নিজের চাকরি বাঁচাতে লড়ছেন ইউনূস
২ মার্চ ২০১১বাংলাদেশ ব্যাংক ইউনূস প্রসঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছে৷ এতে উল্লেখ করা হয়েছে, ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে সরিয়ে দেওয়া উচিত৷ অথচ এই ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ইউনূস নিজেই৷ ২০০৬ সালে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার জয় করেন এই অর্থনীতিবিদ এবং গ্রামীণ ব্যাংক৷
বাংলাদেশ ব্যাংকের এই চিঠির আগেই অবশ্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন৷ সোমবার এই নিয়ে মুহিতের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস মরিয়াটি৷ বৈঠক প্রসঙ্গে মুহিত বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, ‘‘তারা (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) আমাদেরকে জানিয়েছে যে, তিনি অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তি এবং তারা চাইছে তাঁর সঙ্গে যেন সম্মানজনক আচরণ করা হয়৷ আমরা তাদেরকে বলেছি, ইউনূস বাংলাদেশের গর্ব৷''
অর্থমন্ত্রী জানান, সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে একটি মতামত পেয়েছে, যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, ইউনূস অবৈধভাবে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী হিসেবে অবস্থান করছেন৷
ইউনূসের সমর্থকরা মনে করছেন, ইউনূসের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক চক্রান্ত চলছে৷ এর কারণ হচ্ছে, ২০০৭ সালে তিনি শেখ হাসিনাকে উপেক্ষা করে রাজনীতিতে জড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন৷ পরে অবশ্য তিনি সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন৷ গত ডিসেম্বরে শেখ হাসিনা মন্তব্য করেন, ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংককে ব্যক্তিগত সম্পত্তি মনে করছেন এবং এই গোষ্ঠী গরিবের রক্ত চুষে খাচ্ছে৷
বর্তমানে বেশ বিপাকেই আছেন ক্ষুদ্রঋণের পুরোধা প্রফেসর ইউনূস৷ গত মাসে বিভিন্ন অভিযোগে একাধিকবার আদালতে হাজির হতে হয় তাঁকে৷ এসব অভিযোগ মূলত গ্রামীণ ব্যাংক কেন্দ্রিক৷ সরকারও গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে৷
উল্লেখ্য, ১৯৮৩ সালে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার সময় অর্থমন্ত্রী ছিলেন আবুল মাল আব্দুল মুহিত৷ প্রফেসর ইউনূস তাঁর একটি বইতে উল্লেখ করেছেন, সেসময় অর্থমন্ত্রী গ্রামীণ ব্যাংকের সরকারি অনুমোদনের বিষয়ে ব্যাপক সহায়তা করেছিলেন৷ বর্তমানে এই ব্যাংক নিয়ে ইউনূস এবং মুহিতের মধ্যে দূরত্ব ক্রমশ প্রকট আকার ধারণ করেছে৷
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন