‘পান্তা-ইলিশ’ না ‘পান্তা-ভর্তা’
১৪ এপ্রিল ২০১৪সামহয়্যার ইন ব্লগ, আমারব্লগ সহ কয়েকটি ব্লগ সাইট পাঠকদের নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে তাদের প্রথম পাতায় পরিবর্তন এনেছে৷ ‘নববর্ষের সেকাল একাল' শিরোনামে সামহয়্যার ইন ব্লগে লেখা একটি পোস্টে তাসজিদ বাংলা বর্ষবরণের ইতিহাস তুলে ধরেছেন৷
একই ব্লগে শাহজাহান আহমেদ তাঁর পোস্টে ভবিষ্যতে পান্তা-ইলিশের পরিবর্তে পান্তা-ভর্তা খাওয়ার চল শুরুর পক্ষে নিজের যুক্তি তুলে ধরেছেন৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘বৈশাখ মাস ইলিশের মৌসুম না৷ অমৌসুমের ইলিশের দাম হয় আকাশ-ছোঁয়া৷ যাদের প্রচুর টাকা-পয়সা তাঁরাই ইলিশ বিলাস করতে পারে৷ বেশিরভাগ মানুষই ইলিশ কিনতে পারে না৷ নতুন বছরে জাতির একটা বিশাল অংশকে বঞ্চিত করে কিছু মানুষ পান্তা-ইলিশ খেয়ে সংস্কৃতি রক্ষার গর্ব করবে, তা হতে পারে না৷ নববর্ষের এই আইটেমটা বাদ দিয়ে যদি আগামী বছর থেকে আমরা পান্তা-ভর্তা যোগ করি, তাহলেই আমার মনে হয় সর্বোচ্চ বাঙালিয়ানার গর্বে আমরা গর্বিত হতে পারব৷ পান্তা ভাতের সাথে ভর্তাটাই মানানসই, ইলিশ না৷''
আজ ফেসবুক খুললেই পাওয়া যাচ্ছে বন্ধুদের নববর্ষের শুভেচ্ছা৷ সঙ্গে থাকছে তাঁদের নতুন বছরকে বরণ করে নেয়ার কথা৷ এসবের মধ্যে সুমন রহমান নববর্ষ উপলক্ষ্যে ‘প্রথম আলো'-র বিশেষ সংখ্যায় প্রকাশিত তাঁর নিজের লেখার একটি অংশ ফেসবুকে তুলে দিয়েছেন৷ বাউলগানের ‘বাহিরানা' শীর্ষক লেখায় তিনি লিখেছেন, ‘‘বাউলগান যে সমসাময়িক বাংলাদেশে অত্যন্ত দাপটের সঙ্গে টিকে আছে, তার পেছনে বাউল জীবনচর্চার অবদান হয়ত খুব বেশি নেই৷ লালনের পর আরও যাঁরা বাউলগানকে সমৃদ্ধ করেছেন, তাঁদের বেশির ভাগই জীবনচর্চায় বাউল ছিলেন না৷ আবার তাঁরা যে ঘটা করে নিজেদের ‘অবাউল' দাবি করেছেন, এমনও নয়৷ জাতিগঠনের চক্করে বাউলগানের অছিলায় বাউলিয়ানার একটা ঢিলেঢালা চর্চা সমাজে দাঁড়িয়ে গেছে৷ ফলে এই অবধারিত ডায়ালেকটিকসকে খেয়াল না করে আমাদের উপায় নেই: একদিকে আখড়ার বাউল এবং তাদের অথেনটিসিটির অহম, অন্যদিকে হাইব্রিড বাউল এবং তাদের অভিযোজনের জখম৷ একদিকে সাধনা, অন্যদিকে বাজার৷ একদিকে তত্ত্বের আলাপ, অন্যদিকে সমাজ-অনুশীলন৷''
সংকলন: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ