সতর্ক থাকার আহ্বান
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পিরোজপুর এলাকায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সহযোগী হিসেবে কাজ করেন৷ ছিলেন স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার বাহিনীর সদস্য৷ তার বিরুদ্ধে ২০টি অভিযোগে গণহত্যা, হত্যা, ধর্ষণ, লুটতরাজসহ মানবতা বিরোধী অপরাধের কথা বলা হয়েছে৷ এইসব অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় ট্রাইব্যুনাল-১ এর প্রধান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের আদালত মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন৷ অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জানান, তার বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী ২০টি অভিযোগের ৮টি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হয়েছে৷
কিন্তু এই রায়কে অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন সাঈদীর আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রজ্জাক৷ তার দাবি, ট্রাইব্যুনালে তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগই প্রমাণিত হয়নি৷
দুপুরে রায় ঘোষণার পর পরই শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরসহ সারা দেশে উল্লাস ছড়িয়ে পড়ে৷ সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন আনন্দ মিছিল নিয়ে৷
মুক্তিযোদ্ধারা জানান, জাতি কলঙ্ক মোচনের পথে এগিয়ে যাচ্ছে৷ বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের ঠাঁই হবেনা৷
আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম রায়কে স্বাগত জানিয়ে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন৷ বলেছেন, সব যুদ্ধাপরাধীর বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে৷
এদিকে রায় ঘোষণার পর জামায়াত শিবিরের কর্মীরা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় চোরাগুপ্তা হামলা চালিয়েছে৷ তাদের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষে রংপুর ও সিরাজগঞ্জে ৪ জন নিহত হয়েছেন৷ তাদের ডাকা আজকের হরতালে তেমন সাড়া মেলেনি৷
২০১০ সালের ২৯শে জুন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে একটি মামলায় দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে গ্রেফতারের পর, ২রা আগস্ট তার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনা হয়৷ ২০১১ সালের ১৪ই জুলাই তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল৷ গত বছরের ১১ই ডিসেম্বর স্কাইপ বিতর্কের জের ধরে বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম পদত্যাগ করলে পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনাল যুক্তি তর্ক শেষ করে চলতি বছরের ২৯শে জানুয়ারি৷
ট্রাইব্যুনাল এর আগে ২টি মামলার রায়ে আবুল কালাম আজাদকে ফাঁসি এবং কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়৷ আগামী রোববার রাষ্ট্রপক্ষ কাদের মোল্লার ফাঁসির আবেদন জানিয়ে আপিল করবে সুপ্রিম কোর্টে৷