ধুমপান কি পার্কিনসন্স থেকে বাঁচায়?
২০ এপ্রিল ২০১৯‘‘এ কথা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়, পার্কিনসন্স রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে নিকোটিন৷ তবে নিকোটিন বলতে শুধু ধুমপান নয়, এর মধ্যে পরোক্ষ ধুমপানও অন্তর্ভূক্ত,'' ডয়চে ভেলেকে এমনটাই বলেছেন কিল-এর ক্লিনিক ফর নিউরোলজি-র প্রধান ডানিয়েলা ব্যার্গ৷
নিকোটিন যে শুধু সিগারেটে পাওয়া যায় এমন নয়৷ আলু, টমেটো এবং মরিচের মতো সবজিতেও তা পাওয়া যায়৷ তবে সেই নিকোটিনের মাত্রা সিগারেটের মতোএত বেশি নয়৷
পার্কিনসন্স রোগপ্রতিরোধী হিসাবে নিকোটিনের মতো বেশি সহায়ক আর কিছুই পাওয়া যায়নি বলে জানাচ্ছেন ব্যার্গ৷ আবার কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ধুমপান এমন কিছু এনজাইমকে উদ্দীপ্ত করে, যেগুলো নার্ভ টক্সিনকে নিস্ক্রিয় করে দেয়৷
নিউরোলজিস্ট ব্যার্গ বলেন, ‘‘পার্কিনসন্স রোগ প্রতিরোধে নিকোটিনের কার্যকারিতা এখনো পুরোপুরি জানা সম্ভব না হলেও তাঁদের পার্কিনসন্স রোগ হওয়ার আশঙ্কা কম৷ কিন্তু আপনি কাউকে ধুমপান করার উপদেশ দিতে পারেন না, কারণ, এর বাইরেও ধুমপানের অনেক নেতিবাচক ফল রয়েছে৷''
কীভাবে পার্কিনসন্স রোগ প্রতিরোধ ও এর চিকিৎসা করা যেতে পারে এবং কোথা থেকে ও কীভাবে এই রোগ হয় বিশ্বব্যাপী এসব বিষয় এখনো গবেষণার পর্যায়ে রয়েছে৷
২০১৬ সালে মেডিকেল সাময়িকী ‘ল্যানসেট'-এর এক গবেষণায় দেখা যায়, বিশ্বব্যাপী পার্কিনসন্স রোগীর সংখ্যা ক্যানাডা এবং উত্তর অ্যামেরিকাতে বেশি, যেখানে চিকিৎসাসেবা উন্নত হিসাবে ধরা হয়৷ তবে আশার দিক হচ্ছে, রোগের মাত্রা অত ভয়াবহ নয়৷
‘‘এখানকার কিছু মানুষের মধ্যে জিনগত ব্যাপার রয়েছে৷ এ কারণে তাঁরা পার্কিনসন্সে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে বেশি থাকেন, '' বলেন গবেষক ব্যার্গ৷
পরিবেশগত দিকও পার্কিনসন্স রোগের ক্ষেত্রে প্রভাবক হিসাবে কাজ করে থাকে৷ কীটনাশকসহ পরিবেশগত বিষক্রিয়া শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রক্রিয়ার জন্য ভয়াবহ হতে পারে৷ নানা কীটনাশক পার্কিনসন্স রোগের ঝুঁকি বাড়ায়৷
দক্ষিণ অ্যামেরিকায়ও পরিবেশের বিষক্রিয়ার সঙ্গে পার্কিনসন্স রোগ ছড়ানোর সম্পর্ক পাওয়া গেছে৷ দেখা গেছে, যাঁরা ম্যাঙ্গানিজের কাজ করেন, তাঁদের পার্কিনসন্স আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি৷ কারণ, ম্যাঙ্গানিজ মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাস সেলের জন্য ক্ষতিকর৷
দেখা গেছে, জাপান আর আফ্রিকা অঞ্চলের কিছু দেশে পার্কিনসন্স রোগীর সংখ্যা কম৷ জাপানে এই রোগ কম হওয়ার পেছনে সবুজ চা পান এবং পলিপেনল গ্রহণকে কারণ হিসাবে দেখাচ্ছেন গবেষকরা৷
গুডরুন হাইসে/এমবি