নিউজিল্যান্ডে অগ্নুৎপাত: পোড়া চিকিৎসায় চামড়া আমদানি
১৫ ডিসেম্বর ২০১৯চিকিৎসকরা এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ১২০ বর্গমিটার চামড়া চেয়ে পাঠিয়েছেন৷ একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শরীর থেকে দুই বর্গমিটার চামড়া নেওয়া যায়৷
চোখ, হৃদযন্ত্র, কিডনিসহ শরীরের অন্যান্য অঙ্গের মত মানুষ তার চামড়াও দান করতে পরেন৷ মৃতদেহ থেকে চামড়া সংগ্রহের পর যথাযথভাবে তা কয়েক বছর সংরক্ষণ করা যায়৷
চামড়া প্রতিস্থাপনের জন্য দগ্ধদের শরীর বিশেষ করে উরু ও কানের পেছন থেকে চামড়া নেওয়া হয়৷ কিন্তু শরীর অনেক বেশি পুড়ে গেলে চামড়া ব্যাংকই ভরসা৷
গত সোমবার নিউজিল্যান্ডের উত্তর পূর্বে সমুদ্রের মাঝে অবস্থিত হোয়াইট আইল্যান্ডে অগ্নুৎপাতের ঘটনায় এখন পর্যন্ত আটজনের মৃত্যু হয়েছে৷ নিখোঁজ আছেন আরো আটজন, যারা মারা গেছেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে৷
পর্যটক প্রিয় হোয়াইট আইল্যান্ডে ঘটনার দিন অনেক দর্শণার্থী ছিলেন৷ সেদিন ঘটনাস্থল থেকে ৩১ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল৷
তাদের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার একজন পর্যটককে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে৷
এছাড়া, ২৯জন নিউজিল্যান্ডের চারটি হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নিবিড় পর্যবেক্ষণকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন আছেন বলে জানান চিকিৎসকরা৷ শরীরের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে যাওয়ায় তাদের ২২ জনের অবস্থাই আশঙ্কাজনক৷
দগ্ধদের শরীরে সংক্রমণ রোধে এবং নতুন ত্বক গঠনে চামড়া প্রতিস্থাপন ‘প্রাকৃতিক প্লাস্টারের' কাজ করে৷ ব্যাথা কমাতে এবং ক্ষত দ্রুত শুকাতেও এটি দারুণ কার্যকর৷
নিউজিল্যান্ডে প্রতি বছর মাত্র ৫ থেকে ১০ জন মরণোত্তর চামড়া দান করেন৷ হাসপাতালগুলোর বার্ন ইউনিটে চামড়া ব্যাংক থাকে৷ সাধারণ সময় সেখান থেকেই চাহিদা মিটেনো হয়৷
কিন্তু এবার একবারে অনেকে মানুষ দগ্ধ হওয়ায় চামড়া আমদানির বিকল্প নেই৷
নিউজিল্যান্ডের ন্যাশনাল বার্ন ইউনিটের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. পেটা ওয়াটসন বলেন, ‘‘আমাদের কাছে চামড়া মজুদ আছে৷ কিন্তু ড্রেসিং ও সাময়িক চামড়া প্রতিস্থাপনের জন্য যতটা প্রয়োজন তার জন্য দ্রুত বাড়তি সরবরাহ প্রয়োজন৷
‘‘ধারণা করছি আমাদের আরও ১২০ বর্গমিটার চামড়া লাগবে৷''
হোয়াইট আইল্যান্ডে দগ্ধদের চিকিৎসা সাধারণ পোড়ার তুলনায় জটিল হবে বলেও জানান তিনি৷ কারণ সেখানে নানা গ্যাস ও রাসায়নিক ছিল৷
‘‘সবে দীর্ঘ এক চিকিৎসা পদ্ধতির শুরু৷ কারো কারো ক্ষেত্র বেশ কয়েকমাস লেগে যেতে পারে৷''
দগ্ধ রোগীরা নানা আতঙ্কে ভোগেন৷ তাদের অন্যান্য আঘাতও থাকতে পারে৷ ফলে এ সব রোগীদের চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদী হয়৷ গুরুতর দগ্ধদের ক্ষেত্রে অনেক সময় জীবনভরই চিকিৎসা নিয়ে যেতে হয়৷
এসএনএল