে এর পেছনের কারণ খুঁজে বের করা সম্ভব৷
ব্যায়াম
রক্তের চাপ কিছুটা কমে গেলে সাধারণত তেমন ভয়ের কারণ থাকে না৷ তবে এক্ষেত্রেও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন৷ তাছাড়া নিয়মিত হাঁটাচলা বা ব্যায়াম করলে সহজেই রক্তের চাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব৷ আর নিয়মিত ব্যায়াম করা দু’রকম প্রেশারের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, তা ‘হাই’ বা ‘লো’ যাই হোক না কেন৷
হৃদপিণ্ড
সারাদিন শুয়ে-বসে থাকলে শরীরে রক্ত চলাচল যথাযথভাবে সম্পন্ন হয় না৷ এর ফলে হৃদপিণ্ডে রক্ত চালাচলে অসুবিধা হতে পারে৷ এমনকি ব্যাপারটা অন্য দিকেও মোড় নিতে পারে৷ তাই রক্তের নিম্নচাপকেও গুরুত্ব দিতে হবে, জানান জার্মান কার্ডিওলজিস্ট ভল্ফগাং ফন শাইড্ট৷